
ছবি: সংগৃহীত
লাহোর শহরের ওয়ালটন রোড এলাকায় একটি বিস্ফোরক ভর্তি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তানের পুলিশ। পাঞ্জাবের প্রদেশিক রাজধানী লাহোরের গোপাল নগর ও নাসিরাবাদ এলাকায় ওয়ালটন বিমানবন্দরের পাশে ড্রোনটি ভূপাতিত করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওয়ালটন বিমানবন্দরের কাছাকাছি অন্তত দুই থেকে তিনটি বিকট শব্দ শোনা যায় এবং বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে ধোঁয়ার কুন্ডলী উঠতে দেখা যায়। আতঙ্কিত হয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা ঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, ওয়ালটন বিমানবন্দরের কাছে ভারতীয় একটি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। ড্রোনটি আনুমানিক ৫ থেকে ৬ ফুট দৈর্ঘ্যের ছিল এবং এটি সীমান্তের ওপার থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছিল। সূত্র আরও জানায়, ড্রোনটির নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জ্যাম করে সেটিকে ভূপাতিত করা হয়। খবর সামা নিউজের।
এছাড়াও, ড্রোনটি গোপন তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে চালানো হচ্ছিল বলে দাবি করা হয়েছে, এবং এতে বিস্ফোরকও ছিল। সেটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভবনের খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল।
ঘটনার পর পুলিশ ও উদ্ধারকারী দল ওয়ালটন রোড এলাকায় পৌঁছে যায়। স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, লাহোরের আসকারি ৫ এলাকার কাছাকাছি দুইটি বিকট শব্দ শোনা যায় এবং নেভাল কলেজ এলাকা থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে। এলাকাজুড়ে সাইরেন বাজতে শুরু করে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সকালে লাহোর ও সিয়ালকোট শহরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আকাশপথ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে বিমানবন্দর সূত্র জানিয়েছে। আঞ্চলিক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
আরও পড়ুন<<>>ভারত-পাকিস্তান সংঘাত বন্ধের আহবান মার্কিন প্রেসিডেন্টের
নোটিস টু এয়ারম্যান (নোট্যাম)-এ জানানো হয়েছে, লাহোর ও সিয়ালকোটের আকাশপথ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত বেসামরিক বিমানের জন্য বন্ধ থাকবে।
এ নিষেধাজ্ঞার ফলে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস (পিআইএ)-এর একাধিক ফ্লাইটে প্রভাব পড়েছে। মদিনা থেকে ছেড়ে আসা একটি ফ্লাইট, যা মূলত লাহোরে অবতরণের কথা ছিল, সেটিকে করাচিতে পাঠানো হয়েছে। একইভাবে, মুলতান থেকে লাহোরগামী আরেকটি ফ্লাইটও বিলম্বের কারণে করাচিতে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
আকাশপথের নিষেধাজ্ঞা এবং ড্রোন ভূপাতিতের ঘটনাগুলো দক্ষিণ এশিয়ায় ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে, গুজরানওয়ালা ক্যান্টনমেন্টে মোতায়েন বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায় এবং ড্রোনটিকে লক্ষ করে গুলি চালিয়ে তা ভূপাতিত করে।
সূত্র আরও জানায়, ড্রোনটি যখন শহরের আকাশসীমায় প্রবেশ করে, তখন ক্যান্টনমেন্ট এলাকার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনা সঙ্গে সঙ্গে সক্রিয় হয় এবং কমপক্ষে দুটি গুলির মাধ্যমে এটিকে ভূপাতিত করে। ভূপাতিত ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ পরে গুজরাট জেলার ডিঙ্গা গ্রামের কাছে পড়ে।
পুলিশ সূত্র নিশ্চিত করেছে, ধ্বংসাবশেষের খবরে নিরাপত্তা বাহিনী, পুলিশের সমন্বয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পীর ঝাণ্ডা গ্রামের মাঠ থেকে ড্রোনটির ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে সেগুলো ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য জব্দ করা হয়েছে যাতে ড্রোনটির মডেল ও উৎস নির্ধারণ করা যায়।
সৌভাগ্যবশত, এ ঘটনায় কোনো প্রাণহানি বা বেসামরিক স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ড্রোনটির প্রকৃতি ও আকাশসীমা লঙ্ঘনের উদ্দেশ্য নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।