Apan Desh | আপন দেশ

নিরবে আলো ছড়ায় ‘জীবন তরী’ ভাসমান হাসপাতাল 

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৪:৩০, ১১ মে ২০২৫

নিরবে আলো ছড়ায় ‘জীবন তরী’ ভাসমান হাসপাতাল 

ছবি : আপন দেশ

নদীমাতৃক বাংলাদেশের নদীর পার ধরে ভেসে বেড়াচ্ছে একটি হাসপাতাল। ভাবতে অবাক হলেও এটি চালু আছে প্রায় দুই দশকেরও বেশী সময় ধরে। দাতব্য হাসপাতালটি ভাসমান একটি জাহাজের ওপর প্রতিষ্ঠিত। এটি দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার একাধিক স্থানে নোঙর ফেলে সুবিধাবঞ্চিত জনসাধারণের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। গ্রামের মানুষের চিকিৎসার জন্য ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (আইএফবি) নামের একটি বেসরকারি সংস্থা জাহাজের ওপর ভাসমান হাসপাতালটি চালু করে।

১৯৯৩ সালের ২৫ জুলাই সংস্থাটি ট্রাস্ট হিসেবে নিবন্ধন পায়। ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশন ১৯৯৯ সালের এপ্রিল মাসে ‘জীবন তরী’ নামে যাত্রা করে ভাসমান হাসপাতাল চালু করে। দেশের নদী ধারের মানুষ যারা শহর বা নগরে খুব কমই যেতে পারে তাদের চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য এটি মুলত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

সম্প্রতি এ হাসপাতালটি সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা দিতে গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার পৌর সভার খাদ্য গুদাম এলাকার শীতলক্ষ্যা নদীর ঘাটে নোঙ্গর করে চিকিৎসা সেবা দিতে শুরু করেছে। এর আগে ২০১৩ ও ২০১৮ সালে এ ঘাটে চিকিৎসা সেবা দিয়েছিল ভাসমান এ হাসপাতালটি।

বোরবার (১১ মে) সরেজমিনে দেখা যায়, রোগীরা লাইনে দাঁড়িয়ে ৫০ টাকা দিয়ে টিকিট কাটছে। আবার ভাসমান সিঁড়ি দিয়ে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে যাচ্ছেন। হাসপাতালের ভেতরে রয়েছে তিন শয্যাবিশিষ্ট অপারেশন পরবর্তী রোগীদের জন্য একটি কক্ষ। শীতার্তপ নিয়ন্ত্রিত একটি অপারেশন থিয়েটার ও রোগীদের জন্য পৃথক বেড রয়েছে। তাছাড়া এক্স-রে, প্যাথলজিক্যাল ল্যাব, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের জন্য আলাদা কক্ষ এবং বহিঃবিভাগীয় রোগীদের জন্য অপেক্ষা করার একটি কক্ষ রয়েছে। ভাসমান এ হাসপাতালে বাঁধা রয়েছে দুটি স্পিডবোড যা রোগীদের আনা-নেয়ার জন্য জরুরী রোগীদের আনা-নেয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়। 

চিকিৎসা সেবা নিতে আসা একাধিক রোগী জানায়, ভাসমান হাসপাতালে কম খরচে উন্নত চিকিৎসা পাই তাই এসেছি। তারা আরোও বলেন, মানুষ হাসপাতালে যায় চিকিৎসা নিতে, কিন্তু হাসপাতাল রোগীর বাড়ির ঘাটে আসে তা আগে কখনো দেখিনি।

ভাসমান হাসপাতালের প্রশাসক এ কে এম সহিদুল হক আপন দেশকে বলেন, নদীর পাড় এলাকায় বসবাসকারী সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র রোগীদের স্বল্প খরচে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। নাক, কান, গলার চিকিৎসা, অপারেশন এবং চক্ষু রোগের চিকিৎসা,অপারেশন ও সহায়ক সামগ্রীর ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে অর্থোপেডিক চিকিৎসা, ঠোঁটকাটা, তালুকাটা রোগীদের চিকিৎসাসহ অন্যান্য সেবা দেয়া হয়। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চিকিৎসা সেবা চালু রয়েছে। এখানে কমপক্ষে এক থেকে দেড় বছর অবস্থান করার কথা রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার তনিমা আফ্রাদ বলেন, জীবন তরীর উদ্যোগ যত ছোটই হোক না কেন, দিন দিন অসুস্থ মানুষের জীবনে আশার আলো ছড়াচ্ছে। স্বল্প মূল্যে সাধারণের মাঝে চিকিৎসা সেবা পৌছে দিতে ভাসমান হাসপাতালটি এখানে স্থান পেয়েছে। সাধারণের মাঝে এর খবরটি পৌছে দিতে গণমাধ্যমের সহযোগীতা ব্যক্ত করেন তিনি। 

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়