
ছবি: আপন দেশ
রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে আকস্মিক ঝড়ে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ দুর্ঘটনায় লংগদুতে এক নারী ও দুই শিশুসহ মোট ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া নানিয়ারচরে নৌকা ডুবে ২ জন কলেজ ছাত্র নিখোঁজ রয়েছেন।
বুুধবার (০১ অক্টোবর) দিনব্যাপী অভিযানে ডুবে যাওয়া এক শিশু ও এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরী দল।
মঙ্গলবার দিনগত রাতে এ দুর্ঘটনা ঘটে রাঙামাটির লংগদু উপজেলায়। স্থানীয় বাসিন্দা আছর উদ্দিন ও আরজ আলীর পরিবার একটি ছোট জালের নৌকা নিয়ে গুলশাখালী আত্মীয়ের বাড়ি থেকে মাইনীমুখের এফআইডিসি এলাকায় ফিরছিলেন। বাড়ি ফেরার পথে কাপ্তাই হ্রদে (চেঙ্গী নদী) আকস্মিক ঝড়ো বাতাসের কবলে পড়ে নৌকাটি ডুবে যায়।
নদীতে ডুবে মারা যাওয়ারা হলেন, আছর উদ্দিনের স্ত্রী শিরিনা বেগম (৪০), তার সন্তান মাসুম (৫) ও আরজ আলীর শিশু সন্তান রানা (৭)।
এছাড়া ওইদিন রাতে একই সময়ে লংগদুর কাট্টলী বিল এলাকায় তিনটি মাছ ধরার নৌকা উল্টে দুর্ঘটনার শিকার ৬ জেলেকে জীবিত উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস ও স্হানীয়রা।
আরও পড়ুন>>>কাপ্তাই হ্রদে নৌকা ডুবি : এখনো নিখোঁজ ১
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দিনগত রাতে আকস্মিক ঝড়ো বাতাসে রাঙামাটির লংগদু উপজেলার গুলশাখালী থেকে নৌকায় করে মাইনীমুখের এফআইডিসি এলাকায় বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দা আছর উদ্দিন ও আরজ আলীর পরিবার। নৌকায় থাকা ৫ জনের মধ্যে দুই শিশু, এক নারী নদীতে ডুবে নিখোঁজ হয়। বাকি দুজন আছর উদ্দিন ও সালমা সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হন।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষক মো. সোহেল কবির জানান, সন্ধ্যায় এফআইডিসি এলাকার ৫জন একটি ছোট জালের নৌকা নিয়ে গুলশাখালী আত্মীয় বাড়ি বেড়াতে যায়। বেড়ানো শেষে বাড়ি ফেরার পথে হ্রদে আকস্মিক ঝড়ে নৌকা ডুবে যায়। নৌকায় একজন পুরুষ, দুজন নারী ও দুজন শিশু ছিল। খবর পেয়ে আমরা রাতে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে এক মহিলাকে উদ্ধার করি ও রানা নামে এক শিশুকে কচুরিপানার ভেতর মৃত অবস্থায় পাই। ওই নৌকায় থাকা শিরিনা বেগম ও তার ছেলে মাসুমকে (৫)’কে রাতে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বুধবার সকালে শিরিনা বেগম ও দুপুরে শিশু মাসুমের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
লংগদু ফায়ার সার্ভিসের (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন চৌধুরী জানান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন কমল বিষয়টি আমাদের জানিয়েছেন। আমাদের ডুবরি দল রাঙামাটি থেকে সকালে এসে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। নিখোঁজ নারী ও শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
লংগদু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহাঙ্গীর হোসাইন জানান, গুলশাখালী এলাকায় নৌকা ডুবে দুই শিশু ও এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে নানিয়ারচর উপজেলায় মঙ্গলবার দিনগত রাতে জগনাথ মন্দির এলাকায় পূজা দেখে ফিরার পথে ঝড়ের কবলে পড়ে নৌকা ডুবে কলেজ ছাত্র ডিলিশন চাকমা (১৮) ও জিপেন দেওয়ান (১৮) নিখোঁজ রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সন্ধ্যায় উপজেলার শনখোলাপাড়া থেকে ৬ জন পাহাড়ি কলেজ ছাত্র শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠান উপভোগ করতে নানিয়ারচর বাজারের জগন্নাথ মন্দিরে আসেন। পূজা শেষে রাতে তারা নৌকাযোগে চেঙ্গী নদী (কাপ্তাই হ্রদ) পার হয়ে শনখোলাপাড়ায় ফেরার পথে মহাজনপাড়া এলাকায় তীব্র বাতাস ও ঝড়ের কবলে পড়ে নৌকাটি ডুবে যায়। এসময় ৪ জন ছাত্র সাঁতার কেটে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও দু’জন নিখোঁজ রয়েছে।
নানিয়ারচর থানার ওসি নাজির আলম জানায়, আমরা ঘটনা শোনার পর পরই ঘটনাস্থলে যাই। পুলিশি কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
সাবেক্ষং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুপম চাকমা ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এদিকে পরিবার ও স্থানীয় লোকজন নিখোঁজ ছাত্রদের উদ্ধারে ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালাচ্ছেন।
রাঙামাটির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. রুহুল আমীন জানান, লংগদুতে নৌকাডুবিতে নিখোঁজদের উদ্ধার কাজ শেষে ডুবুরি দল নানিয়ারচরে নিখোঁজদের উদ্ধারে রওনা হয়েছে।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।