
ছবি : আপন দেশ
স্থলপথে বাংলাদেশ থেকে নির্দিষ্ট কিছু পাটজাত পণ্য ও দড়ি রফতানিতে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত। তবে মুম্বাইয়ের নভোসেবা সমুদ্র বন্দর দিয়ে এসব পণ্য আমদানির সুযোগ রাখা হয়েছে। সোমবার (১১ আগস্ট) ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিএফটিআই) -এর এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা জারি করা হয়। খবর এনডিটিভি
নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা পণ্যগুলো হচ্ছে পাটের বস্তা ও ব্যাগ, পাটের তৈরি ব্লিসড ও আনব্লিসড বোনা কাপড়, পাটের সুতা কর্ডেজ দড়ি, পাটের সুতা কর্ডেজ দড়ি এবং তার। সোমবার থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে।
ডিএফটিআইয়ের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এসব পণ্য কেবলমাত্র মহারাষ্ট্রের নাভা শেবা সমুদ্রবন্দর দিয়ে রফতানির অনুমতি দেয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কোনো স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের পণ্য আমদানি অনুমোদিত নয়। বাংলাদেশ থেকে ভারতের নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের আমদানি নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে।
এ নিয়ে বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে ছয় মাসে চার দফায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল ভারত। গত ১৭ মে স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক, কাঠের আসবাব, সুতা ও সুতার উপজাত, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয় প্রভৃতি পণ্য আমদানিতে বিধিনিষেধ দেয়। এর পর গত ৯ এপ্রিল ভারতের কলকাতা বিমানবন্দর ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের পণ্য রফতানির সুবিধা প্রত্যাহার করে ভারত।
গত ২৭ জুন বাংলাদেশ থেকে কাঁচা পাট, পাটের রোল, পাটের সুতা ও বিশেষ ধরনের কাপড় স্থলপথে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। সময় ও খরচ সাশ্রয়ের সুবিধায় বাংলাদেশের এ ধরনের পণ্যের ৯৯ শতাংশই স্থলবন্দর দিয়ে রফতানি হয়ে থাকে। এ সুবিধায় দীর্ঘ দিন ধরে বাংলাদেশের পাট ও পাটপণ্যের সবচেয়ে বড় রফতানি বাজার ভারত।
আরও পড়ুন<<>>‘যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক কমানো বাংলাদেশের জন্য সুসংবাদ’
জানতে চাইলে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুর রউফ বলেন, ভারত এরকম অশুল্ক বাধা তৈরি করতে পারে এমন আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল তাদের। সে বিবেচনায় কিছু প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে পলিথিনের পরিবর্তে পাটের চাহিদা বাড়ানোর বেশ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সাধারণ পাটপণ্য রফতানি না করে মূল্য সংযোজিত দামি পণ্য পৃথিবীর যে কোনো দেশে যাতে রফতানি হতে পারে সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ভারতের এ সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য ‘সাপে বর' হবে।
বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন ও রফতানিকারক সংগঠনের সভাপতি এবং ক্রিয়েশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদুল করিম মুন্না বলেন, বাংলাদেশের পাটপণ্যের ভারতীয় আমদানিকারকরা মূলত কলকাতাভিত্তিক। স্থলপথে সহজেই কলকাতায় পণ্য পৌছানোর সুবিধা দু’দেশের জন্যই লাভজনক ছিল। তিন মাস আগে কিছু পণ্যে স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর সমুদ্রপথে মুম্বাইয়ের নভোসেবা বন্দরে পণ্য পৌছানো এবং সেখান থেকে আবার কলকাতায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা হয়। এতে আমদানিকারকদের পরিবহন ব্যয় বাড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ গুণ। সময়ও লাগছে দ্বিগুনের মত। নতুন করে আরও চার পণ্য এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনার কারণে রফতানি বাজার হিসেবে ভারতকে আর ধরে রাখা বাণিজ্যিকভাবে সম্ভব হবে না।
তিনিও মনে করেন, ইউরোপ এবং আমেরিকার বাজার লক্ষ্য করে পণ্যে বৈচিত্র্য আনা, মান উন্নয়ন এবং মূল্য সযোজন করার পরিকল্পনা নেয়া গেলে কাঁচাপাট রফনির এ প্রতিবন্ধকতা পাট শিল্পের জন্য দীর্ঘমেয়াদে সুফল বয়ে আনতে পারে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।