
ফাইল ছবি
টানা দরপতনের পর দেশের শেয়ারবাজার ফের টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি প্রতিনিয়ত লেনদেনের গতি বাড়তে শুরু করেছে। লেনদেন বেড়ে আবারও হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি চলে এসেছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (১৮ আগস্ট) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার, ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক বেড়েছে। সে-সঙ্গে ডিএসইতে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে।
এর আগে জুলাইয়ের শুরুতে শেয়ারবাজারে টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়। ওই মাসের শুরুতে টানা ৮ কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর এক কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। তারপর আবার টানা তিন কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে।
তবে আগস্টের শুরুতে শেয়ারবাজারে টানা দরপতন প্রবণতা দেখা যায়। টানা সাত কার্যদিবস দরপতনের পর গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। আর চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবসেও শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিললো। এতে টানা দরপতন থেকে বেরিয়ে টানা তিন কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকলো শেয়ারবাজার।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, সোমবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে। এতে দাম বাড়ার তালিকা বড় হওয়ার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সবখাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৪২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৪টির। আর ৬৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৩১টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৬২টির দাম কমেছে ও ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেয়া ৬০টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ১৮টির দাম কমেছে ও ৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেয়ার কারণে পচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৫১টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪টির ও ৩১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৭টির দাম কমেছে ও ১৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৪১৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৮৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১০১ পয়েন্টে উঠে এসেছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৯৭৫ কোটি ৮৫ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৮০১ কোটি ৭১ টাকা। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ১৭৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ৩ আগস্টের পর ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হলো।
এ লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩১ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিটি ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৯ কোটি ১৫ লাখ টাকার। ২৫ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ওরিয়ন ইনফিউশন, টেকনো ড্রাগস, যমুনা ব্যাংক, মালেক স্পিনিং, একমি পেস্টিসাইড, মাগুরা মাল্টিপ্লেক্স ও এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৬১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া ২০৮ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৪টির ও ২৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।