Apan Desh | আপন দেশ

সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার অপচেষ্টা বাকৃবি প্রশাসনের

বাকৃবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬:২৩, ২৫ মে ২০২৫

আপডেট: ১৬:৪৭, ২৫ মে ২০২৫

সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার অপচেষ্টা বাকৃবি প্রশাসনের

ছবি: আপন দেশ

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) সম্প্রতি পূবালী ব্যাংকের সহযোগিতায় বৃক্ষরোপণ বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদের শিরোনাম পছন্দ না হওয়ায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে উস্কানি দেয়া হচ্ছে। সহযোগী ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ এ উস্কানি দিচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে তার পাঠানো বার্তার স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভাইরাল হওয়া সেই মেসেজে খবরের ছবিসহ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ লিখেছেন, বাকৃবি প্রেস ক্লাব থেকে প্রতিনিয়ত সংবাদ টুইস্ট করে প্রকাশ করে প্রশাসনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে বারবার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।

মঙ্গলবার (২০ মে) বাকৃবি প্রেস ক্লাব থেকে ‘আমরা গাছ কাটি, আবার রোপণও করি: বাকৃবি উপাচার্য’ শিরোনামে একটি খবর প্রকাশিত হয়। ওই খবরে বাকৃবি উপাচার্যের বক্তব্যে লেখা হয়েছে, আমরা গাছ কাটি, আবার গাছ রোপণও করি। যে গাছগুলো পরিপক্ব হয়ে যায়, সেগুলো না কাটলে কখনও কখনও উন্নয়ন কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটে। তখন বাধ্য হয়ে সেগুলো কাটতে হয়। তবে ফলজ, বনজসহ সব ধরনের নতুন গাছও রোপণ করি।

খবরটি অনলাইনে প্রকাশের পর ওই দিনই সহযোগী ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা মোবাইলে ফোন করে বলেন, গাছ কি পূবালী ব্যাংক লাগায়? পূবালী ব্যাংক সহযোগিতা করছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গাছ লাগাবে। তুমি (সাংবাদিক) দেখো তো প্রেস ক্লাবে নিউজগুলো কেমনভাবে করছ?

তিনি সাংবাদিককে ধমক দিয়ে আরও বলেন, তুমি (সাংবাদিক) এ কথা কীভাবে লিখলে যে এটা ভিসি স্যার বলেছে, যে আমরা গাছ লাগাই, গাছ কাটি!

আরওপড়ুন<<>>রাজশাহী ইউনিভার্সিটি অ্যাডুকেশন ক্লাবের সভাপতি সেঁজুতি, সম্পাদক তটিনী

ভাইরাল হওয়া মেসেজে তিনি আরও লিখেছেন, কিছুদিন আগে ইলিয়াস ভাইয়ের (সহকারী প্রক্টর) ব্যাপারেও তারা বিতর্কিত সংবাদ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়কে হেয় করেছে। একটি কমিটিও হয়েছে, কিন্তু সেই কমিটির রিপোর্ট কোনো আলোর মুখ দেখেনি।

এ বিষয়ে গণমাধ্যম থেকে জানা যায়, গত ৪ মার্চ বাকৃবি প্রেস ক্লাব থেকে প্রচারিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) অর্থায়নে পরিচালিত একটি গবেষণায় অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস হোসেন (সহকারী প্রক্টর) বিশ্ববিদ্যালয়ে মিনি প্রসেসিং প্ল্যান্ট স্থাপনের তথ্য দিলেও ক্যাম্পাসে এমন কোনো প্ল্যান্টের অস্তিত্ব নেই বলে জানা যায়। এ বিষয়ে খবর প্রকাশের পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গবেষণা তথ্য জালিয়াতির বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করতে কোনো তদন্ত কমিটি গঠন না করে সংবাদ প্রকাশের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তদন্ত কমিটি গঠন করে।

এদিকে ভাইরাল হওয়া মেসেজে সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. ইলিয়াস হোসেন লিখেছেন, আমার চাকরি কাল ও ছাত্রজীবন নিয়ে কেউ কোনো খারাপ কথা বলতে পারবে না। কিন্তু প্রশাসনের কাজ করতে গিয়ে সম্মানহানি ও হেয় প্রতিপন্ন হয়েছি বাকৃবি প্রেসক্লাব দ্বারা। আশা করি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত কমিটি সত্য উদঘাটন করে ঘটনার পেছনের গডফাদারদের শনাক্ত করে শাস্তির ব্যবস্থা করবেন। না হলে আমার পরে সোনালী দল, এরপর বর্তমান প্রশাসন, তারপরে আপনি এর শিকার হবেন। সিদ্ধান্ত আপনাদের!!!

এ বিষয়ে ওই ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা দেখি, শুধু গাছ কাটা হয়। কিন্তু গাছ লাগানোর ব্যাপারে তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না। সেখানে আমাদের সম্মানিত উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। গাছ কেন কাটা হয়, সেটি ব্যাখ্যা করেছেন। প্রয়োজনে গাছ কাটলেও তিনি তার দায়িত্ববোধ থেকে আবার গাছ লাগানোর ব্যবস্থা করেছেন। আমি এ বিষয়টিই উপস্থাপন করেছি।

বাকৃবি প্রেস ক্লাবের সদস্যরা বলেন, এ ধরনের তদন্ত কমিটি গঠনের পর সাংবাদিকদের সত্য প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

বিষয়গুলো নিয়ে বাকৃবির সহযোগী ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমরা এত কষ্ট করছি, কিন্তু এর বিনিময়ে যদি ক্রেডিট না পাই তাহলে খারাপ লাগে। তোমরা (সাংবাদিক) শুধু পূবালী ব্যাংকের ক্রেডিট দিলা, বিশ্ববিদ্যালয় অনুমতি না দিলে পূবালী ব্যাংক কিভাবে এ প্রোগ্রাম করতো। টুইস্টেড বলতে আমি অন্য কিছু বুঝাইনি, বুঝিয়েছি প্রশাসনকে যে অ্যাভয়েড করা হয়েছে সেটিকে বুঝিয়েছি। অধ্যাপক ইলিয়াসের পক্ষ নিয়ে মেসেজ দেয়ার কথা জিজ্ঞেস করলে এ বিষয়ে ফোনে কথা বলতে চাননি তিনি।

আপন দেশ/এমএইচ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়