Apan Desh | আপন দেশ

‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা’ শাস্তির মুখোমুখি হবেন 

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১০:৫৬, ২১ এপ্রিল ২০২৪

‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা’ শাস্তির মুখোমুখি হবেন 

ছবি: সংগৃহীত

সারাদেশে প্রায় আট হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। প্রতারণা বা মিথ্যা তথ্য দিয়ে সনদ নেয়ার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এতদিন কোনো ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এবার ঐসব ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে মন্ত্রণালয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে মন্ত্রণালয়। 

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক উপ-সচিব বলেন, কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, দ্রুতই জেলা-উপজেলায় এ তালিকা পাঠানো হবে। তারা যে ভাতা ভোগ করেছেন তা ফেরত আনা হবে। কেউ মারা গেলে তাদের পরিবারের সুবিধাভোগী সদস্যদের এ টাকা ফেরত দিতে হবে। আবার কেউ যদি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার গেজেট ব্যবহার করে যেকোনো সরকারি সুবিধা বা ছেলেমেয়ের চাকরি নিয়ে থাকেন তাও বাতিল করা হবে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় কাজ করছে। দ্রুতই তা বাস্তবায়ন করা হবে। 

এ উপ-সচিব বলেন, অনেকে মুক্তিযোদ্ধা সনদ ফিরে পেতে মামলা করেছেন। এটা আমাদের কাজে একটু বাধা সৃষ্টি করবে। অনেকে উচ্চ আদালতের আদেশ নিয়ে এসেছেন। আমরাও আইনিভাবে বিষয়টি মোকাবেলা করব। 

মন্ত্রণালয়ের গেজেট শাখার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সম্প্রতি ৮ হাজারের মতো গেজেট বাতিল করা হয়।

আইনজীবীরা বলছেন, প্রতারণা বা মিথ্যা তথ্য দিয়ে সরকারি সুবিধা ভোগ করা অপরাধ। আর ফৌজদারি আইনের ৪১৬ ধারা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা না হয়ে মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় দিলে তাও অপরাধ। এছাড়া মিথ্যা তথ্য দেয়ার জন্য ৩ বছরের জেল এবং ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ দেখিয়ে ভাতাসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিলে ৭ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। হতে পারে অর্থদণ্ডও। মন্ত্রণালয় যদি চায় তাহলে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারবে। তবে সংখ্যায় বেশি হওয়ায় সেটা সময় সাপেক্ষ হবে। 

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ভুয়া তথ্য দিয়ে যারা মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন, তারা ফৌজদারি অপরাধ করেছেন। তাদের অবশ্যই শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে। তারা পার পেয়ে গেলে, এমন কাজ অন্যরাও করতে উৎসাহিত হবেন। 

তিনি বলেন, ভুয়াদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা ফেরত এনে তারা অতীতে যত সুবিধা পেয়েছেন সব বাতিল করতে হবে। সন্তানরা চাকরি পেলে তাও বাতিল করতে হবে। আর মুক্তিযুদ্ধ না করেও কীভাবে তারা মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় আসলেন? এর সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরও শাস্তি হওয়া উচিত। এ ধরনের গাফিলতি মোটেও মেনে নেয়া যায় না।

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের শাস্তির বিষয় নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সম্প্রতি বলেছিলেন, ভুয়া প্রমাণ হওয়ায় ৮ হাজার জনকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। আমরা এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মামলা করে তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।  

এ বিষয়ে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির গণমাধ্যমকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে ভুয়া শব্দটি অসম্মানজনক। এতে মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করা হয়েছে। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের শাস্তি নিশ্চিতে মন্ত্রণালয়ের কাজ করতে হবে।

আপন দেশ/এসএমএ

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

Advertisement

জনপ্রিয়