Apan Desh | আপন দেশ

ভারতের সঙ্গে যেসব যুক্তি অনুমোদন হলো রাশিয়ার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:৩৭, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫

আপডেট: ১১:০৫, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫

ভারতের সঙ্গে যেসব যুক্তি অনুমোদন হলো রাশিয়ার

ভ্লাদিমির পুতিন ও নরেন্দ্র মোদি। ছবি : সংগৃহীত

দুই দিনের সফরে ভারতে আসছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার আগেই রাশিয়ার পার্লামেন্ট ভারতের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ এক সামরিক চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে। এই চুক্তি অনুযায়ী, দুই দেশের সামরিক বাহিনী একে-অপরকে লজিস্টিক্যাল সাপোর্ট দেবে, অর্থাৎ এক দেশের বাহিনী অপর দেশে গিয়ে সামরিক পরিকাঠামো ব্যবহার করতে পারবে।

বৃহস্পতিবার (০৪ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

বিবিসির তথ্যমতে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আহ্বানে ২৩তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার দিল্লি আসছেন ভ্লাদিমির পুতিন। এই সফরে সামরিক, বাণিজ্য ও খনিজ তেলের বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

এ ছাড়া পুতিনের সফর শুরুর ঠিক আগেই তার মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে রাশিয়া কতটা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে, তা নির্ভর করছে ভারত কতটা এগিয়ে আসতে চায়, তার ওপরে।

কী আছে ‘রেলোস’ চুক্তিতে?

দুই দেশের মধ্যে এই ‘রেসিপ্রোকাল এক্সচেঞ্জ অফ লজিস্টিক সাপোর্ট’ বা ‘রেলোস’ চুক্তি অবশ্য সই হয়ে গিয়েছিল গত ১৮ ফেব্রুয়ারি। তবে সেটি মঙ্গলবার রাশিয়ার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ‘স্টেট ড্যুমা’র অনুমোদন পেল।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, গত সপ্তাহে চুক্তিটি ‘ড্যুমা’র কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্তিন। ‘স্টেট ড্যুমা’র স্পিকার ভ্যাচেস্লাভ ভোলোদিন সভার শুরুতে তার ভাষণে ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ককে ‘সার্বিক এবং কৌশলগত’ বলে বর্ণনা করেন এবং এই সম্পর্ককে যে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয় তার দেশ, সেটাও উল্লেখ করেন।

‘যে চুক্তির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে, তা পারস্পরিক বোঝাপড়া আরও বাড়াবে এবং নিঃসন্দেহে আমাদের সম্পর্ক আরও উন্নত করবে।’

ভারত আর রাশিয়ার মধ্যে যে রেসিপ্রোকাল এক্সচেঞ্জ অফ লজিস্টিক সাপোর্ট বা ‘রেলোস’ চুক্তি হয়েছে, তা মূলত এক দেশ অপর দেশটিতে সামরিক বাহিনীর সদস্য, সরঞ্জাম, যুদ্ধ জাহাজ, সামরিক বিমান পাঠানোর কার্যপদ্ধতি।

শুধু যে বাহিনীর সদস্যদের অথবা সরঞ্জাম একটি দেশ অপর দেশে পাঠাতে পারবে ‘রেলোস’ চুক্তি অনুযায়ী, তা নয়। অপর দেশটিতে গিয়ে সেখানকার সামরিক পরিকাঠামোও ব্যবহার করা যাবে।

যৌথ মহড়া, প্রশিক্ষণ, মানবিক সহায়তা এবং ত্রাণ ও উদ্ধার কাজের ক্ষেত্রে এই চুক্তি অনুযায়ী সামরিক সহায়তা করবে একে অপরকে। ‘স্টেট ড্যুমা’র ওয়েবসাইটে রাশিয়ার মন্ত্রিসভাকে উদ্ধৃত করে লেখা হয়েছে যে একটি দেশ অপর দেশের আকাশসীমা এবং বন্দর সামরিক প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারবে।

রাশিয়ার ফার্স্ট ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার ডেনিস মান্তুরোভ সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, ভারতের সঙ্গে তার দেশের সামরিক সহযোগিতা একটি কৌশল। এর পরের ধাপে কারিগরি এবং শিল্পোদ্যোগ পর্যায়ে গভীর সহযোগিতার দিকে এগোবে দুটি দেশ।

ওই সাক্ষাৎকারে মন্তুরোভ বলেছেন, দুটি দেশের মধ্যে সামরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে মূল স্তম্ভগুলো হলো যৌথভাবে উদ্ভাবন ও উৎপাদন এবং স্থানীয় পরিবেশের সঙ্গে সরঞ্জামগুলোকে খাপ খাইয়ে নেওয়ার পদ্ধতি।

তিনি আরও বলেছেন, ভারতের মোট সামরিক সরঞ্জামের মধ্যে ৩০ শতাংশেরও বেশি মস্কো দিয়ে থাকে এবং গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এটাই চলে আসছে। আমাদের দুটি দেশের মধ্যে সামরিক-কারিগরি সহযোগিতার কৌশলগত কারণে গুরুত্বপূর্ণ। এই সহযোগিতা প্রতি বছরই আরও উন্নত এবং শক্তিশালী হচ্ছে।

সংবাদ সংস্থা রয়টার্স বলছে, দিল্লি সফরকালে পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় সুখোই-ফিফটি সেভেন যুদ্ধবিমান ভারতকে দেওয়া নিয়েও আলোচনা হতে পারে। এগুলো সব থেকে আধুনিক যুদ্ধবিমান।

আরও পড়ুন : ভেনিজুয়েলায় কি সত্যিই হামলা শুরু করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প?

ভারতের যে ২৯টি যুদ্ধবিমানের স্কোয়াড্রন আছে, তার বেশিরভাগই রাশিয়ার তৈরি সুখোই-থার্টি। এখন তারা আরও আধুনিক সুখোই-ফিফটি সেভেনও দিতে চাইছে ভারতকে, এমনটাই দুইজন ভারতীয় কর্মকর্তার সূত্র উদ্ধৃত করে লিখেছে রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, রাশিয়ার সঙ্গে এই সপ্তাহের আলোচনায় উঠে আসতে আরও কয়েকটি এস-ফোর হান্ড্রেড আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার কথাও। গত সপ্তাহে ভারতের প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিং এই ইঙ্গিত দিয়েছেন।

আপন দেশ/এনএম

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

Advertisement

জনপ্রিয়