Apan Desh | আপন দেশ

বলছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

নিজ দেশের মুসলিমদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠাচ্ছে ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক    

প্রকাশিত: ১১:৫২, ২৪ জুলাই ২০২৫

আপডেট: ১৫:৪৬, ২৪ জুলাই ২০২৫

নিজ দেশের মুসলিমদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠাচ্ছে ভারত

সংগৃহীত ছবি

ভারত সরকার বেআইনিভাবে শত শত ভারতীয় বাঙালি মুসলিমকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। এ অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। তারা জনায়, এসব মানুষকে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ বলে চিহ্নিত করে যথাযথ আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে।

নিউইয়র্কভিত্তিক এ সংস্থার বুধবার (২৩ জুলাই) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে পাঠানো বাঙালী মুসলিমদের অনেকেই ভারতের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোর নাগরিক। ২০২৫ সালের মে মাস থেকে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার এ বিতাড়ন প্রক্রিয়া আরও জোরদার করেছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, ভারতের শাসক দল বিজেপি নির্বিচারে বাঙালি মুসলিমদের দেশ থেকে বের করে দিয়ে বৈষম্যের আগুনে ঘি ঢালছে। এমনকি যারা প্রকৃত ভারতীয় নাগরিক, তারাও বাদ পড়ছেন না।

সংস্থাটির এশিয়া পরিচালক এলেইন পিয়ারসন বলেন, যেভাবে সরকার ‘অবৈধ অনুপ্রবেশ’ ঠেকানোর কথা বলছে, তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। কারণ এতে তারা ন্যূনতম আইনগত অধিকার বা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ডও মানছে না।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তথ্যমতে, গত জুন মাসে তারা ৯টি ঘটনার ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের ১৮ জনের সাক্ষাৎকার নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন এমন ভারতীয় নাগরিকরাও যাদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল। পরে তারা আবার ভারতে ফিরে আসেন। গত ৮ জুলাই এ বিষয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

ভারতের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো সরকারি তথ্য না দিলেও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জানিয়েছে, গত ৭ মে থেকে ১৫ জুনের মধ্যে অন্তত ১৫০০ মুসলিম পুরুষ, নারী ও শিশুকে ভারত বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১০০ রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছেন। ফেরত পাঠানোর এ প্রক্রিয়া এখনও অব্যাহত রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলো যেমন আসাম, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, ওড়িশা ও রাজস্থান থেকে অধিকাংশ দরিদ্র মুসলিম অভিবাসী শ্রমিকদের আটক করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।

অনেক ক্ষেত্রে ভারতীয় সীমান্তরক্ষা বাহিনী বিএসএফ আটক ব্যক্তিদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিতে ধমক, মারধর ও অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বাধ্য করেছে। এমন অভিযোগও করা হয়েছে। কিছু মানুষ পরে প্রমাণ দিতে পেরেছেন যে তারা ভারতীয় নাগরিক ও ভারত সরকার তাদের আবার ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে। গত এপ্রিল মাসে জম্মু ও কাশ্মিরে হিন্দু পর্যটকদের ওপর হামলার পর পুলিশ মুসলিমদের বিরুদ্ধে হয়রানি শুরু করে।

এছাড়া মে মাসে প্রায় ১০০ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আসাম থেকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এমনকি জাতিসংঘ জানিয়েছে, ভারত আরও ৪০ রোহিঙ্গাকে সমুদ্রে পাঠিয়ে দেয় এবং তাদের লাইফজ্যাকেট দিয়ে মিয়ানমারের উপকূলে সাঁতরে যেতে বলে। জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুজ এটিকে “মানবতার চরম লঙ্ঘন” বলে অভিহিত করেছেন।

অ্যান্ড্রুজ এটিকে নন-রিফাউলমেন্ট নীতির সরাসরি লঙ্ঘন বলেছেন। এ আন্তর্জাতিক নীতি অনুযায়ী, কাউকে এমন কোনো স্থানে পাঠানো যাবে না, যেখানে তার জীবন বা স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়বে।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

Advertisement

জনপ্রিয়