ফাইল ছবি
মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের নেতৃত্বে পরিবর্তন ও সুদহার কমানোর প্রত্যাশার কারণে স্বর্ণের দাম ছয় সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে। অন্যদিকে রেকর্ড ছুঁয়েছে রুপার দাম।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর প্রভাবে দেশের বাজারেও যে কোনো সময় বাড়তে পারে দাম।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার (০১ ডিসেম্বর) স্পট মার্কেটে স্বর্ণের দাম শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্সে ৪ হাজাট ২৫৫ দশমিক ৪ ডলারে পৌঁছেছে। যা ২১ অক্টোবরের পর থেকে সর্বোচ্চ। আর ফেব্রুয়ারিতে ডেলিভারির জন্য মার্কিন সোনার ফিউচার শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ। বেড়ে ৪ হাজার ২৯০ দশমিক ৪০ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
ইউবিএসের বিশ্লেষক জিওভান্নি স্টাউনোভো বলেন, বাজারের অংশগ্রহণকারীরা এখন ডিসেম্বরে ফেডের সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা পুনর্বিবেচনা করছে। এছাড়া আশা করা হচ্ছে নতুন ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটির (এফওএমসি) চেয়ারম্যান দক্ষ, সমর্থনশীল হবেন। যা স্বর্ণের বিনিয়োগের চাহিদাকে বাড়াচ্ছে। একই কারণে রুপার দামও বাড়ছে ও আগামী বছর শিল্প চাহিদা আরও উন্নত হওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে।
আরও পড়ুন>>>নভেম্বরে রেমিট্যান্স এলো ২৮৯ কোটি ডলার
মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক তথ্য ও ফেডারেল রিজার্ভের গভর্নর ক্রিস্টোফার ওয়ালার, নিউইয়র্ক ফেডের প্রেসিডেন্ট জন উইলিয়ামসসহ কয়েকজন নীতিনির্ধারকের মন্তব্যের পর ব্যবসায়ীরা গত কয়েক সপ্তাহে ডিসেম্বর মাসে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা নিয়ে বাজি বাড়িয়েছেন।
সিএমইয়ের ফেডওয়াচ টুল অনুযায়ী, বাজার এবারের রেট কমানোর সম্ভাবনাকে ৮৮ শতাংশ অনুমান করছে। ফেডের ঋণের খরচ কমলে ফলনশীল সোনার চাহিদা আরও বেড়েছে। এদিকে রোববার হোয়াইট হাউসের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কেভিন হ্যাসেট জানিয়েছেন, নির্বাচিত হলে তিনি পরবর্তী ফেড চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পেরে খুশি হবেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো, হ্যাসেটও মনে করেন সুদের হার কম হওয়া উচিত। এছাড়া ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট বলেছেন, ট্রাম্প সম্ভবত বড়দিনের আগে নতুন চেয়ারম্যান ঘোষণা করবেন।
বুধবার নভেম্বরের এডিপি কর্মসংস্থান প্রতিবেদন এবং শুক্রবার সেপ্টেম্বরের মার্কিন ব্যক্তিগত খরচ ব্যয়ের মূল পরিসংখ্যান প্রকাশের মাধ্যমে বাজারকে ফেডের নীতিগত পথে আরও ইঙ্গিত দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরমধ্যেই মার্কিন ডলারের দাম দুই সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে, যার কারণে অন্যান্য মুদ্রার ধারকদের জন্য গ্রিনব্যাক-মূল্যের সোনার মুদ্রা আরও সস্তা হয়েছে।
অন্যদিকে রুপার দাম ২ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্স ৫৭ দশমিক ৬৩ ডলারে দাঁড়িয়েছে। যা আগে সর্বকালের সর্বোচ্চ ৫৭ দশমিক ৮৬ ডলারে পৌঁছেছিল। ইউবিএস বিশ্লেষক জিওভান্নি স্টাউনোভো আশা প্রকাশ করেছেন, আগামী বছর স্বর্ণের দাম ৪ হাজার ৫০০ ডলার প্রতি আউন্স এবং রুপার দাম ৬০ ডলার প্রতি আউন্সে পৌঁছাতে পারে।
অন্য মূল্যবান ধাতুর মধ্যে প্ল্যাটিনামের দাম ১ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৬৯৮ দশমিক ৮৫ ডলার হয়েছে, আর প্যালাডিয়ামের দাম ১ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৪৭৫ দশমিক ০২ ডলারে পৌঁছেছে।
এদিকে দেশের বাজারে স্বর্ণ ও রুপার দাম নির্ধারণ করে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। সবশেষ সমন্বয়ে ভরিতে ২ হাজার ৪০৩ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ লাখ ১০ হাজার ৫৭০ টাকা নির্ধারণ করেছে সংগঠনটি। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ লাখ ১ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৭২ হাজার ২৮৯ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩২৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আর দেশের বাজারে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ২৪৬ টাকায়। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৪ হাজার ৪৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৩ হাজার ৪৭৬ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬০১ টাকায়।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































