
প্রতীকী ছবি
মানুষ সামাজিক জীব—এটাই তার প্রকৃত পরিচয়। কিন্তু সময়ের সঙ্গে বদলে যাচ্ছে তার সামাজিকতা, ভাবনার গভীরতা ও সম্পর্কের মাধুর্য। বিশ্বায়ন ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের যুগে বদলে যাচ্ছে মানুষের জীবনধারা, আর সে পরিবর্তনের ঢেউ লেগেছে সামাজিক কাঠামোতেও। হারিয়ে যাচ্ছে সাম্য, শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ববোধ, শান্তি—যা একসময় সমাজের চালিকাশক্তি ছিল।
আজকের সমাজে মানুষের জীবনে জায়গা করে নিচ্ছে স্বার্থপরতা, ক্ষমতার অহংকার, দাম্ভিকতা ও একের পর এক অসামাজিক কর্মকাণ্ড। স্বজন হারানোর ভয়, বন্ধু-বিয়োগ কিংবা নিকটজনের বিশ্বাসঘাতকতা যেন আর চমকে দেয় না কাউকে। কারণ এমন ঘটনা আজ আশপাশেই ঘটছে অহরহ। মায়ের কোল থেকে সন্তানকে ছিনিয়ে নিচ্ছে মানুষ। স্ত্রীর কাছ থেকে কেড়ে নিচ্ছে স্বামীকে। ভাইয়ের হাতে প্রাণ হারাচ্ছে ভাই।
সম্প্রীতির সমাজে এখন বিচ্ছিন্নতা আর হিংসার রাজত্ব। ক্ষমতার অপব্যবহার, সহনশীলতার অভাব আর প্রতিবাদের সাহস হারিয়ে সমাজ রূপ নিচ্ছে এক অদৃশ্য কারাগারে। অনেকে ভয়, হয়রানি কিংবা অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে মুখ বন্ধ করে থাকেন প্রতিবাদ করতে পারেন না।
প্রযুক্তি দিয়েছে গতি, কেড়ে নিয়েছে নৈতিকতা – সামাজিক অবক্ষয়ে হুমকির মুখে যুবসমাজ
একদিকে যেমন বদলে গেছে যোগাযোগ, কাজের ধরন, জীবনযাত্রা, তেমনি বদলে গেছে মানুষের চাওয়া-পাওয়া, মূল্যবোধ আর সম্পর্কের ভারসাম্যও। মোবাইল, কম্পিউটার, ইন্টারনেট, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা—এ সবই একদিকে যেমন উন্নয়নের নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। তেমনি অন্যদিকে তৈরি করেছে এক ভয়াবহ নৈতিক সংকট।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আজকের এ তথাকথিত চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে প্রযুক্তির অভাবনীয় সাফল্যের আড়ালে হারিয়ে যাচ্ছে সমাজের মানবিকতা, পারিবারিক বন্ধন ও নৈতিক শুদ্ধতা। প্রযুক্তির লাগামহীন ব্যবহার আজ সমাজে সৃষ্টি করছে অস্থিরতা, নিরাপত্তাহীনতা ও নৈতিক অবক্ষয়ের এক অন্ধকার চিত্র। বিশ্বাস, ভালোবাসা আর আস্থার জায়গা দখল করে নিচ্ছে সন্দেহ, পরকীয়া, আত্মহত্যা ও খুন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর কারণে নষ্ট হচ্ছে পারিবারিক সম্পর্ক, বাড়ছে বিবাহবিচ্ছেদ, ভাঙছে পরিবার।
বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম প্রযুক্তির আশীর্বাদ থেকে যতটা উপকৃত হওয়ার কথা, তার চেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে এর নেতিবাচক দিক দ্বারা। আজকের তরুণরা দিনভর মোবাইলে গুঁতোগুঁতি করে কাটায়। কিন্তু জানে না ইমেইল আর জিমেইলের পার্থক্য। বাংলাদেশের ৫ কোটিরও বেশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর একটা বড় অংশই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করছে কেবল স্ট্যাটাস, সেলফি, চ্যাটিং কিংবা ভিডিও দেখে সময় কাটানোর কাজে। এ প্রবণতা জন্ম দিচ্ছে নতুন এক সামাজিক বাস্তবতায়, যেখানে ‘ব্র্যান্ড’ কিংবা ‘ইমেজ’ই হয়ে উঠছে পরিচয়ের প্রধান মাপকাঠি। নৈতিকতা, ধর্মীয় মূল্যবোধ, পারিবারিক শিক্ষা সেখানে যেন মুছে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।
বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে যেমন ইন্টারনেট ও পর্নোগ্রাফি আসক্তিতে তরুণদের বিপথগামিতা বাড়ছে, ঠিক তেমনি আমাদের দেশেও ঘটছে একই ঘটনা—তবে সেটি হচ্ছে নিরব ও ভয়াবহভাবে। প্রেম-পরকীয়া-খুন-আত্মহত্যা—এসব এখন নিত্যদিনের খবর। মা-বাবার অবহেলা, ধর্মীয় শিক্ষার অভাব, সামাজিক সচেতনতার ঘাটতি সব মিলিয়ে তৈরি করছে ভয়াবহ এক সামাজিক দুর্যোগ। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও ছাত্র-ছাত্রীরা জড়িয়ে পড়ছে অনৈতিক সম্পর্কে। প্রযুক্তির অপব্যবহার ক্রমেই সামাজিক অনাচারকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এখনই সতর্ক না হলে আগামী প্রজন্মকে আমরা এক ভয়াবহ সামাজিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেব।
তাদের কথাকে গুরুত্ব না দেয়া এসব কিছুই আচরণগত অবক্ষয়ের ফলে ঘটছে। অনেক সময় দেখা যায়, পারিবারিক কলহ, সন্তান পিতাকে খুন করছে, অথবা পিতা সন্তানকে এ সবকিছুই বিকৃত মস্তিষ্কের পরিচয় দিচ্ছে। প্রায় কিছু ঘটনা আমাদের চোখে পড়ছে যেমন সম্পত্তির যেরে পুত্র পিতাকে হত্যা করছে, গুম খুন হচ্ছে, সমাজের পৈশাচিক ব্যক্তির কার্য প্রকাশিত হচ্ছে। নীতিবোধ হারিয়ে যাচ্ছে বলেই আমরা অসৎ পথ অবলম্বন করতে দ্বিধা বোধ করছি না। অসৎ পথকে সত্য মেনে এগিয়ে যাচ্ছি দৃঢ় মনোবল নিয়ে। সত্য মিথ্যার পার্থক্য করতেও যাচ্ছি ভুলে। শিষ্টাচার ও নৈতিকতা-বহির্ভূত জীবনযাপন করছি বলেই রাস্তায় কারওর ক্ষতিসাধনের আগে ভাবছি না। অন্যকে বুলিং করতেও অপরাধবোধ কাজ করছে না। এসব ছোটো ছোটো আচরণের মাধ্যমে বৃহৎ অবক্ষয়ের সৃষ্টি হচ্ছে, যার ফলটাও ভয়াবহ।
গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মানুষ করে তুলেছে অসামাজিক। বস্তুত ভার্চুয়াল যোগাযোগের সুযোগ যত বাড়ছে, মানবসম্পর্ক তত ভঙ্গুর হয়ে যাচ্ছে। কাছে আসার ছলে মানুষ চলে যাচ্ছে দূরে। সম্পর্কজাল যত বিস্তৃত হচ্ছে, সম্পর্কের মূল্য সম্পর্কে মানুষ তত বেশি বেখেয়াল হয়ে যাচ্ছে। এখন সম্পর্ক আলগা, হৃদয়াবেগরহিত।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে যে, একজন মানুষ প্রতি আড়াই মিনিটে অন্তত একবার হাতের কাছে থাকা স্মার্টফোন নেড়েচেড়ে দেখে। স্ক্রিন অন করে কোনো কারণ বা প্রয়োজন ছাড়াই।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জীবন যাত্রার মান,প্রযুক্তিরও উন্নয়ন ঘটছে। আমাদের প্রতিদিনের জীবন যাত্রাকে সহজ থেকে সহজতর কারার জন্য নানান উপাদান চলে আসছে। প্রযুক্তির উন্নয়ন আমাদের জন্যই কিন্তু তার আড়ালে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের ঐতিহ্য, মানবিকতা, মূল্যবোধ, সম্পর্কের গভীরতা।
