মির্জা ফখরুল ইসলাম- ফাইল ছবি
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে কোনো বিভক্তি চাই না-এ মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, কিছু কিছু শক্তি কিছু কিছু মানুষ এখানে বিভক্তি করতে চাইছে।
তারা ১৯৭১ সালকে ভুলিয়ে দিতে চায়। তাদের লক্ষ্য একটাই ১৯৭১ সালকে অস্বীকার করা। এবং শহীদ জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে তা তারা অস্বীকার করতে চায়। এ ব্যাপারে খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, ১৯৭১ সালকে ভুলিয়ে দেয়ার কোন অবকাশ নেই। কারণ ওটাই হচ্ছে আমাদের জন্মের ঠিকানা মনে রাখতে হবে সবসময় ১৯৭১ হচ্ছে আমাদের অস্তিত্বের কথা, আমাদের স্বাতন্ত্রের কথা। স্বাধীনতার ঘোষণা হচ্ছে আমাদের নতুন জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশের কথা।
জামায়াতে ইসলামী উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭১ সালে যারা স্বাধীনতা বিরোধিতা করেছিল তারা মুক্তিযুদ্ধকে এখন নিচে নামিয়ে দিতে চায়। তারা শুধু চব্বিশের জুলাইয়ের আন্দোলন বড় করে দেখাতে চায়। নিজেদের অতীতকে স্মরণ করুন। ১৯৭১ সালে আপনাদের কী ভূমিকা ছিল- সেটা আপনারা মনে রাখবেন।
শনিবার (০১ নভেম্বর) 'স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অপরিহার্য'- ৭ নভেম্বরের চেতনায় মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। আয়োজন করেছিল জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, চব্বিশের যে আন্দোলন, সেটার জন্য ১৫ বছর ধরে আন্দোলন করেছি। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, ফ্যাসিস্ট শক্তিকে পরাজিত করার জন্য, হাসিনাকে উৎখাত করার জন্যে আমরা ১৫ বছর সংগ্রাম করেছি, আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা সংগ্রাম করেছেন। আজকে যদি কেউ দাবি করেন যে এককভাবে তাদের কৃতিত্ব আমরা সেটা মানতে রাজি নই। আমাদের ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। মিথ্যা মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে ৬ বছর কারাগারে থাকতে হয়েছে। আমাদের শতশত নেতা-কর্মীকে খুন করে একটা ফ্যাসিবাদী দানবীয় রাষ্ট্র কায়েম করা হয়েছিল শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।
জামায়াতে ইসলামী উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা সে মুক্তিযুদ্ধকে গোলমাল বলে আখ্যায়িত করেছেন। যারা আমাদের হত্যা করছিল তাদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে আপনারা এ দেশের মানুষকে হত্যা করেছিলেন এবং আমাদের বহু গুণী জ্ঞানী ব্যক্তিকে সেদিন হত্যা করে বদ্ধভূমিতে নিয়ে ফেলে দিয়েছিলেন। আমরা একটু ভুলিনি।
আরও পড়ুন<<>> জুলাই সনদ নিয়ে প্রতারণা, সরকারের দিকে মান্নার আঙুল
আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন বীর বিক্রম বলেন, জুলাই সনদ জনগণের জন্য প্রয়োজন নেই। এটা আসলে উপদেষ্টা ও কিছু ব্যক্তির জন্য প্রয়োজন। কারণ তারা যখন ক্ষমতায় থাকবে না তখন জনগণের রোষানলে পড়তে পারে। এর থেকে বাঁচতে তাদের জুলাই সনদ প্রয়োজন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, জামায়াত এখন নিজেদের চেহারা, পোশাক-আশাক, কর্মকাণ্ড সব বদলে নিচ্ছে। গতকাল (শুক্রবার) জামায়াতের সেক্রেটারি হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে সমাবেশ করেছেন, কিন্তু সেখানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কথা একবারও বলেননি- সব কথা বলেছেন বিএনপির বিষয়ে।
রসিকতা করে তিনি বলেন, মুরগির বাচ্চারা যেমন পরে নাম পায়- চিকেন রোস্ট, বিরিয়ানি বা তন্দুরি-তেমনি জামায়াতও মরার পর নাম পাবে। জীবিত অবস্থায় এ দেশের মানুষ তাদের মেনে নেবে না।
আলাল বলেন, বর্তমান সরকার মনে করে সব অনাচার, নির্যাতন ও অর্থপাচারের মূল হয়তো বাংলাদেশের সংবিধান। আসলে সমস্যার মূলে রয়েছে ক্ষমতা নবায়নের নামে অনুষ্ঠিত একতরফা নির্বাচন প্রক্রিয়া।
মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালামসহ আয়োজক সংগঠনের নেতারা।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































