
ছবি : আপন দেশ
পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার সুপারি এলাকার চাহিদা মিটিয়ে পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। এখন সুপারি যেনো সোনার হরিণ। পঞ্চগড়সহ পাঁচ উপজেলার এখানকার সুপারি মান ভালো হওয়ায়, দেশের বিভিন্ন জেলায় এর চাহিদা বেড়েছে। ফলে প্রতিদিনই স্থানীয় হাট-বাজারগুলোতে বিক্রি হচ্ছে লাল রঙের পাকা সুপারি।
বোদা বাজারের সুপারির হাট ঘুরে দেখা যায়, বাড়ির গাছ কিংবা বাগানের সুপারি বিক্রি করতে আনা চাষিরা অপেক্ষা করছেন কাঙ্খিত দামে সুপারি বিক্রির জন্য। পাইকাররা এসব সুপারি কিনে ছোট, বড় আলাদা আলাদা করে স্তুপ করে রেখেছেন। এখানকার কাঁচা-পাকা সুপারির বিক্রি হয় পণ অথবা কাহণ হিসেবে। ৮০ টা সুপারিকে বলে এক পণ। আর ১৬ পণ সুপারি হয় এক কাহণ।
বোদা উপজেলা হাট বাজারে বর্তমান এক পণ সুপারি ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে পাইকারি বাজারে। মৌসুম শেষের দিকে হওয়ায় চাহিদার তুলনায় বাজারে সুপারি কম। যা প্রতি পিস (একটি) সুপারির দাম ১০ টাকা। প্রতি মৌসুমে এই অঞ্চলে প্রায় শতকোটি টাকার সুপারি বেচাকেনা হয়।
সোলাইমান নামে এক সুপারি ব্যবসায়ী বলেন, বোদা উপজেলার বিভিন্ন হাট থেকে সুপারি কিনে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সুপারি পাঠান তিনি। প্রতি হাটে সুপারির জোগান কম হওয়ায় দাম এখন বেশি।
স্থানীয় ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ এলাকায় বছরজুড়েই সুপারির ব্যবসা চলমান থাকলেও মূলত বছরের চৈত্র, বৈশাখ, জৈষ্ঠ্য মাস সুপারির ভরা মৌসুম।
এ সময়ে স্থানীয় এলাকার পাইকারি ব্যবসায়ীরা সাপ্তাহিক হাটবাজার থেকে সুপারি কিনে সংরক্ষণ করে। এবং অন্য মৌসুমে বিক্রি করে। আবার বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা পঞ্চগড়সহ পাঁচ উপজেলায় এসে সুপারি কিনে নানাপ্রান্তে নিয়ে যান। সুপারির দাম চাহিদার উপর নির্ভর করে অনেকাংশে। সাধারণত সুপারি কাঁচা, ভেজা ও শুকিয়ে বিক্রি করা হয়।
আগের চেয়ে এখন বেশি মানুষ সুপারি খায়। বাঙালি ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আছে পান-সুপারি, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের বার মাস প্রায় প্রতিটি বাড়িতে প্রাথমে অতিথি আপ্যায়নের অনুষঙ্গ হিসেবে থাকে পান-সুপারি।
বোদা উপজেলার ঝলই শালশিরী ইউনিয়নের বাসিন্দা মোকলেছুর রহমান বলেন, বাপ-দাদারা বাগান রেখে গেছেন। সুপারি বিক্রি করেই বছরের ছয় মাস আমার সংসার চলে। সুপারির ওপর অনেক মানুষের জীবন-জীবিকা নির্ভর করে। চারা রোপণের পর সাধারণত ৫ বছরে গাছে ফল ধরে। ১০-৪০ বছর পযর্ন্ত সর্বোচ্চ ফলন হয়। একটি গাছে ৩-৫টি ছড়া হতে পারে।
বোদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আহম্মেদ রাশেদ-উন-নবী বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর ৩০ শতাংশ কম সুপারির ফলন হয়েছে। সুপারি হলো এ অঞ্চলের কৃষকদের বাড়তি আয়ের একটি অর্থকরী ফসল। ফলে কৃষকেরা লাভবান হওয়ায় এলাকাভিত্তিক সুপারি চাষ ক্রমশ বাড়ছে। বসতভিটার চারদিকে, পরিত্যক্ত জমিতে, রাস্তার দুই ধারে সুপারি গাছ লাগিয়ে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। গত কয়েক বছর ধরে অনেক কৃষক বাণিজ্যিকভাবে সুপারি উৎপাদন করছেন।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।