
পাকিস্তানকে হারিয়ে নবমবারের মতো এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন ভারত
৪১ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার এশিয়া কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তান ও ভারত। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটি নিয়ে মাঠে কিম্বা মাঠের বাইরে রোমাঞ্চকর উত্তেজনায় ভাসছিলেন দুই দলের সমর্থকরা। রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে যেভাবে ব্যাটিং শুরু করেছিল পাকিস্তান, তাতে মনে হয়েছিল ট্রফি জিততে যাচ্ছে তারা। কিন্তু ১০ ওভার পেরুতেই সে ধারনা পাল্টে যায়।
শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে এশিয়া কাপের অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। আগে ব্যাট করে ১৪৬ রানে অল আউট হয় পাকিস্তান। ভারত সে লক্ষ্য পেরিয়ে গেছে ৫ বল হাতে রেখেই। অপরাজিত ৬৯ রানের ইনিংস খেলে ভারতের জয়ের নায়ক তিলক ভার্মা।
পাকিস্তানের দেয়া মাঝারি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে ভারত। ১০ রানের মধ্যেই ২ উইকেট হারায় তারা। পাওয়ার প্লে শেষে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৩৬ রান। চতুর্থ উইকেটে দারুণ এক জুটি গড়ে ভারতের ইনিংস টানছিলেন সাঞ্জু স্যামসন ও তলক ভার্মা। এ দুজনের ৫৭ রানের জুটি ভাঙেন আবরার আহমেদ।
এ স্পিনারের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিয়েছেন ফারহানকে। স্যামসন আউট হয়েছেন ২১ বলে ২৪ রান করে। এরপর দেখেশুনে খেলে ভারতকে স্বস্তির জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যান তিলক ও শিভম দুবে। শেষদিকে দুবে ২২ বলে ৩৩ রান করে ফিরলেও ভারতকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন তিলক।
এর আগে টসে জিতে পাকিস্তানকে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় ভারত। ব্যাটিংয়ে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় পাকিস্তান ওপেনিং জুটিতেই তারা তোলে ৮৪ রান। এমন শুরুর পরও পাকিস্তানের ইনিংস ধ্বংসস্তূপ হতে সময় নেয়নি। শুরুতে ভারতীয় বোলারদের তুলোধোনা করে মাত্র ৩৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ফারহান।
হাফ সেঞ্চুরির পথে দুটি ছক্কা ও ৫টি চার মারেন পাকিস্তানের এ ওপেনার। ৩৮ বলে ৫৭ রান করে বরুণ চক্রবর্তীর শিকার হয়ে ফিরেছেন ফারহান। তিনি ক্যাচ দেন তিলককে। আর তাতেই দলীয় ৮৪ রানে পাকিস্তানের ওপেনিং জুটি ভাঙে। বরুণের বলে পুল করেছিলেন ফারহান। তবে ব্যাটে বলে করতে পারেননি তিনি। সোজা ক্যাচ দেন ডিপে ফিল্ডিং করা তিলককে।
আরও পড়ুন<<>>হংকংয়ের বিপক্ষে ডাক পেলেন প্রবাসী জায়ান
এরপর ফখর জামানকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি সাইম আইয়ুব। এবারের এশিয়া কাপে বাজে ফর্মে থাকা এ পাকিস্তানি ব্যাটার ১১ বলে ১৪ রান করে ফিরেছেন। কুলদীপ যাদবের বলে ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে জসপ্রিত বুমরাহর হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। মোহাম্মদ হারিসও ব্যর্থ হয়েছেন।
২ বলে কোনো রান না করেই আউট হন তিনি। অক্ষর প্যাটেলের বলে ডিপে উড়িয়ে মারতে গিয়ে রিঙ্কু সিংয়ের হাতে ধরা পড়েছেন তিনি। ফখরকে আউট করেছেন বরুণ। এ স্পিনারের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে কুলদীপকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৩৫ বলে ৪৬ রানের ইনিংস। দ্রুত আউট হয়েছেন হুসাইন তালাতও।
অক্ষর প্যাটেলের বলে টপ এজ হয়ে সাঞ্জু স্যামসনকে ক্যাচ দেন এ পাকিস্তানি ব্যাটার। আর তাতেই ১৩১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে পাকিস্তান। পাকিস্তান তাদের বাকি ৫ উইকেট হারিয়েছে ১৫ রানের মধ্যে। আর তাতেই দেড়শর আগে গুড়িয়ে যায় পাকিস্তানের ইনিংস। পাকিস্তানের ইনিংসে সবচেয়ে বড় ধস নামিয়েছেন কুলদীপ। তিনি একাই নিয়েছেন ৪ উইকেট। আর ২টি করে উইকেট নেন বুমরাহ, বরুণ ও অক্ষর।
এ নিয়ে নবমবারের মতো এশিয়ার ‘বিশ্বকাপ’ খ্যাত এ টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হলো ভারত। এর মধ্যে সাতবার ওয়ানডেতে আর দুবার টি–টোয়েন্টি সংস্করণে শিরোপা জিতেছে তারা।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।