
ছবি: আপন দেশ
পবিত্র ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে নাড়ির টানে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে শিল্পাঞ্চল সাভার-আশুলিয়ার মানুষ। তবে সড়কে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে গাড়ির জন্য। কিছু সংখ্যাক গাড়ি এ সুযোগে অনেক পরিবহনকর্মী ও মালিকদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ তুলেছেন যাত্রীরা।
বুধবার (০৪ জুন) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকা-আরিচা ও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে এসব চিত্র দেখা যায়।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আমিনবাজার, হেমায়েতপুর, উল্লাইল, গেন্ডা, পাকিজার মোড়, সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড ও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পল্লী বিদ্যুৎ, বাইপাইল, শ্রীপুর ও জিরানী বাসস্ট্যান্ডে যাত্রীদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করছেন।
পাকিজার মোড়ে দেড় ঘণ্টা বাসের অপেক্ষায় রয়েছেন রফিক মিয়া। তিনি বলেন, আমি যশোর যাব। কিন্তু আগে বাসের টিকিট কাটতে পারিনি। এখন বাসের জন্য অপেক্ষা করছি।
অপরদিকে শামীমা নামে এক স্কুল শিক্ষিকা বলেন, বিকেল ৫টার থেকে বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। যেসব বাস আসে সেগুলোতে সিট পাওয়া যায় না। আবার অনেক গাড়ি গাবতলী থেকে যাত্রী ভর্তি হয়ে ছেড়ে আসে। সাভারে ওই গাড়িগুলো থামে না। এখন ৭টা বাজে, কিন্তু বাস পাইনি।
রাজধানী বাসের চালক সবুজ বলেন, বিকেল থেকে সড়কে যাত্রীর চাপ বেড়েছে। সড়কে যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ রয়েছে। পরিবহনের সংকট দেখা দিয়েছে। সাভার হাইওয়ে থানা পুলিশের ইনচার্জ সালেহ আহমেদ বলেন, বিকেল থেকে সড়কে যাত্রীর চাপ বেড়েছে। একই সঙ্গে গাড়ির চাপও বেড়েছে।
যাত্রীদের চাপ সামাল দিতে গিয়েও দেখা যায় বাসের আসন সংকট। এ সুযোগে অনেক পরিবহনকর্মী যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করছেন দ্বিগুণ ভাড়া।
বাইপাইল বাসস্ট্যান্ড থেকে গাইবান্ধা যাওয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকা যাত্রী হেলাল মিয়া বলেন, বাসস্ট্যান্ডে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি, কিন্তু কোনো বাসেই আসন পাচ্ছি না। দুই-একটি বাসে আসন পেলেও তারা ভাড়া চাচ্ছে দ্বিগুণ। তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও এখনো বাসে উঠতে পারিনি। যেখানে ভাড়া ৬৫০ টাকা, সেখানে চাচ্ছে এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা। এত টাকা দিয়ে বাসে উঠব কীভাবে?
একই অভিযোগ জামালপুরগামী যাত্রী সেন্টু মিয়ারও। তিনি বলেন, ভীষণ যাত্রী চাপ। তবুও আসন নেই। ৪০০ টাকার ভাড়া চাচ্ছে ৮০০ টাকা। এখন চিন্তায় আছি বাড়ি যাব কীভাবে। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করে লাভ নেই, কারণ অনেক যাত্রীই ইচ্ছা করেই বেশি ভাড়া দিয়ে বাসে উঠছেন। আমরা খেটে-খাওয়া মানুষ, বিপদে আছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আল-রিয়াদ পরিবহনের চালক হুসাইন বলেন, আমরা যাত্রী পেলেই নিচ্ছি। আসন যদি শেষ হয়ে যায়, তাহলে তো আর যাত্রী তুলতে পারি না। অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছি না, যাত্রীদের কাছে ঈদের বোনাস চাইছি—অনেকে দিচ্ছে, অনেকে দিচ্ছে না। জোর করে কিছু করছি না।
অন্যদিকে জামালপুর ট্রাভেলসের চালক মানিক মিয়া বলেন, অতিরিক্ত ভাড়ার অভিযোগ সত্য নয়। আমরা নির্ধারিত ভাড়াই নিচ্ছি। তবে আসন সংকট আছে, যাত্রী বেশি। আগে আসলে আসন পাওয়া যাচ্ছে, পরে এসে তো আর পাবেন না। এর দায় আমাদের না।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।