 
										লাঞ্ছিত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই ওরফে কানু (৭৮)।
অবশেষে নিরাপত্তাহীনতায় বাড়ি ছেড়েছেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে লাঞ্ছিত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই ওরফে কানু (৭৮)।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলেই তিনি কুমিল্লা থেকে ফেনীতে চলে যান। এদিকে, বীর মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বইছে সমালোচনা ঝড়।
বাড়ি ছাড়ার বিষয়ে আব্দুল হাই বলেন, তিনি এখন ফেনীতে ছেলের সঙ্গে অবস্থান করছেন। প্রশাসন নিরাপত্তা নিশ্চিত করলে চৌদ্দগ্রামের বাড়িতে ফিরবেন তিনি।
ঘটনার বর্ণনায় আব্দুল হাই বলেন, রোববার দুপুরে ওষুধ কিনতে বাড়ির কাছে বাজারে গিয়েছিলেন। এ সময় স্থানীয় জামায়াত কর্মী আবুল হাসেমের নেতৃত্বে ১০-১২ জন তাকে ধরে জুতার মালা পরিয়ে দ্রুত এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেয়।
আব্দুল হাইয়ের স্ত্রী রেহানা বেগম বলেন, গতকালের ঘটনায় আত্মসম্মানে আঘাত পেয়ে এলাকা ছাড়েন তার স্বামী। মূলত জামায়াত নেতা হোসেন মজুমদারের নেতৃত্বে নিযার্তন করা হয় তাকে।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর দুইদফা তাদের বাড়িতে হামলা হয়। হামলাকারীরা তাদের এলাকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য হুমকি দিয়েছিল। আওয়ামী লীগ করার কারণেই তাদের বাড়িতে হামলা হয় বলে দাবি করেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় জামায়াতের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। প্রবাসী আবুল হাসেম আমাদের দলের কেউ না। তবে সমর্থক বা অনুসারী হলেও হতে পারে। এ বিষয়ে খোঁজ নেয়া হচ্ছে।
চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি এটিএম আক্তারুজ্জামান বলেন, ঘটনার পর ভিডিও ফুটেজ দেখে ৭/৮ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে জড়িতদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশের একাধিক টিম। তবে ঘটনার পর থেকে জড়িতদের কেউই এলাকায় নেই।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সফিউল আহমেদ বাবুল বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কানু আওয়ামী লীগ করেও বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা মামলা-হামলার শিকার হয়েছেন। কারাগারে গেছেন। তার ভুলক্রটি থাকলে আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার সুযোগ ছিল।
তিনি আরও বলেন, এভাবে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে প্রকাশ্যে জুতার মালা পড়িয়ে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদ জানানোর ভাষা জানা নেই। আমরা সরকারকে বলবো ১২ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে। না হয় সারাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নামবে।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহমত উল্লাহ বলেন, মিডিয়ায় খবর পেয়ে আমরা ওনার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছি। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুর সাথেও কথা হয়েছে। উনার সাথে যা ঘটেছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত। তাকে আইনি সহায়তা দেয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছি।
আপন দেশ/এসএমএস
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































