Apan Desh | আপন দেশ

‘সেদিন জাফরুল্লাহকে কাঁদতে দেখেছি’

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১:১০, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

‘সেদিন জাফরুল্লাহকে কাঁদতে দেখেছি’

ছবি: সংগৃহীত

ডা. জাফরুল্লাহ আজীবন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ থেকে কখনো বিচ্যুত হননি। একজন মানবতাবাদী ছিলেন এবং তার জীবনকে সাধারণ মানুষের কল্যাণে নিবেদিত করেছিলেন। তার সমগ্র জীবন অনুসরণীয়। 

'বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নাগরিক স্মরণসভা আয়োজন কমিটি' আয়োজিত স্মরণসভায় এ মন্তব্য করেছেন বক্তারা। সোমবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এ সভার আয়োজন করা হয়।

সভা থেকে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নামে চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান তারা।

চট্টগ্রামের জনস্বাস্থ্য অধিকার সংরক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী কর্তৃক প্রণীত ওষুধ নীতির কল্যাণে বাংলাদেশের মানুষ সুলভ মূল্যে ওষুধ কিনতে পারছে।

তিনি বলেন, অনেকেই বিদেশে চিকিৎসার জন্য যান, কিন্তু ডা. জাফরুল্লাহ তার চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাননি। বরং তিনি আস্থা রেখেছিলেন তার নিজের প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের ওপর, যা ছিল তার দেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ।

চট্টগ্রামে গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসান মারুফ রুমি বলেন, ডা. জাফরুল্লাহর প্রয়াণের পর দেশের রাজনীতিতে অভিভাবকের জায়গা শূন্য হয়ে গেছে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের নেফ্রোলজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ডা. ইমরান বিন ইউনুস বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ তার ওষুধ নীতিতে ওষুধের মূল্য নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগীদের শোষণ থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এরশাদের স্বৈরাচারি শাসনের পতনের পর গণতান্ত্রিক সরকারের শাসন ব্যবস্থা এই মূল্য নিয়ন্ত্রণ শিথিল করা হয়।

ডা. জাফরুল্লাহর স্ত্রী ও নারীপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরিন হক বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন বলে গর্ববোধ করলেও তার কিছু আফসোসও ছিল।

তিনি বলেন, জাফরুল্লাহ যখন গণস্বাস্থ্য ডায়ালাইসিস সেন্টারে ডায়ালাইসিস নিচ্ছিলেন, তখন একজন রিকশাচালকের বোন হাসিনা বেগমও তার বিছানার পাশে ডায়ালাইসিস নিচ্ছিলেন। তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে আপনি আপনার ডায়ালাইসিসের পরবর্তী সেশনের জন্য কবে আসবেন। উত্তরে হাসিনা বলেছিলেন, তিনি জানেন না তার ভাই কখন তার ডায়ালাইসিসের জন্য টাকার ব্যবস্থা করতে পারবেন।

শিরিন বলেন, আমি সেদিন জাফরুল্লাহকে ডায়ালাইসিসের পরে কাঁদতে দেখেছি।

ডা. জাফরুল্লাহকে উদ্ধৃত করে শিরিন হক বললেন, কেন যুদ্ধ করেছিলাম যদি হাসিনারা ডায়ালাইসিস সুবিধা না-ই পায়।

মুক্তিযোদ্ধা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক বলেন, ডা. জাফরুল্লাহকে বিভিন্নভাবে শাসকদের হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ৩৩টি মানহানির মামলা করা হয়েছে। এমনকি তার বিরুদ্ধে মাছ চুরির মামলাও হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক হায়াত হোসেন বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ ছিলেন এ দেশে নারী ক্ষমতায়নের পথিকৃৎ।

স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম আই ইনফার্মারি অ্যান্ড ট্রেনিং কমপ্লেক্সের ম্যানেজিং ট্রাস্টি অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন।

আপন দেশ/এবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

Advertisement

জনপ্রিয়