
ছবি: আপন দেশ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহ হত্যার ৯০তম দিন আজ। দীর্ঘ সময়েও সাজিদের খুনিদের গ্রেফতার করতে ব্যর্থতার পরিচয় দেয়ায় অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলা প্রাঙ্গণে একটি সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে দেয় তারা। এতে লেখা, সাবধান! সাজিদ হত্যার আজ ৯০তম দিন! এরপরে কি আমি?
এসময় উপস্থিত ছিলেন শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক সাহেদ আহম্মেদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি ইসমাইল হোসেন রাহাত, ডিএস ক্লাবের সভাপতি বোরহান উদ্দিন, হাসিব আল সজীব, জুলকারনাইন দোলন, জারিন তাসনিম পুষ্প, আরিফ, যায়েদ বিন ওসমান সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে একজন মেধাবী শিক্ষার্থীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ পুকুরে ভাসিয়ে দেওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন। জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়েও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ। ফরেনসিক রিপোর্টে সাজিদকে শ্বাসরোধ করে হত্যার বিষয়টা নিশ্চিত করা হলেও দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ প্রশাসন এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। উপরন্তু, প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিচারের আশ্বাসের বাণী শুনতে শুনতে তারা আজ ক্লান্ত। তাই সাজিদ হত্যার ৯০ তম দিনে প্রশাসনের কাছে আর না গিয়ে অভিনব-এ প্রতিবাদ করছেন তারা৷ তবুও যদি খুনিদের গ্রেফতারে প্রশাসনের টনক নড়ে, সেটাই প্রত্যাশা তাদের।
আরও পড়ুন>>>এবার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ভবনে আগুন
শিক্ষার্থী যায়েদ বিন ওসমান বলেন, সাজিদ আব্দুল্লাহ ভাইর সঙ্গে একসাথে কাওয়ালী প্র্যাকটিস করতাম আমি। ভাইর সাথে অসংখ্য স্মৃতি প্রতিটি মুহূর্তে হৃদয়ে নাড়া দেয়। যে বা যারা সাজিদ ভাইকে হত্যা করেছে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি আমরা দীর্ঘদিন ধরে চেয়ে এসেছি। প্রতিটি ছাত্র সংগঠনও সাজিদ আব্দুল্লাহ ভাইর খুনিদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে তবুও আমরা এখনো কোন অগ্রগতি দেখতে পাইনি। তাই আজকে এটা টাঙিয়ে দিলাম যাতে প্রশাসনের সবার চোখে পড়ে, তারা যেন সাজিদ ভাইয়ের খুনিদের গ্রেফতারে সচেষ্ট হয়।
ইশতিয়াক ইমন বলেন, আমরা আজকে একটি বোর্ড স্থাপন করেছি যেখানে আমার ভাই হত্যার কতদিন হয়ে গেল তা লেখা থাকবে। এতদিন হয়ে গেল প্রশাসন কিন্তু আমার ভাইয়ের খুনিদের গ্রেফতার করছে না, আমাদের নিরাপত্তাহীনতার অবসান ঘটাচ্ছে না। আমরা প্রতিদিনের সংখ্যাগুলো পরিবর্তন করতে থাকবো এবং সংখ্যা গুলো বাড়তে থাকবে। আজকে ৯০ দিন, আর দশ দিন পরে এই সংখ্যাটা তিন সংখ্যায় রূপান্তর হবে। এই যে ক্যাম্পাসের মধ্যে হত্যা হয়েছে কিন্তু তার কোন বিচার হচ্ছে না, এ ঘটনাটি সকলের সামনে তুলে ধরার জন্য আমাদের এটি একটি প্রতিবাদী কার্যকলাপ। যতবার শিক্ষার্থীরা এই বোর্ড দেখবে ততবার তাদের মনে একটু প্রশ্ন থাকবে ঠিক কতদিন পর এই হত্যার বিচার হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ জুলাই বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হলের পুকুর থেকে আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদ আবদুল্লাহর ভাসমান লাশ উদ্ধার করে শিক্ষার্থীরা। প্রথমে পানিতে ডুবে মৃত্যুর ধারণা করা হলেও ফরেনসিক রিপোর্টে জানা যায়, সাজিদকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। তারপর থেকেই সাজিদ হত্যার বিচার ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে আন্দোলন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে প্রশাসনের কাছে সরকারের উচ্চপর্যায়ের তদন্ত সংস্থার মাধ্যমে তদন্তের সুপারিশ করে প্রশাসনের গঠিত ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি। এরই ধারাবাহিকতায়, মামলাটি এখন সিআইডির অধীনে তদন্তনাধীন রয়েছে।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।