
এস এম শাহরিয়ার আলম সাম্য।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এস এম শাহরিয়ার আলম সাম্য। তাকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে, সে বর্ণনা দিয়েছে পুলিশ। বুধবার (১৪ মে) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বর্ণনা দিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শাহরিয়ার গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দুই বন্ধুকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন। রমনা কালীমন্দিরের উত্তর পাশে বটগাছসংলগ্ন পুরোনো ফোয়ারার কাছে আসার পর অজ্ঞাতনামা ১০–১২ জন তাদের মোটরসাইকেল দিয়ে শাহরিয়ারের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন।
পুলিশ বলেছে, এ নিয়ে তাদের সঙ্গে ‘দুষ্কৃতকারীদের’ বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। তর্ক–বিতর্কের একপর্যায়ে ‘দুষ্কৃতকারীরা’ শাহরিয়ার ও তার বন্ধুদের ইট দিয়ে আঘাত করে আহত করেন। একজন শাহরিয়ারকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ডান পায়ের ঊরুর পেছন দিকে আঘাত করেন। এতে তিনি রক্তাক্ত হয়ে জখম অবস্থায় মাটিতে পড়ে যান। এ সময় ‘দুষ্কৃতকারীরা’ শাহরিয়ার ও তার বন্ধুদের বিভিন্ন ধরনের ভয় দেখানোর পাশাপাশি হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে শাহরিয়ারকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ ঘটনায় শাহরিয়ারের বড় ভাই এস এ এম শরিফুল আলম শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন। থানা-পুলিশ দ্রুততম সময়ের মধ্যে হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতরে অভিযান চালায়। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত তিনজন আসামি তামিম, সম্রাট ও পলাশের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। আজ বুধবার সকালে শেরেবাংলা নগর থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতর করা হয়। গ্রেফতার তিনজন হলেন তামিম হাওলাদার (৩০), সম্রাট মল্লিক (২৮) ও পলাশ সরদার (৩০)।
শাহরিয়ারের সঙ্গে থাকা বন্ধু আশরাফুল আলম রাফি বলেন, মঙ্গলবার মধ্যরাতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঘোরার পর একটি মোটরসাইকেলে করে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য (২৫) ও তার দুই বন্ধু। পথে অন্য একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে তাদের মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগে। ওই মোটরসাইকেলের দু-তিন আরোহী ও তাদের সঙ্গে থাকা আরও দু-তিনটি মোটরসাইকেলের আরোহীসহ মোট ১০-১২ জনের সঙ্গে শাহরিয়ারদের তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তিরা তাদের মারতে শুরু করেন। তারাও আত্মরক্ষার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। এর মধ্যেই শাহরিয়ারকে ছুরিকাঘাত করা হয়।
আশরাফুল বলেন, ৬-৭ বছর তারা একসঙ্গে পড়াশোনা করেছেন। তাদের সম্পর্কটা শুধু বন্ধু নয়, ভাইয়ের মতো ছিল।
শাহরিয়ার আলম হত্যার ঘটনায় গতকাল রাতে ও আজ দিনভর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ক্যাম্পাসে শাহরিয়ারের জানাজা হয়েছে। এ হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরই মধ্যে ঘটনা তদন্তে আজ সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ হত্যার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেছে ছাত্রদল।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।