
বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা দলের অধিনায়ক
হংকংকে উড়িয়ে শুরু করলেও শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে এশিয়া কাপের সুপার ফোরের টিকিট নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয় বাংলাদেশ শিবিরে। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারিয়ে আশা বাঁচিয়ে রাখে লাল সবুজ দল। তবে সামনে চলে আসে সমীকরণ। আফগান-লঙ্কা ম্যাচের ফলের ওপর নির্ভর করছিল টাইগারদের সুপার ফোর ভাগ্য। অবশেষে আফগানিস্তানকে হারিয়ে বাংলাদেশকে নিয়েই সুপার ফোর নিশ্চিত করেছে শ্রীলঙ্কা।
তবে উচ্ছ্বাসে বুঁদ থাকার সুযোগ খুব একটা নেই। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সে লঙ্কানদের বিপক্ষে এশিয়া কাপের সুপার ফোর পর্বের লড়াই শুরু করতে যাচ্ছে টাইগাররা। গ্রুপ পর্বে দুই দলের লড়াইয়ে বাংলাদেশকে বেশ সহজেই হারিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। এদিন লিটন দাসরা নামবেন নতুন ফলাফলের আশায়। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হবে ম্যাচটি। দ্বৈরথ ভুলে একদিনের জন্য শ্রীলঙ্কার সমর্থক বনে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে সে লঙ্কানরাই এখন আবার এশিয়া কাপের সুপার ফোরে প্রথম বাধার নাম। বন্ধুত্ব সরিয়ে আবার ফেরাতে হচ্ছে_ লড়াইয়ের তেজ।
কয়েক বছর ধরে প্রায় নিয়মিতই দেখা হচ্ছে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার। আর সে ম্যাচগুলোর উত্তেজনা ও নানা ঘটনাপ্রবাহ ইদানীং বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা লড়াইটাকে এশিয়ান ক্রিকেটের অন্যতম আকর্ষণীয় দ্বৈরথও বানিয়ে তুলেছে। গত জুলাইয়েই শ্রীলঙ্কার মাটিতে গিয়ে তাদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে এসেছিল বাংলাদেশ। এবার এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বে যদিও বাংলাদেশ হেরে যায় শ্রীলঙ্কার কাছে। কী কাকতাল, তারপর বাংলাদেশের ভাগ্যও চলে গিয়েছিল লঙ্কানদের হাতে। শ্রীলঙ্কা অবশ্য নিরাশ করেনি বাংলাদেশকে, গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারিয়ে তারা সুপার ফোরে উঠেছে বাংলাদেশকে নিয়েই। এক দিন আগে বাংলাদেশের সমর্থকেরা শ্রীলঙ্কার জয় প্রার্থনা করেছেন। তবে এক দিন পরই আবার তাদের হার চাইবেন সে সমর্থকেরা, কারণ সুপার ফোরে আবার মুখোমুখি হচ্ছে দুই দল ।
এখন পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২১ টি-টোয়েন্টি খেলেছে বাংলাদেশ। জিতেছে মাত্র ৮টিতে। তবে সাম্প্রতিক হিসাবটা আবার অন্য রকম শেষ পাঁচ ম্যাচে তিনটিতেই জিতেছে বাংলাদেশ। এদিকে দ্বৈরথ কিংবা বন্ধুত্ব কোনোটাতেই আপাতত ঢুকতে রাজী নয় শ্রীলঙ্কা। তাদের ব্যাটিং কোচ থিলান কান্দাম্বি বললেন, শুধু ক্রিকেটীয় দিক বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশকে দারুণ দল ভেবেই খেলতে নামবেন তারা।
তিনি বলছেন, 'আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে গত তিন-চার মাসেই চার- পাঁচটা ম্যাচ খেলেছি। আমরা তাদের শক্তি ও দুর্বলতা জানি। আমি নিশ্চিত, আমাদের ছেলেরা ভালো লড়াই করবে। তারা খুব ভালো দল। আশা করছি, আমাদের ছেলেরা তাদের বিপক্ষে পরিকল্পনা ঠিকঠাক বাস্তবায়ন করতে পারবে।
আরও পড়ুন<<>>ভারতকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় বাংলাদেশের
গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলা আফগানিস্তানের বিদায়ে এশিয়া কাপের ১৭তম আসরের ফাইনালে ওঠা এবং প্রথমবারের মতো শিরোপা জয়ে সুযোগ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের। ফাইনালের দৌড়ে টিকে থাকতে হলে সুপার ফোরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের জয় পাওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ পর্বে দুই পয়েন্ট কম নিয়ে খেলতে নামবে টাইগাররা। গ্রুপ পর্বের পয়েন্ট সুপার ফোরে বিবেচ্য হবে। সাম্প্রতিক সময়ে লংকানদের সম্পর্কে ভালো ধারণা আছে টাইগারদের। মাত্র দুই মাস আগে শ্রীলঙ্কার মাটিতে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ। কিন্তু এবারের আসরে গ্রুপ পর্বে এ শ্রীলঙ্কার কাছেই ৬ উইকেটে হেরেছিল লিটন দাসের দল। কিন্তু ঐ হারের পরও আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরেনি বাংলাদেশের। দলের ব্যাটার জাকের আলী অনিক বলেছিলেন, শ্রীলঙ্কার কাছে হারের পর দল চাপে পড়লেও আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেরা ক্রিকেট খেলে দুর্দান্ত জয়ে সুপার ফোরের দৌড়ে টিকে থাকে বাংলাদেশ ।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত ২১ ম্যাচের মোকাবেলায় বাংলাদেশ জিতেছে ৮টি, শ্রীলঙ্কা ১৩টি। এশিয়া কাপে ১৮ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। এরমধ্যে লংকানদের জয় ১৫টিতে এবং হার তিনটিতে। তবে এশিয়া কাপে টি-টোয়েন্টিতে সংস্করণে বাংলাদেশের বিপক্ষে তিনবারের মোকাবিলায় দু'বার জয় ও একবার হেরেছে লংঙ্কানরা।
সংক্ষিপ্ত ভার্সনে প্রথমবার অনুষ্ঠিত ২০১৬ এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২৩ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ। ২০২২ সালে এশিয়ার কাপ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে দুই উইকেটে হারিয়ে প্রতিশোধ নিয়েছিল শ্রীলঙ্কানরা। আসরে শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল লঙ্কনরা। শনিবার বাংলাদেশ কিছুটা হলেও এগিয়ে থাকবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
কারণ ৪৮ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে তীব্র গরম আবহাওয়ায় দু'টি ম্যাচ খেলতে হয়েছে শ্রীলঙ্কাকে পাশাপাশি টাইগারদের বিপক্ষে খেলতে আবু ধাবি থেকে দুবাই যেতে হবে লঙ্কানদের। পক্ষান্তরে, গ্রুপ পর্বে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের পর চার দিন বিশ্রাম পায় বাংলাদেশ। এছাড়াও আরও একটি বিষয় হল, সুপার ফোরে দুবাইয়ের উইকেটে খেলতে হবে বাংলাদেশকে। গ্রুপ পর্বে সব ম্যাচই আবু ধাবির ধীর গতির উইকেটে খেলেছে লিটন-জাকেররা। এখন দেখার বিষয়, দুবাইয়ের স্পোর্টিং উইকেটে কীভাবে নিজেদের মানিয়ে নেয় টাইগাররা।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।