বাসস লোগো ও বাসস এমডি মাহবুব মুর্শেদ
সরকারের গুম কমিশনের খবর পরিবেশনের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে চাকুরিচ্যুতির হুমকিসহ হয়রানির শিকার হয়েছেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সিনিয়র রিপোর্টার। তিনি প্রধান উপদেষ্টার অফিসের সংবাদ পরিবেশনের দায়িত্বে নিয়োজিত। সোমবার (১৬ জুন) মৌখিক নির্দেশে তাকে প্রধান উপদেষ্টার অফিসে যেতে নিষেধ করেছেন বাসসের এমডি মাহাবুব মোর্শেদ।
বাসস সূত্র জানায়, ওই রিপোর্টারকে বরিশালে বদলি করারও হুমকি দেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট রিপোর্টারের বিরুদ্ধে এমডি মাহাবুব মোর্শেদের ক্ষিপ্ত হওয়ার কারণ গুম কমিশনের দ্বিতীয় অন্তবর্তী প্রতিবেদন হস্তান্তরের খবর পরিবেশন। বিগত ৪ জুন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে কমিশন এ প্রতিবেদনটি পেশ করে। প্রতিবেদনটি বাসস অফিসে যথারীতি জমা দেন রফিকুল ইসলাম। বাসসের সংশ্লিষ্ট সম্পাদকগণ বাসস-১৫ আইটেম হিসাবে সংবাদটি পরিবেশন করে। এরপর ১ ঘন্টা সময়েরও বেশি বাসসের ওয়েবসাইট থেকে গুমের এ খবরটি সরিয়ে নেয়া হয়।
আরও পড়ুন<<>> বাসসের দুর্নীতি-এমডিকে-রুখবে কে? সাংবাদিক সংগঠনের উদ্বেগ
প্রতিবেদক রফিককে কাছে ধমকের সুরে জানতে চাওয়া হয় কেন এ সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। এমডি’র এহেন আচরণে বাসসের সাংবাদিকরা অবাক হয়ে যায়। ওইদিনই রহস্যজনক কারণে প্রত্যাহার করা সংবাদটি পুনরায় সাইটে তুলে দেয়া হয়। তবে রফিককে তার পরিণতির জন্য অপেক্ষা করতে বলা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় তাকে বাসস অফিসে মৌখিক ক্লোজড করা নেয়া হয়েছে। এখন থেকে প্রধান উপদেষ্টা অফিসে যাতায়াত তার জন্য নিষিধ করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের সঙ্গে যুক্ত থেকে প্রাপ্ত তথ্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি তাকে বাসসের আভ্যন্তরীণ বাড়তি কাজও করতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন<<>> বাসসের দুর্নীতি: তদন্ত ঠেকাতে মব জাস্টিসের হুমকি
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাসসের একাধিক সিনিয়র সাংবাদিক এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘স্বৈরাচারের আমলে কোণ্ঠাসা ছিলাম, অপমানীত হতে হয়নি। আজ এ দায়িত্ব তো কাল অন্য দায়িত্ব, সকালে সীটে নাম তো রাতে নেই। তবে এখন বাসসে যা হচ্ছে তা সীমালঙ্ঘন। প্রধান উপদেষ্টার অফিসের কী চায় তার চেয়ে বড় কথা হলো এমডির কথাই বাসসে শেষ কথা-এমনও শুনতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে মাহবুব মুর্শেদের বক্তব্য জানতে হোয়াট্সঅ্যাপে ক্ষুদেবার্তা পাঠালেও তিনি সাডা দেননি।
উল্লেখ্য, বাসসের দুর্নীতি তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন। অন্যদিকে বাসস এমডির স্বৈরাচারী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে সাংবাদিকদের সর্বোচ্চ সংগঠন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে। ধাপে ধাপে তিন দফা কর্মসূচিও দিয়েছে সংগঠনগুলো। তবে রহস্যজনক কারণে বাসস এমডির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি সরকার।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।
