
ফাইল ছবি
উত্তরের চার জেলা লালমনিরহাট, রংপুর, নীলফামারী ও কুড়িগ্রামে তিস্তাপাড়ে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। টানা বর্ষণ আর উজানের পাহাড়ি ঢলে রোববার রাত থেকে তিস্তা নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এ কারণে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) রাতে তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করে এবং মাইকিং করে ঝুঁকিপূর্ণ গ্রামগুলো থেকে মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়। আপন দেশের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য।
সোমবার (৬ অক্টোবর) ভোরে পানি কিছুটা কমলেও সকাল ৬টায় হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানী এলাকায় তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে পানির স্তর ছিল ৫২ দশমিক ২৫ মিটার, যা বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপরে। এর আগে গতকাল রাত ১০টার দিকে পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপরে উঠেছিল। ফলে ব্যারেজ এলাকায় ফ্লাড বাইপাস সড়কের ওপর দিয়েও পানি প্রবাহিত হয়।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, রাতে পানি বিপৎসীমার অনেক ওপরে উঠে গিয়েছিল। ভোরে পানি কমতে শুরু না করলে ব্যারেজ রক্ষায় বাইপাস সড়ক কেটে দিতে হতো। তিস্তার সব গেট খুলে দেয়া হয়েছে। এদিকে, লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার জানান, ব্যারেজ এলাকায় পানি কিছুটা কমলেও ভাটির দিকে পানি বাড়ছে। তিস্তাপাড়ে অন্তত ১ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তবে এখনো কোথাও বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
বন্যায় দেড় শতাধিক চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। রাত থেকে শুরু হওয়া পানির প্রবাহে তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ আমন ধান ও সবজির ক্ষেত। কৃষি কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, পানির স্তর দ্রুত নামতে না পারলে সবজিতে বড় ধরনের ক্ষতি হবে, তবে আমন ধানে তুলনামূলক ক্ষতি কম হবে।
কুড়িগ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, তিস্তাপাড়ে বন্যা দেখা দিলেও ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার ও অন্যান্য নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে আছে।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী জানান, রাতেই ঘরে কোমরসমান পানি উঠে গেছে। অনেকেই খাটে বা বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। গবাদি পশু ও আসবাবপত্র নিয়ে নিরাপদ জায়গায় যেতে হয়েছে। কেউ কেউ জানিয়েছেন, আসবাব ও কৃষিপণ্য পানিতে ভেসে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
রংপুর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, চার জেলায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সবজির খেতে বড় ক্ষতি হতে পারে, তবে তিন–চার দিনের মধ্যে পানি নেমে গেলে আমন ধানে বড় ক্ষতি হবে না।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচএম রকিব হায়দার জানান, রোববার রাতেই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে মানুষকে সরানো হয়েছে। পানিবন্দিদের জন্য শুকনো খাবার ও ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।