
ছবি: সংগৃহীত
দুই বছর ধরে ইসরায়েলি গণহত্যার পর গাজায় দীর্ঘ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। বাস্তুহারা মানুষ দলে দলে ফিরছেন যুদ্ধ বিধ্বস্ত নগরে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে গাজায় অধিপত্য বিস্তারে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে হামাস। বিভিন্ন বিরোধী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দমন অভিযান চালিয়ে অন্তত ৩৩ জনকে হত্যা করেছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। যারা তাদের কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করছিল। এ অভিযানে হামাসের ছয়জন সদস্যও নিহত হয়েছেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ওপর হামলার পর ইসরায়েলি বাহিনীর পাল্টা হামলায় বিপর্যস্ত হামাস যুদ্ধবিরতির সুযোগে গাজার রাস্তায় তাদের উপস্থিতি জোরদার করছে। তবে, পরিস্থিতি যে কোনো মুহূর্তে উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলে তারা সতর্কতার সঙ্গে এগোচ্ছে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে গাজার দুটি নিরাপত্তা সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
যুদ্ধকালে গাজায় হামাসের নিয়ন্ত্রণকে চ্যালেঞ্জ করে বেশ কয়েকটি গোষ্ঠী। এ গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে হামাস তাদের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। গাজা সিটির এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, হামাস বাহিনী যুদ্ধবিরতির পর থেকে ৩৩ জনকে হত্যা করেছে। এ ছাড়া, রাফাহ অঞ্চলে হামাস-বিরোধী নেতা ইয়াসের আবু শাবাবের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। হামাস তাকে ইসরায়েলের সহযোগী হিসেবে অভিযুক্ত করলেও আবু শাবাব এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
আরও পড়ুন<<>>মাদাগাস্কারের ক্ষমতা দখল করলো সেনাবাহিনী
সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, মুখোশধারী বন্দুকধারীরা হাঁটু গেড়ে বসা সাতজনকে মেশিনগান দিয়ে গুলি করছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের মাথায় হামাসের প্রতীক সবুজ ফিতা বাঁধা ছিল। দর্শকরা নিহতদের ‘ইসরায়েলের সহযোগী’ বলে উল্লাস করছিল। রয়টার্স এ ভিডিওর সত্যতা তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করতে পারেনি।
গত মাসে হামাস-নেতৃত্বাধীন কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলের সঙ্গে সহযোগিতার অভিযোগে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছিল। এ ছাড়া হামাস ইসরায়েলের হাতে দুই বছর আগে আটক শেষ জিম্মিদের মুক্তি দিয়েছে। এ সময় হামাসের সামরিক শাখা কাসাম ব্রিগেডের সদস্যদের মোতায়েন করা হয়, যা গাজায় স্থায়ী শান্তি চুক্তির পথে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলসহ অনেক দেশ হামাসের নিরস্ত্রীকরণের দাবি জানাচ্ছে।
হামাসের গাজা সরকারের মিডিয়া অফিসের প্রধান ইসমাইল আল-থাওয়াবতা বলেন, গোষ্ঠীটি গাজায় কোনো নিরাপত্তা শূন্যতা সৃষ্টি হতে দেবে না এবং জননিরাপত্তা ও সম্পত্তির সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। হামাস জানিয়েছে, তারা ভবিষ্যতে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে প্রস্তুত, তবে গাজার শাসনব্যবস্থা নিয়ে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যাতে কোনো বিদেশি নিয়ন্ত্রণ না থাকে।
ফিলিস্তিনি বিশ্লেষক রেহাম ওউদা মনে করেন, হামাসের এ পদক্ষেপগুলো ইসরায়েলের সঙ্গে সহযোগিতাকারী গোষ্ঠীগুলোকে ভয় দেখানো এবং যুদ্ধকালীন নিরাপত্তাহীনতার জন্য দায়ীদের শাস্তি দেয়ার উদ্দেশ্যে। এ ছাড়া, হামাস দেখাতে চাইছে যে তাদের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের নতুন শাসনব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা উচিত। তবে, ইসরায়েল এ দাবি প্রত্যাখ্যান করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।