
গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা
ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন সৈনিক। ২০১৪ সালে সে চাকরি ছেড়ে পুরোদস্তুর পেশাদার ফুটবলার বনে যান আশরাফুল ইসলাম রানা। প্রায় এক যুগ পেশাদার লিগ ও জাতীয় দলে সুনামের সঙ্গে খেলে যাচ্ছিলেন। চলতি মৌসুমেও দাটপ দেখাচ্ছিলেন ৩৮ বছর বয়সী এ গোলরক্ষক। তবুও থামছেন তিনি। লাল সবুজ দলের সাবেক এ অধিনায়ক গ্লাভস জোড়া খুলে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
শুক্রবার (২৩ মে)) মোহামেডানের বিপক্ষে শেষবারের মতো মাঠে নামছেন রানা। কুমিল্লা শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে এ ম্যাচটিই হবে রানার পেশাদার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) গোপীবাগে ব্রাদার্স ইউনিয়নের আঙিনায় অবসরের ঘোষণা দিয়ে আশরাফুল ইসলাম রানা বলেন, আপনাদের দোয়া ও টিমমেটদের সহায়তায় এ মৌসুমটি ভালোই কেটেছে। এরপরও এখনই ফুটবল ছাড়ার সেরা সময় মনে করছি। তাই শুক্রবার ব্রাদার্সের হয়ে মোহমেডানের বিপক্ষে আমার ফুটবলার হিসেবে শেষ ম্যাচের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটা আসলে সব ধরনের ফুটবল থেকেই অবসর নেয়া। আমার পরিকল্পনাই ছিল, ২০২৫ সাল পর্যন্ত ক্লাব ফুটবল চালিয়ে যাব। মনে হচ্ছে, ফুটবল ছেড়ে দেয়ার এখনই সঠিক সময়।
মানিকগঞ্জ থেকে উঠে আসা রানা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ফুটবলার হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিলেন। ২০০৩ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ছিলেন সেনাবাহিনীতেই। এরপর চাকরি ছেড়ে যোগ দেন মোহামেডানে। এখানে খেলেছেন ২০১৬ পর্যন্ত। অল্প সময় খেললেও মোহামেডানের প্রতি আলাদা একটা টান আছে তার। তাই লিগের এক ম্যাচ বাকি থাকতে অবসর নিচ্ছেন মোহামেডানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে।
গণমাধ্যমে কথা বলার সময় রানা জানালেন সেটাই, ২০১৪ সালে ঢাকা মোহামেডানের হয়ে আমার ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু। শেষ ম্যাচটা মোহামেডানের সঙ্গেই খেলতে চাই। আবার মোহামেডান এবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তাই মোহামেডানের ম্যাচ দিয়েই ইতি টানছি ক্যারিয়ারের।
জাতীয় দলের হয়ে বিদায়টা মাঠ থেকে নিতে পারেননি। বিদায় বেলায় সে আক্ষেপ ঝড়ল বাংলাদেশের সাবেক এ অধিনায়কের কণ্ঠে, জাতীয় দল থেকে ২০২৩ সালেই অবসর নিতে চেয়েছিলাম। হাভিয়ের কাবরেরা বিষয়টা জানত। তাকে বলেছিলাম, স্কোয়াডে থাকতেই আমি বিদায় নিব। ওই সময় জিকোরা ভালো করছিল, আমিও ভেবেছিলাম তরুণরা আসুক। আমি বিদায় নেই। কিন্তু তখন কাবরেরা আমার সঙ্গে একমত হননি। এরপর যে কোনো কারণেই হোক জাতীয় দল থেকে আমাকে বাদ দেয়া হয়েছে।’
২০১৫ সালের ডিসেম্বরে নেপালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ দিতে লাল-সবুজের জার্সিতে অভিষেক হয় রানার। জাতীয় দলের হয়ে খেলা ২৫ ম্যাচের সবশেষটি তিনি খেলেন ২০২১ সালে নেপালের বিপক্ষে। এরপর দলে থাকলেও আর মাঠে নামা হয়নি রানার।
বিদায় বেলায় রানা তৃপ্তিও জানালেন ভারতের বিপক্ষে ২০১৯ সালের ১-১ গোলে ড্র হওয়া সে ম্যাচ নিয়ে, ফুটবলে আমার সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্ত সল্ট লেকে ভারতের সঙ্গে ড্র করা, আর সবচেয়ে হতাশার জায়গা ভুটানের বিপক্ষে হেরে ১৪ মাস আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে দূরে থাকা। অবসরের পর ফুটবলের সঙ্গেই থাকব। হয় গোলকিপার কোচ হিসেবে কাজ করব, কিংবা সংগঠক হিসেবে কাজ করব। সামনের জুলাইতে গোলকিপিং কোচ-সি কোর্স শেষ করব। পরের মৌসুমে হয়ত কোনো ক্লাবের গোলকিপিং কোচ হিসেবেও আসতে পারি।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।