
সংগৃহীত ছবি
বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে যুক্তরাজ্যের সহায়তা চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। এ চিঠি দিয়েছেন ব্রিটিশ বাংলাদেশি কমিউনিটি নেতা ড. মোহাম্মদ ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এমবিই।
তিনি দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের কাছে এ চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নির্বাচন নিয়ে নিজের গভীর উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।
চিঠিতে ড. ফয়েজ উদ্দিন বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে। তবে এখনো নির্বাচনের কোনো সময়সূচি প্রকাশ করা হয়নি। এ পরিস্থিতিতে কিছু মহল নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। একটি সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন>>>নির্বাচনের চূড়ান্ত রোডম্যাপ চলতি সপ্তাহেই: ইসি সচিব
চিঠিতে তিনি বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিলেও এখনো সময়সূচি প্রকাশ করেনি। এ প্রেক্ষাপটে একটি মহল সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনকে বানচাল করার চেষ্টা করতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ড. ফয়েজ উদ্দিন বিশেষভাবে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের দাবি জানান। তিনি বলেন, তারেক রহমানের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া পুনরায় ফিরিয়ে আনতে তার সক্রিয় ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
চিঠিতে গত সতেরো বছরের সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার আমলে রাজনৈতিক বিরোধীদের বিরুদ্ধে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্বিচার আটক ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও উপাসনালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার জন্য কোনো কার্যকর জবাবদিহি নেই।
২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতির প্রসঙ্গও চিঠিতে উঠে আসে। ড. ফয়েজ উদ্দিন বলেন, এটি বাংলাদেশে অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত করার একটি আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা ছিল। কিন্তু তখনকার সরকার এ উদ্যোগে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। তারা জনগণের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও গোপন করেছিল।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনগুলো নিয়ে দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল। ভোটারদের ভয় দেখানো, দমন করা ও রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহারের কারণে এ নির্বাচনগুলো বিতর্কিত ছিল। যদি সঠিক পদক্ষেপ নেয়া না হয়, তবে ২০২৬ সালের নির্বাচনও একই পথে যেতে পারে। এতে দেশের জনগণ তাদের মৌলিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হবে।
ড. ফয়েজ উদ্দিন যুক্তরাজ্য সরকারকে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য গণতান্ত্রিক মিত্রদের সঙ্গে সমন্বয় করে চারটি সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানিয়েছেন—
১. অন্তর্বর্তী সরকার ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফসল। এ নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে যেন কোনো অপশক্তি বানচাল করতে না পারে, সে জন্য গণতান্ত্রিক বিশ্বকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
২. দেশে যাতে আর ফ্যাসিবাদী শাসন ফিরে না আসে, সে জন্য গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক ও শক্তিশালী করতে হবে। রাজনীতিকে কালো টাকার প্রভাব থেকে মুক্ত করে শক্তিশালী নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে।
৩. তারেক রহমানের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন ও পূর্ণ রাজনৈতিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
৪. সরকারের প্রতিশ্রুত মানবাধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে।
চিঠির শেষে তিনি দৃঢ় বিশ্বাস প্রকাশ করেন, যুক্তরাজ্যের নীতিগত সহায়তা ও আন্তর্জাতিক ভূমিকা বাংলাদেশের গণতন্ত্র, শান্তি, স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।