Apan Desh | আপন দেশ

বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়েছে খুবি, উন্নয়নে প্রশাসনের উদ্যোগ

খুবি প্রতিনিধি, মোকাররম বিল্লাহ

প্রকাশিত: ২২:০০, ১৯ জুন ২০২৫

বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়েছে খুবি, উন্নয়নে প্রশাসনের উদ্যোগ

ফাইল ছবি

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান কোয়াককোয়ারেলি সায়মন্ডস (QS) প্রকাশিত বিশ্ব বিশ্ববিদ্যালয় র‌্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে পড়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি)। ২০২৬ সালের কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‌্যাঙ্কিং অনুযায়ী, এবার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ১৪০০-এর পরে। পূর্বে এটি ১২০১-১৪০০ অবস্থানের মধ্যে ছিল।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) কিউএস তাদের ওয়েবসাইটে এই র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ করে। এবার বাংলাদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে মোট ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে।

কিউএস র‌্যাঙ্কিং মূল্যায়নের সূচকগুলো হলো—অ্যাকাডেমিক রেপুটেশন, সাইটেশনস পার ফ্যাকাল্টি, এমপ্লয়মেন্ট আউটকামস, এমপ্লয়ার রেপুটেশন, ফ্যাকাল্টি-স্টুডেন্ট রেশিও, ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ নেটওয়ার্ক ও সাসটেইনেবিলিটি। এসব সূচকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এবারের প্রাপ্ত স্কোর যথাক্রমে: ৮.৬ শতাংশ, ৮.৬ শতাংশ, ৪.৩ শতাংশ, ৭.৯ শতাংশ, ১৪.৩ শতাংশ, ২০.৮ শতাংশ ও ২৫.৪ শতাংশ।

র‌্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে পড়ার কারণ ও উত্তরণের পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্য অফিস অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. আশিক উর রহমান। তিনি বলেন, আমরা র‌্যাঙ্কিংয়ের বিষয়টি সম্পর্কে সচেতন ও নতুন দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই উন্নয়নের জন্য কাজ করছি। অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত হয়েছে, বিদেশি শিক্ষার্থী সংখ্যা বাড়াতে আমরা প্রতি ডিসিপ্লিনে ২ জনের পরিবর্তে ৪ জন করে ভর্তি নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। বর্তমানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো আফ্রিকান শিক্ষার্থী নেই, তাই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আফ্রিকান শিক্ষার্থীদের নিয়ে সেমিনারের আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, বিদেশি ফ্যাকাল্টি নিয়োগের বিষয়েও ২৩০তম সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। একই সঙ্গে, রিসার্চ ইনোভেশন সেন্টারের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কনফারেন্স আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। গবেষণায় ফান্ড বৃদ্ধি ও গবেষকদের উৎসাহ দিতেও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

এছাড়াও এমপ্লয়মেন্ট আউটকামস সূচকে উন্নতির জন্য যে-সব শিক্ষকমণ্ডলী বিদেশে উচ্চশিক্ষায় রয়েছেন, তাদের গবেষণাপত্রে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাফিলিয়েশন উল্লেখ করার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে। শিক্ষা ছুটিতে থাকা বিদেশে অবস্থানরত ১২৭ জন শিক্ষককে মেইল করে এ বিষয়ে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। যা র‌্যাংকিং উন্নয়নে সহায়ক হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাসটেইনেবিলিটি ডেভেলপমেন্ট গোল (SDG) অর্জনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ৮ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি এসডিজি অর্জনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম তদারকি করবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাঙ্কিং উন্নয়নে আমরা অ্যাকাডেমিক মানোন্নয়ন, গবেষণা বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং বিদেশি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য খুবিকে একটি গবেষণাভিত্তিক, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা, যা টেকসই উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।

প্রসঙ্গত, ২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশনের সঙ্গে যৌথভাবে সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ করলেও ২০১০ সালে কিউএস আলাদা হয়ে যায়। এরপর থেকে তারা এককভাবেই র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ করে আসছে। কিউএসের প্রকাশিত সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাকে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য র‌্যাঙ্কিংগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ র‌্যাঙ্কিংয়ে বর্তমানে আটটি সূচকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক মান নিরূপণ করা হয়। প্রতিটি সূচকে ১০০ করে স্কোর নির্ধারিত থাকে। সব সূচকের গড়ের ভিত্তিতে সামগ্রিক স্কোর নির্ধারণ করা হয়।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়