
সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যৌথভাবে আয়োজন করবে শ্রীলঙ্কা ও ভারত। কুড়ি ওভারের এ বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট সামনে রেখে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে পাকিস্তান সফরে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তার আগে নিজের শক্তির পরীক্ষা নিতে সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে গিয়েছিল লিটন দাসের দল। কিন্তু অভিজ্ঞতাটা মোটেও সুখকর হলো না। উল্টো লজ্জার মুখে পড়তে হলো টাইগারদের। লাল সবুজ দলের বিপক্ষে সিরিজ জিতে ইতিহাস গড়ল আইসিসি সহযোগী আরব আমিরাত।
সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেটে যুক্তরাষ্ট্রের পর যে আরও একটি আইসিসি সহযোগী সদস্যের কাছে হেরে লজ্জায় পড়ল বাংলাদেশ। বুধবার (২১ মে) মধ্যরাতে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম জয় পায় দলটি। তৃতীয় ম্যাচে ৭ উইকেটের জয়ে টানা দ্বিতীয় সাফল্যে প্রথম কোন টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে সিরিজ জিতে নিল আরব আমিরাত।
আগের ম্যাচে ২০৫ রান করেও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। স্বাভাবিকভাবেই শারজার ছোট মাঠে ১৬২ রান করে জয়ের স্বপ্ন দেখাটা বোকামি। তবুও সম্ভাবনা থাকতো যদি কিনা বাংলাদেশের বোলাররা তাদের স্বাভাবিক বোলিংটা করতে পারতেন। এতোদিন ধরে যে বোলাররা প্রশংসা পেয়ে আসছিলেন, তারাই কিনা ম্যাচে ভিলেন হয়ে গেলেন! পরপর দুই ম্যাচে ছন্নছাড়া বোলিং করে প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের রান করাটা সহজ করে দিয়েছেন শরিফুল ইসলাম-হাসান মাহমুদ-তানজিম হাসান সাকিবরা।
তৃতীয় ম্যাচেও যে পরিকল্পনায় বোলিংয়ের প্রয়োজন ছিল, তার ধারেকাছে যেতে পারেনি বাংলাদেশ। সবাই কম বেশি আলগা বল দিয়েছেন। হাসান-সাকিব তো প্রায়ই বোলিংয়ে নিজেদের জায়গা খুঁজেই পাননি। এ সুযোগে আলিশান শরাফু ও আসিফ খান বিস্ফোরক ব্যাটিং করে ম্যাচ বের করে নেন। বোলিংয়ে মোস্তাফিজের অভাব স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। স্লো বোলিংয়ে বোলাররা সফল হলেও বোলাদের ক্ষেত্রে পরিকল্পনার ঘাটতি দেখা গেছে।
আরও পড়ুন>>>বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজের নতুন সূচি প্রকাশ
বোলিং তো গত দুই ম্যাচ ধরে খারাপ হলেও বাংলাদেশের ব্যাটাররা ব্যাটিংয়ের তল খুঁজে পাচ্ছেন না লম্বা সময় ধরেই। প্রথম ম্যাচে ১৯১ রান করলেও সেখানে অবদান ছিল পারভেজ হোসেন ইমনের। তার একার সেঞ্চুরিতেই রান করতে পেরেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাটাররা মোটামুটি রান পেলেও শেষ ম্যাচে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন। টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি তুলে নেয়া ইমন আজ গোল্ডেন ডাক মেরেছেন।
তাওহীদ হৃদয়, লিটন দাসরা বিব্রতকর ব্যাটিং করে হতাশ করেছেন। ফিনিশার খ্যাত শামীমে পাটোয়ারী, অলরাউন্ডার শেখ মেহেদী হাসান ব্যাটিংয়ে কোনও অবদান রাখতে পারেননি। ৮৪ রানে ৮ উইকেট হারানোর পর জাকের আলী অনিক ও লেট অর্ডার হাসান ও শরিফুলের দায়িত্বশীল ব্যাটিং বাংলাদেশের স্কোরকে নিয়ে যায় ১৬২ রানে।
মামুলি এ সংগ্রহের পর জয়ের প্রত্যাশা কেউই আশা করেনি। তবুও প্রত্যাশা ছিল কেউ না কেউ মিরাকল ঘটাবেন! কিন্তু সেটি হয়নি। উল্টো আমিরাত ইতহাস গড়ে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের আনন্দে মেতেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সামনেই। আর তাতে মরুর বুকে বাংলাদেশের ক্রিকেট ছিন্নভিন্ন হয়ে গেলো।
হৃদয়ে রক্তক্ষরণ নিয়েই বাংলাদেশ দল ২৪ তারিখে পাকিস্তানে যাবে। দেশটিতে ২৮ মে থেকে আরেকটি তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবেন লিটন দাসরা। সময় খুব কম, ওই সিরিজে উন্নতিটা হবে তো!
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।