Apan Desh | আপন দেশ

মার্সেলো তরমুজ চাষে সফল নওগাঁর কৃষকরা

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:৪৭, ১৭ আগস্ট ২০২৫

আপডেট: ২২:৪৭, ১৭ আগস্ট ২০২৫

মার্সেলো তরমুজ চাষে সফল নওগাঁর কৃষকরা

তরমুজ গাছের পরিচর্যা করছেন এক কৃষক

নওগাঁয় মাচায় ও মালচিং পদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড মার্সেলো জাতের তরমুজ চাষে সফলতা পেয়েছেন কৃষকরা। এসব জমিতে আগে পটল ও করলা চাষ করলেও এখন বর্ষা মৌসুমে ‘মার্সেলো’ জাতের তরমুজ চাষ করেছেন তারা। এ পদ্ধতিতে তরমুজ চাষে অধিক ফলনে খুশি কৃষকরা।  এ তরমুজ অত্যন্ত সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে চাহিদাও বেশি। সঙ্গে লাভও বেশি।

জেলার সদর, পত্নীতলা, মহাদেবপুর, রাণীনগর উপজেলার মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে- মাচায় ও মালচিং পদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড মার্সেলো জাতের তরমুজ গাছ। মাচার ওপরে সবুজ পাতা। নিচে ঝুলে আছে কালো রঙের তরমুজ। গাছ থেকে যেন ছিঁড়ে নিচে না পড়ে সেজন্য প্রতিটি তরমুজে দেয়া হয়েছে জালি।

জানা গেছে, সুস্বাদু ও সুমিষ্ট হওয়ায় মার্সেলো জাতের তরমুজের চাহিদা বাজারে বেশি এবং দামও ভালো পাওয়া যায়। লম্বাটে ডিম্বাকৃতির এ তরমুজের ভেতরের অংশ গাঢ় লাল রঙের। মার্সেলো জাতের প্রতিটি তরমুজের ওজন হয়ে থাকে ৩-৫ কেজি। আর প্রতি বিঘায় দেড় থেকে দুই হাজার তরমুজ পাওয়া যায়।

এছাড়া এ জাতের তরমুজ উচ্চমাত্রায় ভাইরাস সহনশীল। প্রতিদিনই আগ্রহী চাষিরা বর্ষাকালীন তরমুজের ক্ষেত দেখতে ভিড় করছেন জমিতে। জুন মাসে তরমুজের চারা রোপণ করা হয়েছে। গাছ লাগানোর ৬৫-৭০ দিনের মধ্যে ফল উঠানো যায়।

আরওপড়ুন<<>>মাছের ঘেরে তরমুজ চাষে লাভবান কৃষক

রাণীনগর উপজেলার মার্সেলো তরমুজ চাষি নিরাঞ্জন চন্দ্র প্রামানিক জানান, প্রতিবছর উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে নতুন নতুন ফসল চাষ করে থাকেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় এবার কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় ২৫ শতক জমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার ছাড়াই বিষমুক্ত মার্সেলো তরমুজ চাষ করেছেন। বাজারে প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকায়। কম পরিশ্রমে ভালো দাম পেয়ে খুশি এ চাষি।

তিনি আরও বলেন, আমরা জানি তরমুজ চাষ সাধারণত গ্রীষ্মকালে হয়ে থাকে। কিন্তু আমাদের এ বরেন্দ্র জেলায় বর্ষাকালে তরমুজের চাষ করা দেখে প্রতিদিন তরমুজের ক্ষেত দেখতে ও পরামর্শ নিতে আসছেন নতুন নতুন কৃষি উদ্যোক্তারা। তাদের পরামর্শসহ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি।

তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা কামাল মাহমুদ শিপন বলেন, নিরাঞ্জন দাদার তরমুজের ক্ষেত দেখে খুবই ভালো লাগছে। মার্সেলো জাতের তরমুজ চাষের বিষয়ে দাদার সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। খেয়ে দেখলাম খুব সুস্বাদু ও মিষ্টি। আগামী বছর দুই বিঘা জমিতে এ তরমুজ চাষ করার আশা করছি।

উপজেলার কাশিমপুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের দম্পতি আলেক বেগ ও কুলসুম বানু বলেন, আগে বাজার থেকে তরমুজ কিনে আনতাম। এখন দেখি গ্রীষ্মকালের তরমুজ বর্ষাকালে ধরেছে, অবাক করা বিষয়। গাছের থোকায় থোকায় তরমুজ ঝুলে থাকতে দেখে খুব সুন্দর লাগছে। দুটি তরমুজ ৮ কেজি। প্রতি কেজি ৫০ টাকা দরে কিনলাম।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, জেলার ৪টি উপজেলায় বিষমুক্ত মাচা ও মালচিং পদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল মার্সেলো জাতের তরমুজ চাষ করা হয়েছে। তরমুজের ভেতরে গাঢ় লাল রঙের, খেতেও সুস্বাদু। কম খরচের পাশাপাশি বর্ষাকালে এ তরমুজ চাষ হওয়ায় কৃষকরা বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাই বর্ষাকালীন তরমুজ চাষের দিকে ঝুঁকছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। তাদের আরও উৎসাহ দিতে আমরা কাজ করছি। আমাদের পক্ষ থেকে তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।

আপন দেশ/এমএইচ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়