
ছবি: সংগৃহীত
শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন হিরাকে ঘিরে ভাইরাল হওয়া আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও নিয়ে এবার দুপক্ষ থেকেই বিস্ফোরক অভিযোগ আসছে। ওই নারী প্রথম থেকেই দাবি করে আসছেন, ডিসি আশরাফ উদ্দিন তাকে বিয়ের প্রলোভনে প্রতারণা করছেন। তবে অবশেষে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন ডিসি আশরাফ উদ্দিন।
জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিন হীরা অভিযোগ করে জানান, ওই নারী তার আত্মীয়। পারিবারিক যোগাযোগ থেকেই তাদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এক পর্যায়ে ওই নারী তাকে ঘনিষ্ঠ করে নানা সময়ে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। পরে ব্লাকমেইল শুরু করেন।
তিনি আরও বলেন, প্রতি মাসে আমাকে টাকা দিতে হতো। বিভিন্ন সময়ে টাকা পূবালী ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। যার ডকুমেন্ট আমার কাছে রয়েছে। সবশেষ আমার স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে বলেন ওই নারী। এছাড়া বিয়েতে রাজি না হলে বড় অঙ্কের টাকা দাবি করেন তিনি।
অপরদিকে, ওই নারী দাবি করে বলেন, পারিবারিক সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে তিনি আমার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পবিত্র কোরআন শরিফে হাত রেখে আমাকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। তার কথা বিশ্বাস করে আমি আমার স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্সে যেতে বাধ্য হই।
তিনি আরও বলেন, পরে আশরাফ উদ্দিন তার স্ত্রীর সঙ্গে আর্থিক বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। তখন আমাদের সম্পর্ক গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। আমাকে পাত্তা না দিয়ে, উল্টো বলছেন আমি তাকে ব্লাকমেইল করছি। অথচ তার পারিবারিক সমস্যা সামাল দিতে তিনি নিজেই আমাকে ব্যবহার করেছেন। আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেছেন।
আরওপড়ুন<<>>শরীয়তপুর ডিসির আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভিডিওতে থাকা নারী টাঙ্গাইল সদরের বাসিন্দা। তিনি ঢাকা মিরপুরের মাজহারুল ইসলাম সংগ্রামের স্ত্রী ছিলেন। পারিবারিকভাবে বিয়ে হওয়া এ দম্পতির ঘরে রয়েছে দুই সন্তান। জেলা প্রশাসক মো. আশরাফ উদ্দিন হীরা ওই নারীর স্বামীর বড় বোনের জামাই। পারিবারিক আত্মীয়তার সূত্র ধরেই তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শরীয়তপুর জেলা জজ আদালতের এক আইনজীবী বলেন, দুপক্ষের মধ্যে গত দুই মাস ধরে মধ্যস্থতার চেষ্টা করেছিলাম। আমি বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু নারী পক্ষ মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন এবং ৩০ জুনের মধ্যে তা পরিশোধের সময়সীমা দেন। এর মাঝেই ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়ে।
এদিকে, জেলাজুড়ে ‘টক অব দ্য টাউন’ শরীয়তপুরের ডিসি মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন কাণ্ডের ঘটনা। শুধু জেলায় নয়, দেশব্যাপী এ ঘটনা নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। মূলত এক নারীর সঙ্গে তার অন্তরঙ্গ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে আলোড়ন তৈরি হয়।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন হিরা। তিনি ২৭তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। এর আগে মোহাম্মদ আশরাফ প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ও নিউরো-ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্টের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ঘটনা নিয়ে ওই নারীর সঙ্গে কথা কাটাকাটির পর বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাতেই আশরাফ উদ্দিন শরীয়তপুর ত্যাগ করেন।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তিনি ছুটিতে রয়েছেন। তবে তার অনুপস্থিতিতে কে দায়িত্ব পালন করছেন, তার কোনো অফিসিয়াল তথ্য মেলেনি।
আপন দেশ/এমএইচ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।