
লালমনিরহাট বিমানবন্দর। ফাইল ছবি
পরিত্যক্ত লালমনিরহাট বিমানবন্দরটি পুনরায় চালুর পরিকল্পনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। দেশটির দাবি, চীনের সাহায্যে প্রায় ৫৪ বছর ধরে পরিত্যক্ত এ বিমানবন্দরটি পুনরায় চালু করছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার (২৭ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
এনডিটিভির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লালমনিরহাট বিমানবন্দরটি সচল করার বিষয়টি ভারতীয় প্রশাসনে সতর্কতা তৈরি করেছে। কারণ দেশটির আশঙ্কা, এখানে চীনের সামরিক বাহিনীর অবকাঠামো থাকবে। যা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। তারা আরও বেশি উদ্বিগ্ন কারণ ভারতের কথিত ‘চিকেন নেক’ লালমনিরহাট থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে। এ চিকেন নেক দিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় সেভেন সিস্টার্স রাজ্যে পণ্য আনা নেয়ার কাজ করা হয়।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, যদি চীন এ বিমানবন্দর সংস্কারে সাহায্য করে, তাহলে তারা হয়তো সেখান থেকে সামরিক সরঞ্জাম যেমন ফাইটার জেট, রাডার ও নজরদারি যন্ত্র বসাবে। এ কারণে, ভারত দ্রুত উত্তর-পূর্ব রাজ্যের ত্রিপুরার কাইলাশহর বিমানবন্দর সংস্কারের কাজ শুরু করেছে। যদিও এটি মূলত একটি বেসামরিক বিমানবন্দর থাকবে, তবুও সামরিক বিমান চলাচলের জন্য প্রস্তুত রাখা হবে। এ পদক্ষেপ শুধু বাংলাদেশের লালমনিরহাটের জন্য নয়, বরং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের কারণে ভারতের পক্ষ থেকে একটি সতর্কবার্তা হিসেবেও ধরা হচ্ছে।
আরওপড়ুন<<>>‘জেরুজালেম মার্চ’ র্যালিতে মুসলিম নারীরদের গায়ে ইসরায়েলির থুতু
এনডিটিভি বলছে, গত বছর আগস্টে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হন। তার পরিবর্তে নতুন সরকার এসেছে। এ সমকার ভারত নয়, বরং চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছে। তাই চীনের সাহায্যে লালমনিরহাট বিমানবন্দরর সংস্কার ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ।
এতে আরও জানানো হয়, এ বিমানবন্দর চালুর পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ত্রিপুরার ‘কাইলাশহর বিমানবন্দর’ চালু করবে ভারত। ১৯৯০-এর দশকে বন্ধ হয়ে যায় এটি। ১৯৭১ সালের যুদ্ধে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
সংবাদমাধ্যমটি বলেছে, কাইলাশহর বিমানবন্দর সংস্কার হলে ত্রিপুরার বিমান যোগাযোগ অনেক উন্নত হবে। কারণ এখন ত্রিপুরায় একমাত্র বড় বিমানবন্দর আগরতলা শহরে। সোমবার (২৬ মে) বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের একটি উচ্চ পর্যায়ের দল এয়ারপোর্টটি পরিদর্শন করেছে। দলটি সরকারকে পরবর্তী পরিকল্পনা জানাবে।
উল্লেখ্য, সোমবার (২৬ মে) বিকেলে সেনাসদরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশন্স অধিদফতরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উল-দৌলা বলেন, দেশের সামগ্রিক সক্ষমতা বাড়ছে। সে অনুযায়ী আমাদের প্রয়োজনও বৃদ্ধি পাচ্ছে। লালমনিরহাট বিমানবন্দরটি দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকলেও প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে এটি নতুন করে সচল করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, বিমানবন্দরটির পরিধি ও কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হবে এবং সেখানে নতুন অবকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। ওই এলাকায় একটি এরোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হচ্ছে। এভিয়েশন খাতের সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে এ বিমানবন্দরকে কাজে লাগানো হবে। এটি একটি জাতীয় সম্পদ এবং দেশের প্রয়োজনে এর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে বলেও জানান এ সেনা কর্মকর্মা।
আপন দেশ/এমএইচ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।