Apan Desh | আপন দেশ

শেষ হলো জাকসুর ভোট গ্রহণ

জবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮:০২, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

শেষ হলো জাকসুর ভোট গ্রহণ

ছবি: আপন দেশ

শেষ হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ভোট গ্রহণ। তবে কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে ছাত্রদল প্যানেলের ভোট বর্জন ও ছাত্র ইউনিয়ন (একাংশ) সমর্থিত প্যানেলের নির্বাচনে অনাস্থা জ্ঞাপনের বিষয়টি ক্যাম্পাসে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আট কেন্দ্রের ৮১০টি বুথে ডাকসু ও হল সংসদে শিক্ষার্থীদের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি হলের ২২৪টি বুথে ভোটগ্রহণ হয়। এর মধ্যে ১০টি ছাত্রী হল ও ১১টি ছাত্র হল।

নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১১ হাজার ৭৪৭ জন। বিভিন্ন পদে মোট ১৭৮ জন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এরমধ্যে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৯ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে ৬ জন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ১০ জন। 

বিকেল ৫টায় ভোট গ্রহণ শেষ হয়। এরপরই বেশিরভাগ কেন্দ্রের গেট বন্ধ করতে দেখা যায়।

আরও পড়ুন>>>জাকসু নির্বাচন বর্জন ছাত্রদলের

এর আগে, বিকেল ৪টার দিকে এসে কারচুপিসহ নানা অনিয়মের কথা তোলে ভোট বর্জন করে ছাত্রদল প্যানেল। ছাত্রদলের সাদী, বৈশাখী, ইকরা ও সাজ্জাদ প্যানেলের পক্ষ থেকে ভোট বর্জনের ঘোষণার পাশাপাশি ৯টি অসঙ্গতির কথাও তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি বামপন্থি ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়ন সমর্থিত প্যানেলও নির্বাচন কমিশন ও ভোট কার্যক্রমে অনাস্থা জানিয়েছে। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। 
 
শিবিরের প্যানেল থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে, ছাত্রদল ও যুবদলের কর্মীরা ক্যাম্পাসের আশপাশে অবস্থান নিয়েছে। এতে করে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে প্যানেলটির নেতাকর্মীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।  
 
অন্যদিকে নির্বাচনের নানা অব্যবস্থাপনার ঘটনায় ভোট গ্রহণের শেষদিকে এসে বিএনপিপন্থি শিক্ষকরাও নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। এসব ঘটনায় পরে ক্যাম্পাসে অবস্থানকারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা যায়। 
 
এছাড়া দিনভর ঝড়-বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে আলো না থাকায় অন্ধকারেই ভোট দিতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তেমন কোনো প্রস্তুতি ছিল না। এছাড়া অমোচনীয় কালি ব্যবহার, একটি আবাসিক হলের ব্যালটে প্রার্থীদের নাম না থাকারও অভিযোগ পাওয়া যায়। পাশাপাশি প্রচুর জাল ভোট পড়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
 
এবার জাকসুর মোট প্রার্থীর ২৫ শতাংশ ছাত্রী, বাকি ৭৫ শতাংশই ছাত্র। ভিপি পদে কোনো নারী শিক্ষার্থী প্রার্থী হননি। জিএস পদে ১৫ জন প্রার্থীর মধ্যে মেয়ে দুইজন। আর চারটি পদে কোনো মেয়ে প্রার্থীই নেই। সবগুলো হল সংসদ মিলিয়ে মোট প্রার্থীর ২৪ দশমিক ৪ শতাংশ ছাত্রী। আর মেয়েদের হলগুলোর পাঁচটিতে ১৫ পদে প্রার্থীই নেই।

নির্বাচনে বাম, শিবির, ছাত্রদল ও স্বতন্ত্রদের সমর্থিত মিলিয়ে সর্বমোট আটটি প্যানেল অংশ নেয়। ছাত্রদল থেকে ভিপি ও জিএস পদে লড়েছেন যথাক্রমে শেখ সাদী হাসান ও তানজিলা হোসেন বৈশাখী।
 
বাগাছাসের ‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’র নেতৃত্ব দেন আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল ও আবু তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম।
 
‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন’ প্যানেলে আব্দুর রশিদ জিতু ভিপি এবং মো. শাকিল আলীর জিএস পদে নেতৃত্ব দেন।
 
ইসলামী ছাত্রশিবির ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ নামে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। তাদের ভিপি প্রার্থী আরিফুল্লাহ আদিব ও জিএস মাজহারুল ইসলাম।
 
ছাত্র ইউনিয়নের ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলে জিএস পদে শরণ এহসান, এজিএস (পুরুষ) পদে নুর এ তামীম স্রোত এবং এজিএস (নারী) পদে ফারিয়া জামান নিকি লড়েন। এ প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী অমর্ত্য রায় জনের প্রার্থিতা বাতিল করেন আদালত।
 
ছাত্র ইউনিয়ন-ছাত্রফ্রন্টের ‘সংশপ্তক পর্যদে’ জিএস পদে জাহিদুল ইসলাম ঈমন, এজিএস-নারী পদে সোহাগী সামিয়া জান্নাতুল ফেরদৌস লড়াই করছেন।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

Advertisement

জনপ্রিয়