ছবি : আপন দেশ
কৃষিতে পোকা দমনের জনপ্রিয় ও পরিবেশবান্ধব উপায় হলো ‘পার্চিং’ পদ্ধতি। পার্চিং ফসলের জমিতে ক্ষতিকর পোকামাকড় দমন করার একটি পরিবেশবান্ধব ও কম খরচের কৌশল। যেখানে পাখিদের বসার জন্য গাছের ডাল, বাঁশের কঞ্চি বা খুঁটি পুঁতে দেয়া হয়। পাখিরা সে উঁচু স্থানে বসে ক্ষতিকর পোকা ধরে খেয়ে ফেলে। ফলে কীটনাশকের ব্যবহার কম হয়, উৎপাদন খরচ বাঁচে এবং পরিবেশ দূষণমুক্ত থাকে।
‘পার্চিং’ পদ্ধতিতে ডালপালা পোঁতা ধান বা অন্যান্য ফসলের ক্ষেতে পাখির বসার সুবিধার্থে গাছের শুকনো ডাল, বাঁশের কঞ্চি, বা ‘টি’ আকৃতির খুঁটি পুঁতে দেয়া হয়। পাখিরা এ খুঁটি বা ডালে বসে ক্ষেতের ক্ষতিকর পোকা যেমন মাজরা পোকা, পাতা মোড়ানো পোকা ইত্যাদি ধরে খায়। ডেড পার্চিং হলো শুকনো ডাল বা বাঁশের কঞ্চি ব্যবহার করা এবং লাইভ পার্চিং-এ ধইঞ্চা বা জীবন্ত গাছ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের আজমতপুর এলাকার কৃষক মো. মোস্তফা ফকির ও আব্দুস সাত্তার জানায়, কীটনাশকের ব্যবহার না থাকায় এ পদ্ধতি পরিবেশবান্ধব ও ফসলের কোনো ক্ষতি হয় না। বিশেষ করে ধান, পাট, সবজি ও ডাল জাতীয় ফসলে পার্চিং পদ্ধতির ব্যবহার উল্লেখযোগ্য।
আরও পড়ুন<<>>সীমান্তে গরু চোরাকারবারী আটক
কীটনাশকের খরচ না লাগায় এটি সাশ্রয়ী ও উৎপাদন খরচ কম হয়। পাখির বিষ্ঠা জমিতে পড়ে জৈব সার হিসেবে কাজ করে, যা মাটির উর্বরতা বাড়ায়। কম খরচে পোকার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষা পায় ও ফলন বাড়ে। দিন দিন কৃষকদের মাঝে -এপদ্ধতির গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে। রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহারের ক্ষতিকর প্রভাব এড়াতে পার্চিং এখন টেকসই কৃষি ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে।
মাঠ পর্যায়ে কর্মরত উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান জানান, পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে প্রকৃতিতে উপকারী পাখির সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, যা প্রাকৃতিক ভাবে ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে। ফলে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকে এবং বিষমুক্ত নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন সম্ভব হয়। কীটনাশকের নির্ভরতা কমাতে পার্চিং পদ্ধতি এখন কৃষকবান্ধব এক সফল উদ্ভাবন।
গাজীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম খান আপন দেশকে বলেন, পোকা দমনে শুধুমাত্র কীটনাশকেই ভরসা করায় কৃষকদের উৎপাদনের খরচ বৃদ্ধি পায়। পার্চিং পরিবেশ বান্ধব এবং প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে বালাই নিয়ন্ত্রণের একটি কার্যকর পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে কৃষকের খরচ নাই বললেই চলে এবং বালাই দমনে উপকারী। তাছাড়া এ-পদ্ধতি বালাইনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। সে সঙ্গে জমিতে জৈব সার হিসেবে পাখির বিষ্ঠা পড়ে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি হচ্ছে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































