ছবি: সংগৃহীত
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি গণহত্যার শিকার ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভাষণ প্রদানকালে তিনি এ আহবান জানান। এ সময় ছবি প্রদর্শন করে গাজার করুণ চিত্র তুলে ধরেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট।
রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ‘ফিলিস্তিন প্রশ্নের শান্তিপূর্ণ সমাধান ও দুই-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়ন’ বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ভাষণ দেন। ভাষণ দেয়ার সময় গাজায় ক্ষুধার্তদের একটি ছবি প্রদর্শন করেন তিনি।
তিনি বলেন, গাজায় যে গণহত্যা চলছে, যেখানে ৬৫ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ গেছে। তা নির্মমভাবে অব্যাহত আছে। যার সামান্য বিবেকও আছে, সে কখনোই এ হত্যাযজ্ঞকে মেনে নিতে পারে না, আর চুপ করে থাকতে পারে না এমন গণহত্যার মুখে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, এসব পদক্ষেপ দুই-রাষ্ট্র সমাধানের বাস্তবায়ন দ্রুত করবে।
তিনি পুনরায় জোর দিয়ে বলেন, এখন গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা প্রয়োজন, মানবিক সহায়তা নির্বিঘ্ন প্রবেশ নিশ্চিত করতে হবে এবং ইসরায়েলকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করতে হবে।
এ সম্মেলনে ফ্রান্সসহ কয়েকটি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার ঘোষণা দেয়। ভাষণে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রসহ একদল দেশের ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্তকে ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেন এরদোয়ান।
এদিকে ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান যুদ্ধ ও মানবিক বিপর্যয় নিয়ে মুসলিম বিশ্বের একাধিক নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন<<>>গাজায় শিগগির যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে: ট্রাম্প
বৈঠক শেষে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও বেশ কয়েকটি আরব ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের নেতাদের মধ্যে গাজার পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক ছিল ‘খুবই ফলপ্রসূ’।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, একটি যৌথ ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হবে। বৈঠকের ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করলেও বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।
ন্যাটো সদস্য তুরস্ক গাজায় ইসরায়েলের হামলার কড়া সমালোচনা করেছে এবং এটিকে গণহত্যা আখ্যা দিয়েছে। দেশটি ইসরায়েলের সঙ্গে সবধরনের বাণিজ্য বাতিল করেছে। একইসঙ্গে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানিয়েছে।
১৯৫৫ সালে সাধারণ পরিষদের ১০ম অধিবেশন থেকে ব্রাজিল সবসময় প্রথম বক্তা হিসেবে সাধারণ বিতর্কে বক্তব্য দিয়ে আসছে, শুধু ১৯৮৩ ও ১৯৮৪ সাল ব্যতীত। ব্রাজিলের পর স্বাগতিক দেশ যুক্তরাষ্ট্র বক্তব্য রাখবে। প্রথম দিনের চতুর্থ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখবেন এরদোয়ান।
নিউইয়র্কের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে তিনি বলেছিলেন, এ বছরের সাধারণ পরিষদকে আগের অধিবেশনগুলো থেকে যে দিক দিয়ে আলাদা করে তা হলো—অনেক দেশ এবার ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার ঘোষণা দেবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করি ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার এসব সিদ্ধান্ত দুই-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নে নতুন গতি আনবে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।
