
ফাইল ছবি
গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৭৫ জনের নাম উল্লেখ করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মির মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত অর্ধশতাধিক গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও গ্রেফতারের জন্য একাধিক টিম কাজ করছে।
গোপালগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) ড. রুহুল আমিন সরকার বলেন, শুক্রবার সকালে সদর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করেছে। সেখানে ৭৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া ৪০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১ জুলাই থেকে দেশব্যাপী শুরু হওয়া ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচি ঘোষণা করে এনসিপি। তাদের এ কর্মসূচি ঘিরে ওইদিন রাত থেকেই জেলাটিতে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এরপরও বুধবার সমাবেশের আয়োজন করা হয় গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্ক এলাকায়।
এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা সেখানে পৌঁছানোর আগেই সমাবেশস্থলে হামলার ঘটনা ঘটে। সমাবেশ শেষে হামলার মুখে পড়ে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের গাড়িবহরও। যা পরবর্তীতে রূপ নেয় সহিংস সংঘাতে। কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় গোপালগঞ্জ ছেড়ে খুলনার দিকে রওয়ানা দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা। সেদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে হামলাকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষে ঘটে হতাহতের ঘটনা।
বিকেল পাঁচটার দিকে সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি এবং পুলিশের সহায়তায় গোপালগঞ্জ ত্যাগ করেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, এনসিপির নেতা আখতার হোসেন, হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম সেনাবাহিনীর একটি সাঁজোয়া যান (এপিসি) ব্যবহার করে এলাকা ত্যাগ করছেন। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে তারা খুলনায় পৌঁছান এবং সেখানকার সার্কিট হাউস ও একটি হোটেলে অবস্থান নেন।
ঘটনার পরিণতিতে এখন পর্যন্ত পাঁচজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিহতরা হলেন- কোটালীপাড়ার হরিণাহাটি গ্রামের রমজান কাজী (১৯), শানাপাড়ার সোহেল রানা (৩৫), উদয়ন রোডের দীপ্ত সাহা (৩০), ভেড়ার বাজার এলাকার ইমন তালুকদার (২৪) এবং রমজান মুন্সী (৩২)।
সংঘর্ষ ও প্রাণহানির পরপরই সন্ধ্যার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গোপালগঞ্জ জেলায় কারফিউ জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। সে কারফিউ এখনও চলছে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।