আধুনিক প্রযুক্তি পণ্যের ব্যবহারে মানুষের মূল্যবোধেও পরিবর্তন আসছে। মানুষ মানুষের ওপর আস্থা হারাচ্ছে; সততা ও আদর্শের অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। আমরা দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, চরমপন্থা, সহিংসতা এবং অনৈতিকতায় জড়িয়ে পড়ছি। নীতি, নৈতিকতা, মানবতা, সহানুভূতি, সহযোগিতা, সহমর্মিতা ও দয়ার মতো মানবিক গুণাবলি দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে, যাকে সমাজবিজ্ঞানীরা সামাজিক পুঁজির সংকট বলে বর্ণনা করেছেন।
গ্রামীণ খেলাধুলা হারিয়ে যাচ্ছে প্রযুক্তির ছোবলে
এক সময় ছিল, বিকেল নামলেই গ্রামজুড়ে মুখরিত হতো শিশু-কিশোরদের কোলাহলে। মাঠে মাঠে চলত হা-ডু-ডু, দাড়িয়াবান্ধা, গোল্লাছুট, কাবাডি, বউচি, কানামাছি বা লোকোচুরি খেলার উত্তেজনা। বড়রাও অংশ নিত খেলায়। গ্রামজুড়ে ছিল এক ধরনের উৎসবমুখর পরিবেশ।
কিন্তু সে দৃশ্য এখন কেবল স্মৃতি। হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ জনপদের প্রাণ, বাঙালির শতবর্ষ পুরোনো ঐতিহ্য। একবিংশ শতাব্দীর শিশুরা আজ এসব খেলার নামই শোনেনি। তাদের কাছে হা-ডু-ডু মানে যেন একটা পুরনো গল্প। গোল্লাছুট শুনলেই চোখে পড়ে না আর মাঠের ধুলো, বরং স্মার্টফোনের স্ক্রিন। তবে ব্যতিক্রম কিছু জায়গায় এখনো ঐতিহ্য টিকে আছে। ফরিদপুর জেলার কয়েকটি গ্রামে এখনো দেখা মেলে এইসব গ্রামীণ খেলার। কৃষকরা দিনের কাজ শেষে জড়ো হন মাঠে। শুরু হয় হা-ডু-ডু, কাবাডি কিংবা দাড়িয়াবান্ধার খেলা। আশপাশের মানুষ খেলা দেখতে ভিড় করেন। করতালি আর উল্লাসে মুখর হয়ে ওঠে গ্রামের পরিবেশ।
কিন্তু এমন দৃশ্য আজ দুর্লভ। প্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় যান্ত্রিক জীবনের ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলো। এখনকার শিশুরা মাঠে যায় না, যায় ভার্চুয়াল জগতে। সময় কাটে মোবাইল, ট্যাব, ভিডিও গেমস কিংবা টেলিভিশনে। বাইরে খেলার মতো পরিবেশও অনেক জায়গায় নেই। শহর তো বটেই, গ্রামাঞ্চলেও খেলার মাঠের অভাব প্রকট। শিশুদের হাতে মোবাইল তুলে দিচ্ছে পরিবারগুলোই। ফলে তারা সময় পেলেই ভিডিও গেমসে ডুবে যায়। মাঠে খেলাধুলা করতে আর তাদের আগ্রহ নেই। এতে যেমন বন্ধ হচ্ছে সামাজিক মেলবন্ধন, তেমনি বাধা পাচ্ছে শিশুদের শারীরিক বিকাশও। আগে প্রতিটি স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হতো। খেলার জন্য থাকত বড় মাঠ।
এখন অনেক প্রতিষ্ঠানেই মাঠ নেই। খেলাধুলা নেই বললেই চলে। শিক্ষার্থীরা কেবল বইয়ের ভারে নুয়ে পড়ে। এতে তাদের মানসিক চাপ বাড়ছে, স্বাস্থ্যহানিও ঘটছে। আর এ অবস্থা শিশুদের বিপথে ঠেলে দিচ্ছে। সময় না কাটাতে পেরে অনেক শিশু-কিশোর জড়িয়ে পড়ছে মাদক, পর্নোগ্রাফি বা সাইবার অপরাধে। শারীরিক ক্লান্তি না থাকায় মানসিক চাপ বের হয় হিংসাত্মক আচরণে। বাড়ছে অস্থিরতা ও সহিংসতা।
আধুনিকতায় গ্রামীণ খেলার পুনর্জাগরণ, কীভাবে ফিরবে হারানো ঐতিহ্য?
বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলো কেবল বিনোদন নয়। এগুলো একসময় ছিল সমাজ গঠনের হাতিয়ার। ছিল শরীরচর্চার মাধ্যম ও মানসিক বিকাশের উপায়। কিন্তু আজ এ খেলাগুলো হারিয়ে যাচ্ছে স্মৃতির গহ্বরে। তবু আশার আলো নিভে যায়নি। সম্ভাবনা এখনো রয়েছে। সঠিক পরিকল্পনা ও প্রচেষ্টায় ফেরানো যেতে পারে বাংলার ঐতিহ্য। তরুণ প্রজন্মকে আবারও ফিরিয়ে আনা যেতে পারে মাঠে, প্রকৃত খেলাধুলায়।
স্কুল ও কলেজে লোকজ খেলাধুলার পাঠ্যক্রম প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লোকজ খেলাধুলা অন্তর্ভুক্তি। স্কুল-কলেজের ক্রীড়া ক্লাসে হাডুডু, দাড়িয়াবান্ধা, গোল্লাছুট, পাঁচগুটি শেখানো যেতে পারে। নিয়মিত টুর্নামেন্টের আয়োজন করলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আগ্রহ বাড়বে। বড়দের পাশাপাশি ছোটরাও পরিচিত হবে বাংলার পুরনো খেলাগুলোর সঙ্গে।
জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতা সরকারি উদ্যোগে জাতীয় পর্যায়ের লোকক্রীড়া প্রতিযোগিতা চালু করা দরকার। প্রতিটি জেলা, উপজেলা বা ইউনিয়নে অন্তত বছরে একবার লোকজ খেলার উৎসব করা যেতে পারে। স্থানীয় মেলা বা উৎসবগুলোতেও রাখা যেতে পারে ঐতিহ্যবাহী খেলার প্রদর্শনী। এতে শিশুরা দেখবে, শিখবে ও অংশগ্রহণে আগ্রহী হবে।
মিডিয়া ও প্রযুক্তির সৃজনশীল ব্যবহার যেখানে আধুনিক প্রযুক্তি গ্রামীণ খেলাকে বিলুপ্ত করেছে, সে প্রযুক্তিই হতে পারে এ খেলাগুলোর পুনর্জন্মের মাধ্যম। সোশ্যাল মিডিয়া, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম বা শর্ট ভিডিও প্ল্যাটফর্মে প্রচারণা চালানো যেতে পারে বাংলার পুরনো খেলাগুলোর উপর। ডিজিটাল দুনিয়ায় খেলা দেখার অভ্যাস গড়ে উঠলে তরুণরাও এগুলো নিয়ে আগ্রহী হবে। মোবাইল অ্যাপ ও ভিডিও গেম সংস্করণ বর্তমান প্রজন্ম মোবাইল গেমসে অভ্যস্ত। তাদের মনোযোগ ধরে রাখতে ঐতিহ্যবাহী খেলার মোবাইল ভার্সন তৈরি করা যেতে পারে। যেমন “হাডুডু চ্যাম্পিয়নশিপ” বা “পাঁচগুটি ম্যাস্টার” নামে গেম ডিজাইন করে বাংলার শিকড়কে রাখা যেতে পারে তরুণদের হাতের মুঠোয়।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সমাজ সংগঠনের ভূমিকা সব দায়িত্ব সরকারের নয়। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও এনজিওগুলোও এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। স্থানীয় ক্লাবগুলোতে নিয়মিত লোকজ খেলাধুলার প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে। এমনকি লোকক্রীড়া একাডেমিও গড়ে তোলা যেতে পারে গ্রামীণ এলাকায়। ঐতিহ্যকে অর্থনৈতিক রূপ দেয়া লোকজ খেলাধুলাকে টিকিয়ে রাখতে হলে তাকে শুধু ‘ঐতিহ্য’ হিসেবে নয়, ‘সম্ভাবনা’ হিসেবেও দেখা দরকার।
প্রতিযোগিতামূলক ও পুরস্কারভিত্তিক আয়োজন বাড়ালে তরুণরা একে ক্যারিয়ার হিসেবেও ভাবতে শুরু করবে। কবাডির মতো হাডুডুকেও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছানো সম্ভব।তেমনিই অন্য গ্রামীণ খেলাগুলোও পেতে পারে বিশ্বমঞ্চে জায়গা। ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা: ঐতিহ্যের সাথে আধুনিকতার সেতুবন্ধন বাংলার গ্রামীণ খেলাগুলোর ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে আমাদের এখনকার সিদ্ধান্ত ও উদ্যোগের উপর। আধুনিক প্রযুক্তি, সামাজিক যোগাযোগ, এবং সচেতন নীতি যদি একত্র হয়— তাহলেই ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সেতুবন্ধন সম্ভব।
নতুন প্রজন্ম যদি জানতে পারে তাদের শিকড়, তাহলেই তারা ভালোবাসবে ঐতিহ্যকে। আর সে ভালোবাসাই পারে ফিরিয়ে আনতে বাংলার হারিয়ে যাওয়া খেলাধুলাকে।
বাংলার মাঠে আবার যদি শোনা যায় “হাডুডু! হাডুডু!” ধ্বনি, পাঁচগুটির ঠুকঠুক আওয়াজে মুখর হয় উঠোন, তবে আমরা নিশ্চিত হতে পারি—বাংলা তার শিকড় ভুলে যায়নি, বরং খুঁজে পেয়েছে নতুন করে। এ পুনরুজ্জীবন শুধু খেলার নয়, এটা সংস্কৃতির, পরিচয়ের ও আমাদের আত্মারও পুনর্জাগরণ। এখন দরকার শুধু ইচ্ছা, পরিকল্পনা, আর সম্মিলিত চেষ্টা। তাহলেই ‘হারিয়ে যাওয়া’ নয়, বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলো হয়ে উঠবে ‘ফিরে পাওয়া গর্ব’।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।