
ছবি : আপন দেশ
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার আস্তানায় (দরবার শরিফ) ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের সময় পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় যৌথ অভিযানে ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রোববার (০৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া ৯টার দিকে রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজীব বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, রাতে ডিবি ও থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে গোয়ালন্দ থানার বিভিন্ন স্থান থেকে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর মামলায় ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজন ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রয়ছেন। এছাড়া এখন পর্যন্ত নুরাল পাগলের মাজার ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কোনো অভিযোগ আসেনি।
এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার পর সাড়ে ৩ হাজার অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ। গোয়ালন্দ ঘাট থানার এসআই সেলিম বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মো. রাকিবুল ইসলাম জানান, শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিক্ষোভ সমাবেশ করে তৌহিদী জনতা। বিক্ষোভ থেকে হামলা চালানো হয় নুরাল পাগলার দরবার শরিফে। পাল্টা আক্রমণ করেন ভক্তরা। সংঘর্ষে একজন নিহত ও অর্ধশত মানুষ আহত হন। পরে নুরাল পাগলার দরবার শরিফে ঢুকে আগুন ধরিয়ে দেয় তৌহিদী জনতা। কবর থেকে লাশ তুলে পুড়িয়ে দেয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে হামলা চালানো হয় পুলিশের ওপর, ভাঙচুর করা হয় পুলিশের গাড়ি। সে মামলায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আরওপড়ুন<<>>নিজ ঘরে স্ত্রীর গলাকাটা, স্বামীর ঝুলন্ত মরদেহ
পুলিশ সূত্র জানায়, শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের পর ইমান আকিদা রক্ষা কমিটির ব্যানারে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ফকীর মহিউদ্দিন আনসার ক্লাবে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেয়া হয়। বিক্ষোভ সভায় বক্তব্য শেষে বিক্ষুব্ধ জনতা দরবারের দিকে যেতে চাইলে স্থানীয় প্রশাসন ও থানা পুলিশ তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করে।
এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি গাড়ি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসির গাড়ি ভাঙচুর করে। সেসঙ্গে ৫ পুলিশ সদস্য ও স্থানীয় প্রশাসনের ২ জনকে পিটিয়ে ও ঢিল ছুড়ে আহত করে। এরপর বিক্ষুব্ধ জনতা নুরাল পাগলার বাড়ি ও দরবারের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ভবন ও দরবার শরিফ ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
এ ঘটনায় প্রায় অর্ধশত মানুষ আহত হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এক পর্যায়ে তৌহিদী জনতা নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার মরদেহ কবর থেকে তুলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পদ্মার মোড় এলাকায় নিয়ে পুড়িয়ে দেয়। ওই রাতেই ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাসেল মোল্লা (২৮) নামে আহত এক জনের মৃত্যু হয়।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।