
ফাইল ছবি
আগে মিরপুর থেকে মতিঝিলে যেতে সময় লাগতো কমপক্ষে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা। এর উপর বাসে বসে থাকার যন্ত্রণা। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা তো আছেই। বর্তমানে আধা ঘন্টারও কম সময়ে নেমে এসেছে এ দুরত্ব। এটি সম্ভব হয়েছে মেট্রোরেলের কল্যাণে। ঢাকার গণপরিবহনের আস্থার নাম হয়ে উঠছে মেট্রোরেল। উত্তরা থেকে মতিঝিলের পথজুড়ে যানজটের আঁধার পেরিয়ে আলোর পথ নিয়ে ছুটে চলেছে মেট্রোরেল।
মেট্রোরেলের পরিধি যেমন বাড়ছে, তেমনি সমান তালে বাড়ছে যাত্রীদের প্রত্যাশাও। ঢাকার মেট্রোরেল স্টেশনগুলোতে এবার যাত্রীসেবার পাশাপাশি বাণিজ্যিক ব্যবহারের সুযোগও থাকছে। ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজার মেট্রো স্টেশনের বিশাল ফ্লোর ভাড়া দিয়ে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য পথ খুলতে যাচ্ছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।
ডিএমটিসিএল জানিয়েছে, এমআরটি লাইন-৬ এর ১৬টি স্টেশনের মধ্যে শুধুমাত্র ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজার স্টেশন তিন তলাবিশিষ্ট। এ দুটি স্টেশনের দ্বিতীয় তলায় প্রায় ২৫ হাজার বর্গফুট ফাঁকা জায়গা বাণিজ্যিকভাবে ভাড়া দেয়া হবে। ভাড়া নিতে আগ্রহী প্রতিষ্ঠান শপিংমল, ডেইলিশপ, ব্যাংক বা অফিস কিংবা অন্য কোনো কাজে মেট্রো স্টেশনের সংশ্লিষ্ট ফ্লোর ব্যবহার করতে পারবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্বাচন করা হবে। ভাড়ার প্রস্তাব বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স বা যমুনা ফিউচার পার্কের ভাড়ার সমান বা বেশি হতে হবে। ইজারা মেয়াদ ১০ বছর, যা নবায়নযোগ্য নয়।
ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ বলেন, ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজার স্টেশনে দুটি বড় স্পেস রয়েছে, প্রতিটির আয়তন প্রায় ২৫ হাজার বর্গফুট। অন্যদিকে, লাইন-৬ এর বাকি স্টেশনগুলোতে গড়ে ১৫০ বর্গফুট আয়তনের তিন-চারটি ছোট কক্ষ রয়েছে, যা ভিন্নধরনের ব্যবসার জন্য উপযোগী।
তিনি বলেন, প্রথমে বড় স্পেস ভাড়া দেয়া হবে, এরপর ছোট কক্ষগুলো ইজারা দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হবে।
২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে সীমিত পরিসরে মেট্রোরেল চালু হয় এবং ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে পুরো রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ডিএমটিসিএলের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রথম অর্থবছরে (২০২২-২৩) টিকিট বিক্রি থেকে আয় হয়েছে ১৮ কোটি ২৮ লাখ টাকা এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪৩ কোটি ৯১ লাখ টাকায়।
তবে এ আয় দিয়েই সব খরচ মেটানো সম্ভব নয়, কারণ দৈনন্দিন ব্যয়ের পাশাপাশি জাইকার থেকে নেয়া ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকার ঋণের কিস্তিও পরিশোধ করতে হচ্ছে। বিকল্প আয় উৎস হিসেবে স্টেশনগুলোর ফাঁকা জায়গা ভাড়া দেয়ার উদ্যোগকে সম্ভাবনাময় বলে মনে করছে ডিএমটিসিএল।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।