Apan Desh | আপন দেশ

তিস্তায় পানি বাড়ায় ভারতে রেড অ্যালার্ট, সতর্কবার্তা বাংলাদেশেও

আন্তর্জাতিক ডেস্ক    

প্রকাশিত: ১৯:৩৮, ৩১ মে ২০২৫

আপডেট: ১৯:৪২, ৩১ মে ২০২৫

তিস্তায় পানি বাড়ায় ভারতে রেড অ্যালার্ট, সতর্কবার্তা বাংলাদেশেও

তিস্তা ব্যারেজ

কয়েকদিনের টানা ভারী বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানির স্তর বাড়তে থাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করেছে ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর (আইএমডি)। শনিবার (৩১ মে) রেড অ্যালার্ট জারি করে প্রতিষ্ঠানটি।

আইএমডি জানায়, বৃষ্টিপাত ও নদীতে পানি বাড়ায় সিকিমের মাঙ্গান, গিয়ালশিং ও সোরেং জেলায় বন্যা ও ভূমিধস হতে পারে।

সিকিম হিমালয়ের চিতামু হ্রদ থেকে সৃষ্টি নদী তিস্তা ভারতের সীমানা পেরিয়ে নীলফামারীর কালীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ফলে তিস্তার উজানে বন্যা দেখা দিলে তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়ে। বাংলাদেশের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলেছে, রংপুর বিভাগে তিস্তার সঙ্গে ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি আগামী তিন দিন বাড়তে পারে এবং তিস্তার পানি বিপৎসীমায় প্রবাহিত হতে পারে।

ভারতের পত্রিকা ইকনোমিক টাইমসের প্রতিবেদন মতে, গ্যাংটকের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এক জরুরি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানান, জনগণকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। পরিস্থিতির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সময়োপযোগী হালনাগাদ তথ্য প্রদান অব্যাহত রাখবে।

জেলা প্রশাসকের বার্তায় বলা হয়েছে, গ্যাংটক জেলার আওতাধীন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সমস্ত নোডাল কর্মকর্তাদের সতর্কতায় থাকতে এবং তিস্তার এ অঞ্চলে নিযুক্ত মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে।

অপরদিকে, উজানের পাহাড়ি ঢলে রংপুরে তিস্তা নদীর পানি বাড়ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, আগামী তিন দিন বাড়বে তিস্তার পানি। ফলে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী ও রংপুরে তিস্তা পাড়ের হাজারো মানুষের মধ্যে বন্যা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

আরওপড়ুন<<>>বিএসএফ দফায় দফায় আন্তর্জাতিক সীমানা আইন লঙ্ঘন করছে

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, উজানে ভারতের সিকিম ও উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টি হওয়ায় তিস্তার পানির স্তর হঠাৎ করে বাড়তে শুরু করেছে।

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার জানান, পানি এখনও বিপদসীমার নিচে থাকলেও তারা সতর্ক অবস্থানে আছেন। প্রতি ঘণ্টায় পানির গতি-প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আপাতত সরাসরি বন্যার আশঙ্কা নেই, তবে পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টে যেতে পারে বলেও জানান তিনি।

এদিকে রংপুরের গঙ্গাচড়া, পীরগাছা ও কাউনিয়া উপজেলায় তিস্তার তীরবর্তী কিছু এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন-বন্যার আশঙ্কায় পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস পূর্বপ্রস্তুতি নিচ্ছে।

রংপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, নিম্নচাপের কারণে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু রংপুর বিভাগের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ফলে রংপুরে দুদিন ধরে হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হচ্ছে। শুক্রবার (৩০ মে) দিন-রাতে রংপুর বিভাগে মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয়া হলেও দিনে ভারী বৃষ্টি হয়নি। এ ধরনের আবহাওয়া ১ জুন পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে বলে জানিয়েছে রংপুর আবহাওয়া কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান।

আদিতমারী উপজেলার চর গোবর্ধন এলাকার বাসিন্দা ফজলার রহমান বলেন, বন্যা এলে সবকিছু শেষ হয়ে যায়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মাঠের ফসল, গবাদি পশু, বাড়ির জিনিস সব ভেসে যায়। এবারও ভয়ে আছি, অনেকেই উঠোনে পলিথিন টানিয়ে মালপত্র রাখছে।

উল্লেখ্য, তিস্তার পানি বাড়লে সবার আগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল। তিস্তাপাড়ে প্রায় ৯৫টি চর রয়েছে। যেখানে হাজার হাজার মানুষ বসবাস করে। এসব এলাকার বেশিরভাগ ঘরবাড়ি নদীর চরজমিতে নিচু হওয়ায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সহজেই প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে।
 
আপন দেশ/এমএইচ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়