Apan Desh | আপন দেশ

সহপাঠীর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ইবির দুই শিক্ষার্থীর

ইবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:০৩, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সহপাঠীর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ইবির দুই শিক্ষার্থীর

ছবি: আপন দেশ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক ছাত্রীর বিরুদ্ধে বান্ধবীর ছবি ব্যবহার করে ভুয়া ফেসবুক একাউন্ট খুলে একাধিক শিক্ষার্থীকে যৌন হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপিড়ন বিরোধী কমিটির কাছে সামাজিক ও মানসিক হেনস্তার বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী হলেন- ইংরেজি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের সুরাইয়া ইয়াসমিন শোভা এবং মার্কেটিং বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের নাফিজ আহমেদ। আর অভিযুক্ত শিক্ষার্থী হলেন, লোকপ্রশাসন বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের জান্নাতুল মাওয়া স্নেহা।

পৃথক দুই অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, তারা দুজন তাদের সহপাঠী জান্নাতুল মাওয়া স্নেহার দ্বারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যৌন হেনস্তার  শিকার হয়েছেন। তাদের নাম ও ছবি বিকৃতভাবে ব্যবহার করে বিভিন্ন অসঙ্গতিপূর্ণ, অপমানজনক ও কুরুচিপূর্ণ কনটেন্ট প্রকাশ ও প্রচার করা হচ্ছে। যা তাদের ব্যক্তিগত মর্যাদা, সামাজিক অবস্থান ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর গুরুতর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় তদন্ত সাপেক্ষে দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা।

আরওপড়ুন<<>>শাবিতে ‘শর্তে’ মিলেছে রাজনীতি

জানতে চাইলে সুরাইয়া ইয়াসমিন শোভা বলেন, আমার ওপর ওর (স্নেহা) কোনো ব্যক্তিগত আক্রোশ থাকার কথা না। কারণ আমাদের বিভাগ আলাদা। ও ওর বিভাগের কয়েকজনের সঙ্গে এ কাজ করেছে, যারা আমার খুব ক্লোজ ফ্রেন্ড। আমি একদিন ওদের ক্লাসে গেছিলাম, তখন ও আমার সঙ্গে টুকটাক কথাও বলে। আমরা শুরুর দিকে ওকেই সন্দেহ করেছিলাম। যেদিন আমি ওদের ক্লাসে যাই সেদিনই আমার নাম, ছবি ব্যবহার করে কুরুচিপূর্ণ পোস্ট করা হয়। আমার মনে হয়েছে, ও ‘সেক্সুয়ালি ফ্রাস্ট্রেটেড’ একটা মেয়ে। আমাদের ফ্রেন্ড সার্কেলের সবাইই ক্যাম্পাসে মোটামুটি পরিচিত মুখ যেটা ওর নাই। এ জায়গা থেকে ওর হিংসা বা কষ্ট হতে পারে।

স্নেহার ব্যাপারে কীভাবে নিশ্চিত হলেন এমন প্রশ্নের জবাবে শোভা বলেন, রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) আমরা ওকে থানায় নিয়ে গিয়েছিলাম। ও আমাদের ফোন চেক করতে না দিলেও থানায় একপর্যায়ে ওর ফোন চেক করে আমাদের নামে খোলা ফেইক একাউন্ট (AI) দিয়ে এডিট করা আমাদের এক ফ্রেন্ডের নগ্ন ছবি, সেই অ্যাপ, আমাদের ভাইরাল হওয়া এডিটেড ছবিগুলো পাওয়া গেছে। তখনি আমরা নিশ্চিত হয়ে যাই যে, এসব কাজ স্নেহা করেছে।

তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে আমরা দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা এবং ওর বিভাগের শিক্ষকদের জানানোর পর অস্বীকার করে যে, আইডিটা ও খুলছে- কিন্তু আইডির একসেস অন্য কারো কাছে ছিল, সে এসব করেছে। এটা মোটেও বিশ্বাসযোগ্য কথা না। এমন মানসিক বিকারগস্ত একটা মেয়ের সঙ্গে আমরা নিরাপদবোধ করছি না। আমরা চাই স্নেহাকে ক্যাম্পাস থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হোক।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছাত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যৌন হয়রানি প্রতিরোধকল্পে গঠিত কমিটির আহবায়ক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন বেগম রোকসানা মিলি বলেন, বিষয়টি আমি মৌখিকভাবে রোববার শুনেছি। সে আমার বিভাগেরই ছাত্রী। স্নেহা শুধু আমার বিভাগের ছাত্রীদের সম্পের্কেই বলেনি, অন্য বিভাগও জড়িয়েছে। তবে আজকের লিখিত অভিযোগটি এখনও আমার হাতে এসে পৌঁছায়নি। অভিযোগপত্র হাতে এলে আমি কমিটির বাকি সদস্যদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেব।

আপন দেশ/এমএইচ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়