ছবি: আপন দেশ
জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নয়ন, দক্ষ জনস্বাস্থ্য জনবল তৈরি ও গবেষণায় জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) অবদান অনস্বীকার্য। তবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত রোগব্যাধি, অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি মোকাবেলায় নিপসমকে ভূমিকা রাখতে হবে বলে জানান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।
শনিবার (০৮ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালীতে নিপসমের ৫১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির সময় নিপসম জনস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ ও গবেষণায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। এখন গবেষণায় প্রাধান্য দেয়ার পাশাপাশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জনস্বাস্থ্য সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো এবং সংযোগ স্থাপনে জোর দিতে হবে। সংক্রামক-অসংক্রামক ব্যধি ও পরিবেশগত স্বাস্থ্য গবেষণা বাড়াতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, নিপসম দক্ষ জনস্বাস্থ্য পেশাজীবী গড়ে তোলার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের জরুরি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ক্ষমতায়ন করে। প্রতিষ্ঠানটি প্রমাণভিত্তিক নীতি ও কার্যকর হস্তক্ষেপের কৌশল তৈরি করে। যা স্থানীয় ও বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য সমস্যার সমাধানে অবদান রাখছে। নিপসম শুধু একাডেমিক শিক্ষাই নয় বরং স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন, স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মাঠ পর্যায়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যখাতে গুরুপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
সভাপতির বক্তব্যে নিপসম পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. জিয়াউল ইসলাম প্রতিষ্ঠানের ৫১ বছরে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে ভূমিকা ও সাফল্যের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠার সময় ২টি স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা কোর্স নিয়ে যাত্রা শুরু করে নিপসম। বর্তমানে ৯টি এমপিএইচ প্রোগ্রাম ও ১টি এমফিল কোর্স পরিচালনা করছে। প্রতিবছর নিপসমের অনুষদ ও শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে অসংখ্য থিসিস ও গবেষণা প্রকল্প সম্পন্ন করছে। এসব গবেষণা মূলত জনস্বাস্থ্য, রোগ প্রতিরোধ, মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থাপনা বিষয়ে নতুন তথ্য ও জ্ঞান তৈরি করে। নিপসম গত পাঁচ দশকে কয়েক হাজার জনস্বাস্থ্য পেশাজীবী তৈরি করেছে, যারা দেশ-বিদেশে জনস্বাস্থ্য ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
আরও পড়ুন<<>>মৌসুমের প্রথম কুয়াশা বেল্টে ঢাকা
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে নিপসমের ২২টি একাডেমিক বিভাগ এবং ৫টি আধুনিক ল্যাবরেটরি (মাইক্রোবায়োলজি, প্যারাসাইটোলজি, বাইয়োকেমিস্ট্রি, এন্টোমোলজি, এবং পেশা ও পরিবেশ) সুবিধা রয়েছে। জনস্বাস্থ্য শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও পরামর্শ সেবায় নিপসম শ্রেষ্ঠত্বের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। ডক্টর অফ পাবিলক হেলথ কোর্স চালুসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে পাবলিক হেলথ সেবায় জুনিয়র কনসালট্যান্ট পদ সৃষ্টি প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন। অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় পর্বের বৈজ্ঞানিক অধিবেশনের ৯টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়। গবেষণাপত্রগুলো স্বাস্থ্যকর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি, নীতি ও প্রোগ্রামের কার্যকারিতা উন্নয়ন এবং জনস্বাস্থ্য খাতে উদ্ভাবনী সমাধান প্রয়োগে সহায়ক হবে বলে জানানো হয়।
আপন দেশ/এসআর




































