ফাইল ছবি
দেশে প্রতি আটজনে একজন নারী স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকিতে রয়েছেন। শুধু নারী না, বরং পুরুষরাও স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারেন। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ১৩৮ জন পুরুষের একজন স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকিতে রয়েছেন। তবে এটি এখন আর মৃত্যু ঘটানোর মতো রোগ নয়, বরং সচেতনতার মাধ্যমে এ থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব। এজন্য সচেতনতা সৃষ্টিতে ব্যক্তিগত উদ্যোগের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক পৃষ্ঠপোষকতা জরুরি।
ঝুঁকি এড়াতে চাই সচেতনতা
বারডেম জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. শর্মিষ্ঠা রায় স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত বিশ্ব বরেণ্য একাধিক নারীর এ রোগ সম্পর্কে তাদের সচেতনতা কর্মসূচির কথা তুলে ধরেন। পাশাপাশি স্তন ক্যান্সার থেকে সুরক্ষায় ব্যক্তিগত উদ্যোগের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক পৃষ্ঠপোষকতার ব্যাপারে সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
অধ্যাপক শর্মিষ্ঠা রায় বলেন, আমাদের দেশের পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি আটজনে একজন নারী স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকিতে রয়েছেন। তাহলে প্রতি এক হাজার নারীর মধ্যে প্রায় একশ জনের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এটা ভীতিকর! এ থেকে সুরক্ষা পেতে সচেতনতা খুব প্রয়োজন।
‘মনে রাখতে হবে, এটা এখন আর মৃত্যুর কারণ নয়, বরং একটি রোগ। এটা শনাক্ত করতে হবে, লড়াই করতে হবে এবং পরাজিত করতে হবে। সুতরাং সচেতনতার মাধ্যমে এ থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব। আমরা পরস্পরকে সহযোগিতা করবো। সচেতনতার তথ্যগুলো সবার মাঝে ছড়িয়ে দেবো। কারণ একত্রে আমরা শক্তিশালী’—বলেন ডা. শর্মিষ্ঠা রায়।
এ সময় বিশ বছরের উপরের নারীদের প্রতি মাসে সেলফ ব্রেস্ট পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন তিনি।
আরও পড়ুন<<>>মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন অধ্যাদেশ জারি
ঝুঁকিতে পুরুষরাও
এ প্রসঙ্গে বারডেম জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মাহমুদা জয়া বলেন, শুধু মহিলা না, বরং পুরুষরাও স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। যেহেতু পুরুষরা এ ব্যাপারে সচেতন থাকেন না, তারা ধরেই নেন এটি নারীদের রোগ। ফলে তারা কখনোই সেভাবে পরীক্ষা করান না। আমার কর্মজীবনে যে কয়জন পুরুষকে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত অবস্থায় পেয়েছি, দুঃখজনকভাবে পরিণতি ভালো কিছু ছিল না। কারণ চিকিৎসা ছিল বিলম্বিত। রোগটা অনেক দূর অগ্রসর হওয়ার পর তারা এসেছেন।
এক গবেষণার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, প্রতি ১৩৮ জন পুরুষের মধ্যে একজন স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন।
বারডেম অফিসার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোর্শেদ উদ্দিন আকন্দ বলেন, চিকিৎসা ব্যবস্থায় আমরা অবহেলিত থাকতে চাই না। ক্যান্সার দুরারোগ্য ব্যাধি। সচেতনার মাধ্যমে এ থেকে আমাদের উতরে যেতে হবে। সচেতনতা বাড়ানো গেলেই মৃত্যু হার কমে আসবে। এটা ইতিমধ্যে অনেকখানি কমে এসেছে। স্তন ক্যান্সার এমন একটি ক্যান্সার, যে কারণে মা-বোনেরা লজ্জা ও সংকোচে বলতে দ্বিধা করেন। এই বৃত্ত থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। এজন্য আমাদের সচেতন হওয়া জরুরি। আমাদের কাছে যখন রোগীরা আসেন, তখন অনেক বিলম্ব হয়ে যায়। তখন চিকিৎসা করে ভালো ফল পাওয়া যায় না। সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা করা গেলে সারাজীবনের জন্য এ থেকে আমরা পরিত্রাণ পেতে পারি।
লজ্জা ছেড়ে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ
লজ্জা-সংকোচ থেকে বেরিয়ে এসে রোগকে রোগ হিসেবে চিন্তা করে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন ডা. মোর্শেদ উদ্দিন। বলেন, এ ক্ষেত্রে ঢাবির খুব কাছের প্রতিষ্ঠান হিসেবে বারডেম এগিয়ে না এলে এ সচেতনতা কাজে আসবে না। আমরা সচেতনতার হাত বাড়িয়ে দিতে চাই। আপনারা যে কোনো সময় আসবেন।
আপন দেশ/জেডআই





































