
শহীদ মিনারে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সমাবেশে দলে উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বক্তব্য দিচ্ছেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, বাহাত্তরের সংবিধান একটা দলের ছিল। যে সংবিধান আরেকটা দেশ থেকে পাস হয়ে এসেছে। এ মুজিববাদী সংবিধান আর বাংলাদেশে থাকতে দিতে পারি না। আমরা আজ এ মঞ্চে মুজিববাদী সংবিধান ভেঙে চুরে শেষ করে দিয়ে নতুন সংবিধান চাইতে এসেছি।
এনসিপির এ শীর্ষ নেতা বলেন, আমাদের লড়াই ২৪ এর নয়। বিডিআর হত্যাকাণ্ড যারা ঘটিয়েছে, ১৩ সালে শাপলা চত্বরে যারা নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের বিচার চাইতে এসেছি। এ বাংলাদেশে যেমন জঙ্গিবাদ মেনে নেব না, তেমনি জঙ্গি নাটকও মেনে নেব না। এ বাংলাদেশে সিভিল সোসাইটি নামে সব দালালকে আর মেনে নেব না।
এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, এলাকায় এলাকায় এনসিপির নেতাকর্মীদের বাধা দেয়া হচ্ছে। কোনো নেতাকর্মীর ওপর হামলা হলে তা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করা হবে।
আরও পড়ুন>>>এনসিপির ‘নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার’ ঘোষণা
তিনি বলেন, আমরা জানি এলাকায় এলাকায় আপনাদের বাধা দেয়া হচ্ছে। এনসিপির কর্মীদের বাধা দেয়া হচ্ছে। আমরা দ্ব্যর্থহীনকণ্ঠে বলতে চাই, টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, রূপসা থেকে পাথুরিয়া; এনসিপির একজন নেতাকর্মীর দিকে যদি কেউ চোখ তুলে তাকায় আমরা তা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করব।’
জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম সমন্বয়কারী আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেছেন, গত ১ বছরে আমরা কী পেলাম। আমরা না পেয়েছি মত প্রকাশের স্বাধীনতা, না পেয়েছি ন্যায়বিচার। আমাদের মানবিক অধিকারও পাইনি। তাই আজকে ক্ষমা চেয়েছি সে শহীদ ভাই-বোনের কাছে। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে নির্যাতন, গুম, খুনের শিকার হওয়া মানুষের কাছে। কিন্তু আমরা থেমে থাকব না আমরা লড়ব। এনসিপি লড়বে।
তিনি আরও বলেন, আমরা কথা দিয়েছিলাম আমরা এমন একটি রাষ্ট্র গড়ে তুলব, যে রাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় সুবিধার প্রাপ্তিতে কোনো ভোট দিতে হবে না। এমন একটি রাষ্ট্র গড়ে তোলার কথা দিয়েছিলাম, যেখানে মত প্রকাশ করার অধিকার থাকবে। যে রাষ্ট্রে কাউকে হুমকি-ধমকি দেওয়া হবে না। যে রাষ্ট্রে থাকবে না চাঁদাবাজ ও দখলদারি। থাকবে না রাজনৈতিক হানাহানি, বঞ্চনা করার চিত্র।
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা বলেছেন, প্রায় প্রত্যেকটা জায়গায় শুনেছি চিকিৎসা ব্যবস্থা আপনাদের সঙ্গে কিভাবে বৈষম্য করছে। আপনারা কিভাবে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। আমরা এমন চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তুলব যাতে টাকার অভাবে কেউ চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত না হয়।
ডা. তাসনিম জারা বলেন, আমরা এমন রাজনীতি করব যাতে বাংলাদেশের প্রত্যেকটা নাগরিক রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে পারে। দেশবর্তী জুলাই পর্যন্ত আমরা প্রত্যেকটা জেলায় দেখে এসেছি তরুণরা কতখানি উচ্ছ্বাস, কতখানি উদ্দীপনা নিয়ে আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। তারা ভাবছেন দেশের কথা, তারা স্বপ্ন দেখছেন দেশ পরিবর্তন হবে।
তিনি বলেন, আমরা এমন রাজনীতি করব যাতে করে নারীরা সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে পারে। ভোলার সুমাইয়া যখন রাজনীতি করতে আসে তখন তার বাবা-মার চিন্তা করতে হবে না রাজনীতিতে আমার মেয়েটা নিরাপদ থাকবে কিনা। সুমাইয়া রাজনীতি করতে পারবে, দেশের জন্য সক্রিয়ভাবে রাজনীতি দেশ গঠনে অংশগ্রহণ করতে পারবে। আমরা এমন রাজনীতি করব যেখানে আমাদের প্রবাসী ভাইয়েরা যারা দেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে চান। যারা নির্বাচনে ভোট দিতে চান। তাদের সেই ব্যবস্থা আমরা নিশ্চিত করবো।
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহবায়ক সামান্তা শারমিন বলেছেন, বাংলাদেশের ইয়াজিদ শেখ হাসিনার বিচার এ বাংলার মাটিতে হবে। এ দেশে এনে তার বিচার করা হবে। আমাদের এই গণঅভ্যুত্থান তৈরি হয়েছিল শিক্ষাব্যবস্থা ও চাকরির বিষয়ে। শেখ হাসিনা এ দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ও চাকরির ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে।
তিনি বলেন, বিদ্যমান রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন একটি দলের কাজ নয়। আমরা আপনাদের নিয়ে আজ যুদ্ধের ডাক দিয়ে বলতে চাই— বাংলাদেশ শিক্ষা হবে সর্বজনীন। শিক্ষা হবে প্রতিটি মানুষের। সবার জন্য এ শিক্ষাকে আমরা সর্বজনীন করবো।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।