ছবি : আপন দেশ
যৌন নিপীড়নসহা নানাভাবে হেনস্তার শিকার নারী ক্রীড়াবিদরা আস্তে আস্তে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক জাহানারা আলমের এক সাক্ষাৎকারই তাদের মুখ খোলার সুযোগ করে দিয়েছে। আরেক সাবেক অধিনায়ক রুমানা আহমেদ ও তারকা শ্যুটার কামরুন নাহার নাহার কলির পর এবার মুখ খুলেছেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার রেশমা আক্তার আদুরি।
যিনি ২০০৭ সালে বাংলাদেশে নারী ক্রিকেটের জাগরণে ভূমিকা রেখেছেন। বর্তমানে কোচিং পেশায় নিযুক্ত আদুরি একটি জাতীয় পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন বিসিবির নারী বিভাগে যত পুরুষ কাজ করেছেন, তাদের শতকরা ৮০ ভাগই মেয়েদের উত্ত্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, বিসিবির নারী বিভাগের প্রধান মনোয়ার আনিস খান মিনু ম্যাডাম চলে যাওয়ার পর বিসিবির নারী বিভাগে যত পুরুষ কাজ করেছেন, সেটি বিভাগীয় প্রধান থেকে শুরু করে ইনচার্জ এবং অন্যান্য দায়িত্বে থাকা পুরুষরা—তাদের শতকরা ৮০ ভাগই মেয়েদের উত্ত্যক্ত করেছেন।
আদুরি বলেন, নানা সময়ে কুপ্রস্তাব দেয়া থেকে শুরু করে যতভাবে ‘অ্যাবিউজ’ করা যায়, তারা সেটি করেছেন। এবং জাতীয় দলের শতকরা ৯৯ ভাগ ক্রিকেটারই এসবের শিকার হয়েছেন। আমি নাম ধরে ধরে বলে দিই। বিসিবির সাবেক পরিচালক ও নারী বিভাগের প্রধান আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ স্যারের আমল থেকে শুরু করে এ বিভাগে যত পুরুষ এসেছেন, তাদের বেশির ভাগই মেয়েদের কুপ্রস্তাব দিয়েছেন।
তিনি বলেন, জাতীয় দল একটি মেয়ের স্বপ্ন। অত দূর যেতে যে পরিমাণ সংগ্রাম করতে হয়, সেটি শুধু সে মেয়েই জানে। ওই পর্যায়ে যাওয়ার পর যখন কুপ্রস্তাব পায়, তখন মুখবুঝে সহ্য করা ছাড়া আর কোনো রাস্তা থাকে না। কারণ ওরা জানে, প্রতিবাদ করা মানে কষ্ট করে অর্জিত অবস্থান থেকে ওদের সরিয়ে দেয়া হবে। আমার জাতীয় দলের ক্যারিয়ার খুব দীর্ঘ ছিল না। তবে আমি খুব অল্প বয়সেই কোচিংয়ের সঙ্গে যুক্ত হই।
আরও পড়ুন<<>>সৌদি আরবে ব্রোঞ্জ জিতল বাংলাদেশের ইকরা
সাবেক এ ক্রিকেটার বলেন, দীর্ঘদিন নানা পর্যায়ের মেয়েদের কোচিং করানোর কিংবা ওদের পথ দেখানোর অভিজ্ঞতা থেকে জানি কতজনের সঙ্গে কত কিছু হয়ে গেছে। কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারেনি। শুনলে অবাক হয়ে যাবেন, সামান্য প্রতিবাদেও মেয়েদের ওপর কত বড় শাস্তির খড়গ নেমে আসে।
আদুরি বলেন, কক্সবাজারে হওয়া একটি ক্যাম্পের সময়কার কথাই বলি। খাবারের মান নিয়ে মৃদু প্রতিবাদ করেছিল লতা মণ্ডল। তাতেই ওকে ২০ দিনের জন্য সাসপেন্ড করে দিয়ে অন্যদের বার্তা দেওয়া হয় যে ওখানে থাকতে হলে মুখ বন্ধ রাখতে হবে। কাজটি করেছিলেন নারী দলের তখনকার ম্যানেজার। উনার নাম এ মুহূর্তে আমার মনে পড়ছে না। শুধু এটা মনে পড়ছে যে উনি একসময় নায়ক সালমান শাহর শ্বশুর (শফিকুল হক হীরা) ছিলেন। সামান্য খাবারের কথা বলায় এত কিছু! এবার বুঝুন যৌন হয়রানির মতো গুরুতর বিষয় নিয়ে মেয়েরা মুখ খুলতে চায় না কেন। তাদের মধ্যে জাহানারা নানা জায়গায় অভিযোগ করে প্রতিকার পাওয়ার চেষ্টা কম করেনি। কিন্তু অভিযোগ করার রেশ ধরে ওকে তিলে তিলে মানসিক নির্যাতন করে জাতীয় দল থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য করেছে।
জাহানারা বর্তমান অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন, এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমার জানা মতে জ্যোতির বিরুদ্ধে অভিযোগ শতভাগ সত্যি।
আপন দেশ/ জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































