ছবি : সংগৃহীত
ছেলের সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। উত্তীর্ণও হয়েছেন বাবা ইমামুল ইসলাম। তিনি এবার এইচএসসি পরীক্ষাও দিচ্ছেন। ইমামুল ইসলাম নাটোরের বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট থেকে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।
ইমামুল ইসলামের ছেলে আবু রায়হান এসএসসি পাশের পর গত বছর দুবাই পাড়ি জমিয়েছেন। তাদের বাড়ি বাগাতিপাড়ার পাঁকা ইউনিয়নের চকতকিনগর গ্রামে।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) পরীক্ষা শেষে কথা হয় আবু রায়হানের বাবা ইমামুলের সঙ্গে।
ইনামুল জানান, একান্ত ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অভাব-অনটনের কারণে অষ্টম শ্রেণি পাশের পর আর স্কুলে যাওয়া হয়নি। পড়ালেখা ছেড়ে জীবিকার তাগিদে ২৪ বছর আগে তিনি ঢাকায় পাড়ি জমান। সেখানে প্রায় ১৮ বছর গার্মেন্টস শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। ২০১৬ সালে বাড়ি ফিরে জমানো টাকা দিয়ে গ্রামে এসে আমের ব্যবসা শুরু করেন। পাশাপাশি বাড়ির পাশে একটি ছোট্ট মুদির দোকান দেন। কিন্তু বুকের ভেতরে লেখাপড়া করতে না পারার চাপা কষ্ট তাকে পীড়া দিত। লোকলজ্জায় পড়া লেখা হয়ে উঠছিল না।
ইমামুল আরও জানান, সমাজে আর দশটা মানুষের মতো নিজেকে একজন শিক্ষিত মানুষ হিসেবে যেন পরিচয় দিতে পারেন সে উদ্দেশ্যেই পূণরায় লেখাপড়া শুরু করেন। পারিবারিক সিদ্ধান্তে ২০২০ সালে ছেলের সঙ্গে বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের ভোকেশনাল শাখার নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। পরে কারিগরি শাখায় এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। তিনি জিপিএ ৪.৭৯ পান। ছেলে আবু রায়হান পেয়েছিলেন জিপিএ ৪.৮২।
বাবা-ছেলের পরীক্ষায় উত্তীর্ণের পর তৎকালীন ইউএনও-ডিসি তাদের সংবর্ধনা দেন। সে সময় লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলেন বাবা ইমামুল। এ নিয়ে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এবার তিনি একই প্রতিষ্ঠান থেকে কারিগরি বিএমটি শাখার মানব উন্নয়ন ট্রেড থেকে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোসা. শামসুন্নাহার বলেন, ইমামুলের এ আগ্রহে বিনা ফিতে তাকে লেখাপড়ার সুযোগ দেয়া হয়। তার এ আগ্রহকে তিনি সাধুবাদ জানান।
আপন দেশ/এইউ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































