Apan Desh | আপন দেশ

চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন মেজর সাদিকের স্ত্রী 

নিজেস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১:৪৫, ১০ আগস্ট ২০২৫

চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন মেজর সাদিকের স্ত্রী 

সংগৃহীত ছবি

মেজর সাদিকুল হকের স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিন গোয়েন্দা জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। তিনি স্বীকার করেছেন, আওয়ামী লীগ কর্মীদের গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছিল। লক্ষ্য ছিল দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় (KPI) হামলা।

জানা গেছে, পরিকল্পনার নেপথ্যে ছিলেন সুশান্ত দাস গুপ্ত নামে এক ব্যক্তি। প্রশিক্ষণে প্রতিবার অংশ নিতেন মেজর সাদিক। তবে সমন্বয় করতেন সুশান্ত দাস। জাফরিন স্বীকার করেছেন, তাদের পরিকল্পনায় ঢাকার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ছিল টার্গেটে। এর মধ্যে ছিল দূতাবাস, হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয়। পপুলার হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়—সবই তালিকায় ছিল।

তিনি আরও জানান, তাদের প্রশিক্ষণের নাম ছিল ‌‘সাব-ট্যাকটিকাল আরবান ওয়ারফেয়ার’। এটাকে সাধারণভাবে গেরিলা ট্রেনিংও বলা হয়। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা এসেছিলেন দেশের নানা প্রান্ত থেকে।

আরও পড়ুন>>>হাসিনা-ইউনূস দ্বন্দ্বে আমি ‘বলির পাঠা’: টিউলিপ

গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, এ পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য ছিল অক্টোবর-নভেম্বর মাসে দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা। কিছু দূতাবাসে হামলা চালিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশকে চাপে ফেলা ছিল অন্যতম লক্ষ্য। এতে বিদেশি সমর্থন হারানোর ঝুঁকি ছিল।

জাফরিন ODB নামের একটি সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথাও স্বীকার করেছেন। কিছু সদস্যকে রেজিস্ট্রেশন করিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সবাইকে নয়। তার স্বামী সাদিকুলের সম্পৃক্ততার কথাও স্বীকার করেছেন। যদিও তিনি সমন্বয়ক ছিলেন না বলে দাবি করেছেন।

গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, তারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলার পরিকল্পনাও করেছিল। এতে ভারত বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক ইস্যু বানাতে পারত। সংখ্যালঘু নির্যাতনের কার্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিবর্তনের চেষ্টা হতো।

এছাড়া ভারতের সীমান্ত থেকে সীমিত সামরিক হামলার পরিকল্পনার কথাও মিলেছে। তবে সেটি ছিল সর্বোচ্চ পর্যায়ের পরিকল্পনা। প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল দেশের ভেতরে ক্যাওস সৃষ্টি।

সূত্র বলছে, পরিকল্পনার মাস্টারমাইন্ড দুইজন এখন আটক। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৪০ জনের বেশি গ্রেফতার হয়েছে। ফলে আপাতত পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। সুমাইয়াকে যেদিন গ্রেফতার করা হয়, সেদিন তিনি কক্সবাজারে এক ব্রিগেডিয়ার জেনারেলের সঙ্গে রেস্টুরেন্টে বৈঠক করছিলেন। ডিবি গিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। এখন এ মামলাটি জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল পরিচালনা করছে—যেখানে ডিজিএফআই, এনএসআই, এসবি, ডিবি একসঙ্গে কাজ করছে।

পূর্বে গ্রেফতার সোহেল রানা জানিয়েছিলেন, মেজর সাদিক ও সুমাইয়া দুজনই সমন্বয়ক ছিলেন। তারা মিরপুর ডিওএইচএস, কাঁটাবন মোড়, সি সেল রিসোর্ট—এসব মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন। যদিও সাদিক-সুমাইয়া দাবি করেছেন, তারা মাত্র ২০-২৫ মিনিট ছিলেন ও কার্যক্রমে জড়াননি। এখনও তদন্ত চলছে। গোয়েন্দারা মনে করছেন, পরিকল্পনার আসল রূপ আরও ভয়ংকর হতে পারত।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়