
ফাইল ছবি
পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং নাগরিক সুবিধার বিবেচনায় পিছিয়ে পড়া জনপদও। পাহাড়ের ৩ জেলায় বিভিন্ন জনজাতির বসবাসের কারণে একদিকে যেমন অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি তেমনি অন্যদিকের ৬১ জেলার তুলনায় বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এলাকাও বটে।
তবে দেশের ৬১ জেলায় কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে অভিযুক্ত হলে তাকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামে বদলি করা হয়। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমেও গুরুত্বসহকারে প্রকাশ হয়। কিন্তু এতে করে পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং সমতলের বাসিন্দাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। প্রশ্ন উঠে পার্বত্য চট্টগ্রাম কী তাহলে অপরাধী এবং অযোগ্যদের পূনর্বাসন কেন্দ্র?
পার্বত্য চট্টগ্রাম সমিতি ঢাকা মনে করে এ অঞ্চলে শাস্তিমুলক বদলির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জনজাতির প্রায় ২০ লাখ মানুষকে অসম্মানিত এবং অপমান করা হচ্ছে। এতে পার্বত্য চট্টগ্রামকে স্পষ্টত হেয় এবং ছোট করা হচ্ছে। এর দায় রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রে সংশ্লিষ্ট দফতর ও কর্তাগণ কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না।
পার্বত্য চট্টগ্রাম সমিতি, ঢাকা’র সভাপতি এ এইচ এম ফারুক, সিনিয়র সহ সভাপতি মিতায়ন চাকমা এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন ভূইয়া এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সংগঠনের পক্ষে যৌথ বিবৃতিতে প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে তারা বলেন- অসৎ ও অযোগ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভয়ারণ্য হিসেবে কেন পার্বত্য চট্টগ্রামকে বেঁচে নেয়া হবে? বরং বহু জনজাতির মিলনমেলা বিশেষায়িত পার্বত্য চট্টগ্রামের সুশাসন ও সরকারি সেবা নিশ্চিত করার জন্য সৎ ও দক্ষ এবং মেধাবী কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রয়োজন। এভাবে অসৎ কর্মকর্তা কর্মচারীদের পার্বত্য চট্টগ্রামে পদায়নের মাধ্যমে এই জনপদকে পরিকল্পিতভাবে পিছিয়ে রাখা হচ্ছে।
এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযুক্ত সরকারি চাকরিজীবীদের পার্বত্য চট্টগ্রামে বদলি বা পদায়ন না করতে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমিতি, ঢাকা’র পক্ষ থেকে সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামকে সমতলের সঙ্গে সমানতালে এগিয়ে নিতে সৎ ও যোগ্য এবং মেধাবী কর্মকর্তাদের পদায়ন করতে, মেধাবীদের পাহাড়ের প্রতি আকৃষ্ট করতে, আগ্রহী করতে প্রণোদনা বা পুরস্কারের ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ করেছেন।
ভবিষ্যতে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত বা অভিযুক্ত কোনো কর্মকর্তাকে শাস্তিমূলক পদায়ন হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামে বদলি করলে পার্বত্য চট্টগ্রাম বাসী কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে বলেও হুশিয়ার করেন।
প্রসঙ্গত, মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয়া সে সহকারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বান্দরবান পার্বত্য জেলায় বদলি করা হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরেরের প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। ২৩ জুলাই মো. মনিরুজ্জামান খানকে বদলি করে প্রজ্ঞাপন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। এর আগেও এমন অনেক শাস্তিমূলক বদলি ঘটনা পার্বত্য চট্টগ্রামে ঘটেছে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।