
ফাইল ছবি
একটা সময় সাকিব-তামিমদের খেলা সম্প্রচারের ব্যাপক অগ্রহ ছিল সম্প্রচার কোম্পানিগুলোর মাঝে। তবে পঞ্চপাণ্ডব বিহীন দলের পারফরম্যান্সে ভাটা পড়ায় সে আগ্রহ একেবারে শূণ্যের কোঠায় নেমে এসেছে। বারবার দরপত্র আহবান করেও সাড়া পাচ্ছে না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
মাঠের পারফরম্যান্স মোটেও ভাল না শান্ত-মিরাজদের। পাশাপাশি প্রশাসনে রয়েছে অস্থিরতা আর দূর্নীতির অভিযোগ এবং তামিম, সাকিব, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহদের শুন্যতায় খারাপ দিকে যাচ্ছে দলের অবস্থা। যে কারণে দেশের ক্রিকেট নিয়ে আগ্রহে ভাটা পড়েছে দর্শকদের।
একের পর এক ব্যর্থতার বৃত্তে আটকে আছেন ক্রিকেটাররা। লঙ্কানদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হতাশাজনক পারফরম্যান্স করেছে বাংলাদেশ। ক্রিকেটারদের টানা ব্যর্থতায় স্পন্সর থেকে শুরু করে সম্প্রচার সবকিছুতেই যেন অন্ধকারে হারাতে যাচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। ক্রিকেট-আগ্রহে ভাটার কারণে সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রিই করতে পারছে না বিসিবি। বেশ কয়েকবার শর্ত বদলেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, বাড়িয়েছে আগ্রহপত্র জমা দেয়ার সময়সীমাও। তাতেও মিলছে না কোন কিছুই।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ২০২৫-২০২৭ সালের হোম সিরিজের স্যাটেলাইট, ডিজিটাল এবং ডিটিএইচ সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রির জন্য দরপত্র আহবান করলেও তাতে কোনও দেশীয় প্রতিষ্ঠান সাড়া দেয়নি। ১২ জুন ২০২৫ তারিখে জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিসিবি জানায়, ১২ জুলাই ২০২৫ থেকে ১৫ জুন ২০২৭ পর্যন্ত সময়সীমার মধ্যে এসব স্বত্ব বিক্রয়ের জন্য আগ্রহীদের দরপত্র দিতে হবে। দরপত্র জমা দেয়ার শেষ সময় ছিল ৮ জুলাই, দুপুর ১২টা।
বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, কোনও প্রতিষ্ঠানই এ সময়ের মধ্যে দরপত্র জমা দেয়নি। একাধিক কারণে আগ্রহের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ১০ লাখ মার্কিন ডলারের সিকিউরিটি ডিপোজিটের শর্ত। এ অর্থ ব্যাঙ্ক ড্রাফট, পে-অর্ডার, অপরিবর্তনীয় ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি বা ট্রান্সফারের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হতো।
পরে ২৭ জুন বিজ্ঞপ্তির প্রথম সংশোধনী এনে ডিটিএইচ স্বত্বকে স্যাটেলাইট স্বত্বের অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং দরপ্রক্রিয়াকে ভাগ করে বাংলাদেশ। বৈশ্বিক কিংবা নির্দিষ্ট অঞ্চলের জন্য স্বত্ব পৃথকভাবে নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নেয় বিসিবি। সিকিউরিটি ডিপোজিটও সে অনুযায়ী কমিয়ে আনা হয়।
শর্ত বদলের পরও বাংলাদেশের আগামী বছর দুয়েকের হোম সিরিজের সম্প্রচার স্বত্বের জন্য কোনও ক্রেতা পায়নি বিসিবি। এরপর ৪ জুলাইতে দ্বিতীয়বার সংশোধনী আনা হয় দরপত্র প্রস্তাবে। প্রায় ২ বছরের হোম সিরিজের সম্প্রচার স্বত্বের পাশাপাশি একই শর্তে শুধুমাত্র পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩ টি-টোয়েন্টির সিরিজের জন্য আলাদা দরপ্রস্তাব আহবান করেছে বিসিবি। এ সিরিজ বাদে ১৫ জুন ২০২৭ পর্যন্ত বাংলাদেশের সব হোম সিরিজের সম্প্রচার স্বত্বের জন্য দরপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ২১ আগস্ট, সিকিউরিটি ডিপোজিট জমার শেষ তারিখ ২৪ আগস্ট ও নিলাম প্রক্রিয়া শুরুর তারিখ ২৫ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়েছে।
পাকিস্তান সিরিজের এ ৩ টি-টোয়েন্টি ছাড়াও আগামী বছর দুয়েকে বাংলাদেশে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হিসেবে সফর করবে পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ইংল্যান্ড। আগস্টে ভারতীয় দলের সীমিত ওভারের ক্রিকেটের সফর পিছিয়ে গেলেও সেটা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে যা প্রস্তাবিত সময়সীমার ভেতরেই। এর বাইরে আয়ারল্যান্ডের সঙ্গেও এ বছরের শেষে আছে টেস্ট ও ওয়ানডে। বাংলাদেশে আগামী বছর খেলতে আসার কথা অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডেরও।
গত এপ্রিলে বাংলাদেশে সফরে এসেছিল জিম্বাবুয়ে। তখন দুই টেস্ট সিরিজের সম্প্রচার স্বত্বও বিক্রি করতে পারেনি বিসিবি। ফলে টেস্ট সিরিজ সম্প্রচার করেছিল রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল বিটিভি। পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের সম্প্রচারে কাউকে না পাওয়া গেলে হয়তো একই পথেই হাঁটতে হবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।