ইসরায়েলি বাহিনী বর্বরোচিত হামলায় বিধ্বস্ত গাজা
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় প্রায় ১৮ মাস ধরে চলা দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী বর্বরোচিত হামলায় প্রাণহানি ৫১ হাজার ছাড়িয়েছে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) এ তথ্য জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। এদিকে জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলের দেয়া যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ভোর থেকে গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরও ২৩ জন নিহত হয়েছেন বলে বেশ কয়েকটি চিকিৎসা সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে। এছাড়া অবরুদ্ধ এ ভূখণ্ডজুড়ে আরও হামলা ও হতাহতের খবর আসা অব্যাহত রয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৮ মাস আগে গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে কমপক্ষে ৫১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ১ লাখ ১৬ হাজার ৩৪৩ জন আহত হয়েছেন।
হামাসের সামরিক শাখা জানিয়েছে, মার্কিন-ইসরায়েলি সৈনিক এডান আলেকজান্ডারের পাহারায় থাকা গোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। মূলত ওই বন্দিকে যেখানে রাখা হয়েছিল সেখানে ইসরায়েল ‘সরাসরি বোমাবর্ষণ’ শুরু করার পর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এদিকে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস গাজায় ফিলিস্তিনিদের মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি বলে জানিয়েছে। তারা জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ হাজার হাজার লোককে মৃত বলে ধরে নেয়া হচ্ছে।
আরওপড়ুন<<>>ট্রাম্পের শুল্কনীতি বাতিল চেয়ে মার্কিন আদালতে মামলা
দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দুমাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল। কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে মার্চ মাসের তৃতীয় গত সপ্তাহ থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬৩০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৪ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের বর্বরোচিত এ হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দিয়েছে।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এ ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এর আগে গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। অবরুদ্ধ এ ভূখণ্ডে আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে ইসরায়েল।
আপন দেশ/এমএস
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































