Apan Desh | আপন দেশ

‘মনে হয় হাত পাও ছিড়ি যায়’

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০৯:২৮, ৯ জানুয়ারি ২০২৫

‘মনে হয় হাত পাও ছিড়ি যায়’

ছবি : আপন দেশ

‘ভ্যানোত চড়িয়্যা শিরশির করি ঠান্ডা বাতাস গাওয়োত নাগবের নাগছে। মনে হয় হাত পাও ছিড়ি যায়’-এভাবেই বলছিলেন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গার রিকশা-ভ্যানচালক মজিবর মিয়া। 

কনকনে ঠান্ডা আর সঙ্গে হিমেল বাতাসের দাপটে কাবু হয়ে পরেছে উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা কুড়িগ্রামের মানুষ। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক কাজকর্ম। তাপমাত্রা নিম্নগামী হওয়ায় জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা।  নিদারুন কষ্টে রয়েছেন ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, তিস্তা ও ধরলা নদী তীরবর্তী, চরাঞ্চলের খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ।

আকাশে মেঘ থাকায় দুদিন ধরে সূর্যের দেখা মিলছে না। কাজের সন্ধানে ঘরের বাইরে যেতে পারছেন না শ্রমজীবিরা। চরাঞ্চলে বসবাসকারী অধিকাংশ মানুষের প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্র না থাকায় কষ্টে পড়েছেন তারা। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন অনেকেই।

বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সকাল ৬টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ৮-১২ কি.মি.। আর্দ্রতা ৯৯ শতাংশ। গতকাল বুধবার (৮ জানুয়ারি) একই সময় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এতে ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে জেলার তাপমাত্রা কমেছে ৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসব তথ্য জানান রাজারহাট আবহাওয়া অফিস কর্তৃপক্ষ।

রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, তাপমাত্রা নিম্নগামী হচ্ছে। আরও নিম্নগামী হয়ে ৪-৫ দিনের মধ্যে জেলা জুড়ে শৈত্য প্রবাহ বয়ে যেতে পারে। আকাশে মেঘ থাকায় গত ২৪ ঘন্টায় সূর্যের দেখা মেলেনি। সে-সঙ্গে উত্তরীয় হিমেল হাওয়ায় দূর্ভোগ বেড়েছে মানুষের।

এ অবস্থায় চরম দূর্ভোগে পরেছেন খেটে-খাওয়া ও  নিম্ন আয়ের মানুষজন। হিমালয় থেকে ধেয়ে আসা হিম বাতাসে শীতল হয়ে পরছে রিকশা চালক, ভ্যানচালক, ঘোড়ার গাড়ি চালক সহ শ্রমজীবী মানুষ।

এদিন সকালে ভ্যানে ভাড়া নিয়ে জেল শহরমুখী কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গার মজিবর মিয়া (৫০)। তিনি বলেন, ভ্যানোত চড়িয়্যা শিরশির করি ঠান্ডা বাতাস গাওয়োত নাগবের নাগছে। মনে হয় হাত পাও ছিড়ি যায়। মনটা চায় না গাড়ি চালাং। না চালালেই খাইম কী?

একই দিন রিকশা নিয়ে বের হয়েছেন ঘোগাদহের ইউনিয়নের রিকশা চালক আব্দুল মালেক (৫২)। তিনি বলেন, ঠান্ডা বেশী হওয়ায় রাস্তা ঘাটে মানুষ কম। এক ঘন্টা হয়ে গেইল এল্যাও ভাড়া মিলিল না। তার মইদ্যে দুই দিন ধরি সূর্য উটে না। খাটি খাওয়া মাইনষের সোগ দিকে মরণ।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, শীতার্ত মানুষের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে শীতবস্ত্র কেনার জন্য ৪৯ লাখ টাকা ও ১২ হাজার পিস কম্বল উপজেলা সমূহে বিতরন করা হয়েছে। আরও ৫ হাজার কম্বল মজুদ রয়েছে তা বিতরণ করা হবে।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

Advertisement

জনপ্রিয়