Apan Desh | আপন দেশ

চাঁদা না পেয়ে জামায়াত নেতাকে মারধর বৈষম্যবিরোধী নেতার

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:০৬, ৫ জুলাই ২০২৫

চাঁদা না পেয়ে জামায়াত নেতাকে মারধর বৈষম্যবিরোধী নেতার

নিজাম উদ্দিন ও নওশেদ জামাল।

চট্টগ্রামে জামায়াত নেতা ও মেঘনা পেট্রোলিয়ামের এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নওশেদ জামালকে মারধর করে পুলিশে দেয়া হয়েছে। ‘মব’ তৈরি করে জামায়াত নেতাকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করার অভিযোগ উঠেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতার বিরুদ্ধে।

শনিবার (০৫ জুলাই) নগর পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিতভাবে এ অভিযোগ করেন ওই নেতার স্ত্রী রিয়াজুল জান্নাত। অভিযোগে ওই নারী এই ঘটনার পেছনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর কমিটির সদস্যসচিব নিজাম উদ্দিন ও কোতোয়ালি থানা-পুলিশকে দায়ী করছেন।

গত বৃহস্পতিবার নগরের ডবলমুরিং থানাধীন আগ্রাবাদ এলাকায় মেঘনা পেট্রোলিয়াম কার্যালয়ের সামনে থেকে নওশেদ আলমকে ধরে কোতোয়ালি থানা-পুলিশের হাতে সোপর্দ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। পরে তাকে কোতোয়ালির বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

আরও পড়ুন>>>গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দুপক্ষের সংঘর্ষ, ছাত্রদল নেতা নিহত

রিয়াজুল জান্নাত উল্লেখ করেন, তার স্বামী নওশেদ জামাল চট্টগ্রামে মেঘনা পেট্রোলিয়াম এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক পদে থাকার পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীর একজন রুকন। তিনি জামায়াতের বাগমনিরাম দক্ষিণ সাংগঠনিক ওয়ার্ডে সেক্রেটারি পদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। 

তিনি অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে নিজাম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি তার স্বামীর কাছে চাঁদা দাবি করছে। দুই কোটি টাকা চাঁদা না দেয়ায় তার স্বামীকে ফাঁসাতে নানা চক্রান্ত করা হয় বলে অভিযোগ করেন রিয়াজুল জান্নাত।

ওই নারী অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, পতেঙ্গা ইস্টার্ন কেব্‌লস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দপ্তরে বসে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তার স্বামীকে ফাঁসিয়ে দিতে চক্রান্ত করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় আগ্রাবাদে মেঘনা পেট্রোলিয়াম অফিসের উদ্দেশে যাওয়ার সময় পথে ১০-১৫ জন তার স্বামীকে ধরে মারধর ও মব তৈরি করে কোতোয়ালি পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরে তড়িঘড়ি করে পুলিশ তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানার ওসি ও চাঁদাবাজ নিজাম উদ্দিন মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন করেছেন।

রিয়াজুল জান্নাত অভিযোগ করেন, তার স্বামীকে বৈষম্যবিরোধীদের বিভিন্ন মামলার আসামি হিসেবে ফাঁসানোর চেষ্টার পাঁয়তারা করছে অভিযুক্তরা। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ কমিশনারের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর কমিটির সদস্যসচিব নিজাম উদ্দিন বলেন, যিনি পুলিশের কাছে এ অভিযোগ করেছেন, তিনি যদি আমার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির ন্যূনতম কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেন, তাহলে আমি স্বেচ্ছায় নিজেকে আইনের হাতে সোপর্দ করব। প্রয়োজনে আমার নামে একাধিক মামলা হবে। আমার কোনো আপত্তি থাকবে না। আর উনি যদি কোনো প্রমাণ দেখাতে না পারেন, তাহলে এমন অভিযোগের জন্য আমি আইনের আশ্রয় নেব। কারণ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগরের একজন নেতা হিসেবে আমার সম্মানহানির অর্থ পুরো বৈষম্যবিরোধী প্ল্যাটফর্মের সম্মানহানি করা।

কোতোয়ালি থানার ওসি মো. আব্দুল করিম বলেন, টাকা লেনদেনের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে এ ধরনের অভিযোগ কেউ দিয়ে থাকেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

মেঘনা পেট্রোলিয়ামের কয়েকটি সূত্র জানায়, গত বছরের আগস্টে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বে থাকা শ্রমিক লীগের নেতারা বেশির ভাগই কারাগারে যাওয়ার পর শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এর জের ধরে নওশেদ জামালকে ফাঁসানো হয়েছে বলে ধারণা অনেকের।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়