
ছবি: সংগৃহীত
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর তার প্রশাসনের গৃহীত নানা নীতি ও কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শহরে ‘নো কিংস’ নামের এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় সময় শনিবার বেলা ১১টা থেকে নিউইয়র্ক সিটিতে শুরু হওয়া বিক্ষোভের আয়োজকেরা জানিয়েছেন, দিনভর দেশজুড়ে এ বিক্ষোভ চলবে।
নিউইয়র্ক ছাড়াও ওয়াশিংটন, লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে শুরু করে ছোট শহরগুলোতেও বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে জনতা। ট্রাম্প প্রশাসনের কর্তৃত্ববাদী নীতির বিরুদ্ধে এ প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন রাজনীতিক, শিল্পী, সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে প্রবীণরাও।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি আয়োজক কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ২ হাজার ৫০০-এর বেশি স্থানে তাদের বিক্ষোভের পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে লাখো মানুষ অংশ নেবে। তাদের দাবি, ট্রাম্পের ‘স্বৈরাচারী মনোভাব ও কর্তৃত্ববাদী শাসন’ রুখতেই এ বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়েছে। তাদের ওয়েবসাইটে লেখা, প্রেসিডেন্ট মনে করেন, তিনিই সর্বেসর্বা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে কোনো রাজা নেই এবং আমরা বিশৃঙ্খলা, দুর্নীতি ও নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে সব সময় কথা বলে যাব।
বিক্ষোভের ঢেউ ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে ইউরোপেও। সংহতি জানাতে জার্মানির বার্লিন, স্পেনের মাদ্রিদ এবং ইতালির রোমেও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অন্যদিকে, ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা দাবি করেছেন, এ বিক্ষোভে বামপন্থি সংগঠন অ্যান্টিফার সদস্যরা জড়িত। তবে এর নির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কয়েকটি রিপাবলিকান অঙ্গরাজ্যে ন্যাশনাল গার্ডকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। টেক্সাস ও ভার্জিনিয়ার গভর্নররা ইতোমধ্যে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন, যদিও সামরিক উপস্থিতি কতটা দৃশ্যমান হবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়।
টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট বিবিসিকে বলেছেন, ‘অ্যান্টিফা-সম্পৃক্ত বিক্ষোভের পরিকল্পনার কারণে’ অস্টিনে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। তার এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে রাজ্যের ডেমোক্রেটিক নেতা জিন উ বলেন, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দমন করতে সশস্ত্র বাহিনী পাঠানো রাজা ও স্বৈরশাসকদের কাজ; আর গ্রেগ অ্যাবট এখন প্রমাণ করলেন, তিনিও তাদের একজন।
আরও পড়ুন<<>>দোহা বৈঠকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত পাকিস্তান-আফগানিস্তান
একইভাবে ভার্জিনিয়ার গভর্নর গ্লেন ইয়ংকিনও রাজ্যের ন্যাশনাল গার্ড সক্রিয় করার নির্দেশ দিয়েছেন।
বিক্ষোভের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হচ্ছে ওয়াশিংটন ডিসিতে, যেখানে সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স প্রধান বক্তা। পাশাপাশি লস অ্যাঞ্জেলসেও বড় সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
এদিকে, বিক্ষোভের আগে ফক্স নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, তারা আমাকে রাজা বলে ডাকছে, কিন্তু আমি কোনো রাজা নই।
তবে তার সমর্থক রিপাবলিকানদের কেউ কেউ এসব বিক্ষোভকে ‘হেইট আমেরিকা র্যালি’ বলে উল্লেখ করেছেন। কানসাসের সিনেটর রজার মার্শাল বলেন, আমাদের হয়তো ন্যাশনাল গার্ড নামাতে হবে। আশা করি, বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ থাকবে। তবে আমার সন্দেহ আছে।
‘নো কিংস’ আন্দোলনের বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন খ্যাতনামা কয়েকজন তারকাও। তাদের মধ্যে রয়েছেন অভিনেত্রী জেন ফন্ডা, কেরি ওয়াশিংটন, সংগীতশিল্পী জন লেজেন্ড, অভিনেতা অ্যালান কামিং ও জন লেগুইজামো।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।